নামমাত্র ইভেন্টে বার্ষিক ক্রীড়া শেষ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৫:২০ পিএম, ৮ মার্চ ২০২০ রবিবার
সর্বশেষ চার বছর আগে জমকালোভাবে বার্ষিক ক্রীড়া উদযাপন করেছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ইভেন্টও ছিল প্রায় ১০-১৫টিরও অধিক। গেল তিন বছর স্বাধীনতা দিবসে কয়েকটি ইভেন্ট দিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া উদযাপন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
দায়সারাভাবে বার্ষিক ক্রীড়া উদযাপনে ক্রীড়ায় কম বাজেট দেয়া, লোকবল সংকট ও প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
শারীরিক শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ সালে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ছয় লাখ টাকা। প্রায় ২৩টির উপরে ইভেন্ট আয়োজনের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে মাত্র চার-পাঁচটিতে। যেখানে ভলিবল, হকিসহ অন্যান্য খেলাধুলায় খরচ হয় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা।
আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, মেয়েদের ব্যাডমিন্টনসহ অন্যান্য খেলাধুলায় প্রায় তিন লাখ টাকার উপর চলে যায়। ফলে বার্ষিক ক্রীড়ায় এ্যাথলেটিক ইভেন্ট আয়োজন করার জন্য তেমন বাজেট থাকেনা। ফলে এ্যাথলেটিকসহ বড় পরিসরের ক্রীড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হকি দলের অধিনায়ক সোহাগ মাহমুদ জানান, ‘যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে হল কেন্দ্রিক বার্ষিক ক্রীড়ায় এ্যাথলেটিকের ইভেন্টও থাকে ২০টির উপর। সেক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি ইভেন্ট দিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এটা আমাদের জন্য হতাশার।’
এদিকে, শারীরিক শিক্ষা বিভাগে লোকবল সংকটকে দায়ী করছেন অনেক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পার হলেও একজন সহকারী পরিচালক ও একজন পিয়ন দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে শারীরিক শিক্ষা বিভাগ।
শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক মনিরুল আলম বলেন,‘বাজেট স্বল্পতা ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের লোকবল সংকট থাকায় বড় পরিসরে বার্ষিক ক্রীড়া আয়োজন করতে সমস্যা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করে এমন অন্তত আটজন খেলোয়াড়ের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় উপযুক্ত মাঠ পাওয়া যায়না। ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পিচে গর্ত ও ভালোভাবে রুলারও করা হয়না। আবার ফুটবল প্রতিযোগিতায় মাঠের গর্ত ভরাট হয়না এমনকি মাঠে পাথরের টুকরো থাকার কারণে ইনজুরিতে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। মাঠ নিয়ে আয়োজকদের অভিযোগ দিলে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়না। তাই মাঠে খেলাধুলা করতে ভয় লাগে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলের বার্ষিক ক্রীড়ায় আউটডোর খেলাধুলার তেমন ছোঁয়াও দেখা যায়না। আয়োজন হয়না কোন এ্যাথলেটিকস্ ইভেন্টেস। ছেলেদের হলের সামনে ক্রীকেটের শর্টপিচ, ইন্ডোরের কয়েকটি ইভেন্ট দিয়ে হলের বার্ষিক ক্রীড়া শেষ করেন হল প্রশাসন।
হলে বড় পরিসরে বার্ষিক ক্রীড়া আয়োজন না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কাজী নজরুল হলের প্রভোস্ট এমদাদুল হক বলেন, হলে ক্রীড়ার সামগ্রী ও বাজেট বাড়াতে হবে। শুধু তাই না, হলের জন্য যে বাজেট আছে তা সুষ্ঠুভাবে বন্টন করতে হবে। তাহলে বড় পরিসরে হলে ক্রীড়া আয়োজন করা যাবে।’
মেয়েদের হলে বিতর্কের ইভেন্ট চালু হলেও বার্ষিক ক্রীড়ার কোন ইভেন্ট হয়না বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আইভি রহমান।
মেয়েদের হলে বার্ষিক ক্রীড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট মো. সাদেকুজ্জামান জানান, ‘মেয়েদের হলের বার্ষিক ক্রীড়ার জন্য ইতিমধ্যেই কমিটি হয়ে গেছে। মুজিববর্ষের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আমরা এটা করবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পরিসরে বার্ষিক ক্রীড়ার আয়োজন না হওয়ার কারণ জানতে উপাচার্য কার্যালয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এআই/এসি