ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জেলা জজের আচরণ অশালীন ছিল: আইনমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:১৪ পিএম, ৪ মার্চ ২০২০ বুধবার | আপডেট: ০৭:১২ পিএম, ৪ মার্চ ২০২০ বুধবার

পিরোজপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়ালের জামিন নিয়ে নাটকীয়তায় পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান ‘অত্যন্ত অশালীন ও রূঢ়’ ব্যবহার করায় তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে।’

এ সময় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুল মান্নান অত্যন্ত রূঢ় ও অশালীন আচরণ করেছেন। তাই তাকে প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ কে এম এ আউয়াল এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনকে জামিন দেওয়া হয়েছে।’ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে কারাগারে পাঠানো ঐ বিচারককে তাৎক্ষণিক বদলি আইনের শাসনের ব্যত্যয় কিংবা বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ নয় বলেও দাবি করেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঐ ঘটনায় জেলা বারের সকলে আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন। এই পরিস্থিতিতে গন্ডগোল চলছিল। রাস্তায় লোকজন বেরিয়ে পড়েছিল। সেটাকে কন্ট্রোল করার জন্য বিচারককে স্ট্যান্ড রিলিজ করে আদেশ দেওয়া হয় আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে। জামিন দেওয়া না দেওয়া সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। কিন্তু আদালত যদি এমন ব্যবহার করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আইনের শাসন রক্ষা প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তখন একটা ব্যবস্থা নিতে হয়। সেই অবস্থার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

দুর্নীতির মামলায় পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিনের আবেদন নাকচ করে মঙ্গলবার সকালে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশে দিয়েছিলেন জেলা জজ আব্দুল মান্নান। এরপর পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আউয়ালের সমর্থকদের বিক্ষোভ-ভাংচুরের প্রেক্ষাপটে জজ আব্দুল মান্নানকে বদলি করা হয়। বিকালে পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজের দায়িত্ব নিয়ে নাহিদ নাসরিন আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল ও তার স্ত্রীকে জামিন দেন।

এনিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘পিরোজপুরে জেলা জজের কাছে পিরোজপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং তার স্ত্রীর দুর্নীতির মামলার জন্য জামিন চাইতে গিয়েছিলেন। জামিন চাওয়ার সময় তার আইনজীবী এবং বারের সকল আইনজীবীর সাথে আমরা যে তথ্যাদি পেয়েছি, জেলা ও দায়রা জজ অত্যন্ত অশালীন এবং রূঢ় ব্যবহার করেন। সেই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এমন একটা অবস্থা দাঁড়ায়, যেখানে বারের সকলে আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়।’

উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর-নাজিরপুর-নেছারাবাদ উপজেলা) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আউয়াল ও তার স্ত্রী পিরোজপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আলী আকবর বাদী হয়ে বরিশাল দুদক কার্যালয়ে তিনটি মামলা করেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লাকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুটিতে এককভাবে আসামি করা হয়েছে আউয়ালকে। মামলা দায়েরের পর তারা গত ৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে একটি বেঞ্চ তাদের আট সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার (৩ মার্চ) পিরোজপুরের জেলা জজ আদালত থেকে তারা ফের জামিন পেলেন।

এসি