ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাকৃবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন

তদন্ত কমিটি করেই দায়িত্ব শেষ, বিচার হয়নি একটিরও

বাকৃবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৬:০৬ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিভিন্ন সময়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিচারহীনতার কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে প্রতিনিয়ত। প্রশাসনের এমন স্বেচ্ছাচারী মনোভাবে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি ইভটিজিং এবং ছাত্রলীগের এক নেতাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন, ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মোবাশ্বের হোসেন ও শামীম রেজা এবং কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী সাফায়েতুল ইসলাম তন্ময়কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। 

অভিযোগ রয়েছে, সাময়িক বহিষ্কারকৃত মোবাশ্বের হোসেন নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এছাড়াও গত ২৭ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈসা খাঁ হলের টিভি রুমে ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের চাক্ষুষ প্রমাণ পায় প্রশাসন। এই ঘটনায় অধিকতর তদন্তের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. শাহ আলম মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মো. আনসার আলী নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। 

এর আগে গত ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জামাল হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতিকে সালাম না দেওয়ায় মাকসুদুল হক ইমু নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর হলের এক কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

এসব ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। 

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও মারামারির সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবুল বাশার মিরাজকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও আজ অবধি দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পায়। প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং স্বেচ্ছাচারিতায় এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল হক বলেন, ‘এসব ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা আছে। বোর্ড অব রেসিডেন্স এন্ড ডিসিপ্লিনের সভা আয়োজন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এআই/এসি