ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মশা যেন ভোট না খেয়ে ফেলে: মেয়রদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:২৮ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০২:১৫ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার

ঢাকার দুই মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকায় যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা মশা নিয়ন্ত্রণে এখন থেকে ব্যবস্থা নিন। মশা ক্ষুদ্র প্রাণী হলেও খুব শক্তিশালী। তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে ভোট খোয়াবেন। মশা যেন আপনার ভোট না খেয়ে ফেলে সেদিকে নজর রাখতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। একটি নির্দিষ্ট সময় পর আমাদের ক্ষমতা ছাড়তে হয়। কিন্তু এসময়ে কারো অনিয়ম কিংবা দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যস্থা নেয়া হবে। চলমান মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যবহত থাকবে।’

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। করোনা ঠেকাতে আলাদা হাসপাতাল করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সবাইকে সরকারের দেয়া এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।’

উন্নয়নের জন্য বাজেটকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে হবে। অনেক প্রজেক্ট করে দেয়া হচ্ছে। সেগুলোর কাজ যাতে যথাযথভাবে হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। মেগা প্রকল্প থেকে শুরু করে প্রতেক্যকটি উন্নয়ন প্রকল্প যাতে সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয় সে জন্য সহযোগীতা করতে হবে।’ 

দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেন মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়, সেজন্য ডেল্টা প্লান ২১০০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা হয়েছে। অতীতের ন্যায় যাতে সরকার পরিবর্তন হলেও উন্নয়নের ধারা থেমে না যায়, সে জন্য এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।’

দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘মানুষ অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে, তেমনিভাবে চাহিদাও বাড়ছে। তাই, গ্রামের মানুষ যাতে শহরের সকল সুযোগ সুবিধা পায় সেভাবেই উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো প্রণয়ন করা হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না। যেখানে যত ভূমিহীন মানুষ আছে তাদের একটি টিনের চালা হলেও নির্মাণ করে দেয়া হবে। পাশাপাশি নগরায়ণের দিকেও মনযোগ দিতে হবে। যত্রতত্র দালান কোঠা নির্মাণ করা যাবে না।’ 

সারা দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেখানে সেখানে যাতে ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে না ওঠে, ফসলের মাঠের ক্ষতি না হয় সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সেখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন।’ 

সরকার প্রধান বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় আসার ফলে দেশের উন্নয়ন ধারাবাহিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ গত এক দশকে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। যেখানে দারিদ্রের সীমা ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ছিল ৪২ ভাগ সেখানে বর্তমানে তা ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে আনা হয়েছে।’

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন বিস্ময় জানিয়ে তিনি বলেন,‘বর্তমান সরকার দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা করছে। ফলে আর্থিক দিক থেকে শুরু করে অন্যান্য খাতেও আমরা ব্যাপক এগিয়ে গেছি। ফলে বাজেট সাত গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অতীতে কেউ পারেনি।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতিমধ্যে দেশের উন্নয়নে পঞ্চ, ষষ্ঠ ও সপ্তাম পঞ্চবার্ষিকী বাস্তাবয়ন করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারের শুরু থেকে লক্ষ্য ছিল কিভাবে দারিদ্র দূর করা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া ও অবকাঠামো গত উন্নয়ন করা যায়। ইতিমধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যার কারণে আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছি। এখান থেকে আমরা উন্নত ও সমৃদ্ধি দেশ হবো। যা ২০৪১ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।’

এআই/