ঢাকা, সোমবার   ০৪ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২০ ১৪৩১

করোনা ভাইরাস: মসজিদে গণজমায়েত ও নির্বাচন

শওগাত আলী সাগর

প্রকাশিত : ১১:১৪ এএম, ২১ মার্চ ২০২০ শনিবার | আপডেট: ১১:৩৫ এএম, ২১ মার্চ ২০২০ শনিবার

করোনার কালে আমরা নির্বাচন করা নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছি, ভোট গ্রহনটাকে জনস্বার্থের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছি। আমরাই আবার শুক্রবারের জুমার নামাজে মসজিদে মসজিদে উপচেপড়া ভীড়ে কোনো সমস্যা দেখছি না। আমরা নির্বাচন বন্ধের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের একগুয়েমির তুমুল সমালোচনা করছি। আবার উপচেপড়া মুসুল্লীদের সাথে জুমার নামাজ পড়ার তৃপ্তি জানিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দিচ্ছি।

নির্বাচনের সমালোচনা কেন করছি আমরা? কারণ ভোটের দিন জনসমাগম হবে, তাতে করোনার বিস্তার ঘটতে পারে বলে আমরা মনে করছি। মসজিদের এতো মুসুল্লীর ভিড় কি মানুষে ভিড় নয়? সেখানে কি করোনার বিস্তার ঘটতে পারে না? সৌদি আরবসহ মুসলিমদেশগুলোতে একই কারণে মসজিদে নামাজ আদায় আপাতত স্থগিত রেখেছে। মালয়েশিয়ায় তো একটি জামায়াত থেকেই করোনার বিস্তার ঘটেছে!

পরিষ্কার করে নেই- আমি নামাজ আর ভোটকে এক কাতারে মাপছি না। কিন্তু করোনা বিস্তারের আশংকার ক্ষেত্রে জনসমাগম যেহেতু প্রধান ফ্যাক্টর, দুটো ক্ষেত্রেই জনসমাগমের বিষয় আছে, সেই কারণে দুটি ক্ষেত্রেই আমাদের অবস্থান অভিন্ন হ্ওয়া বাঞ্ছনীয়।

আপনি যদি মসজিদে জনসমাগমকে সঠিক মনে করেন তাহলে ভোট নিয়ে কোনো কথা বলার নৈতিক অধিকার আপনার নাই। কারণ দুটো জনসমাগমই বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জনস্বার্থের পরিপন্থী। চুজ অ্যান্ড পিক করে জনস্বার্থ হয় না, করোনা প্রতিরোধও হয় না।

আমার তো মনে হয়, শুক্রবারের জুমার নামাজে মানুষের উপস্থিতি এবং সেটিকে গ্রহন করে নেয়ার মাধ্যমে আমরা নির্বাচন কমিশনের ভোট গ্রহনের একগুয়েমিকে নৈতিক অনুমোদন দেয়ার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছি।

তবু আমি নির্বাচন স্থগিত রাখার দাবি জানাই। সারা বিশ্ব মানুষ বাঁচানোর লড়াই করছে, তখন নির্বাচন অনুষ্ঠান একটি জাতির ভাবমূর্তিকে কলুষিত করে, দেশের ভাবমূর্তিকে খাটো করে। নির্বাচন কমিশনের সেটি করার কোনোই অধিকার নাই।

লেখক: কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক