ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫,   বৈশাখ ৩১ ১৪৩২

বাংলার ঢাকাই জামদানী সারা বিশ্বব্যাপী পরিচিত

প্রকাশিত : ১২:৪০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ১২:৪০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ শনিবার

সারা বিশ্বব্যাপী পরিচিত বাংলার ঢাকাই জামদানী। ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর তীরের কার্পাস তুলা এবং দুই নদীতীরের মানুষের সূক্ষ্ম শিল্পবোধের মিশ্রনে তৈরী করা হয় ঢাকাই জামদানী। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশন জামদানিকে বাংলাদেশের জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন- জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়। হালে জামদানী নানা স্থানে তৈরী করা হলেও ইতিহাস থেকে জানা যায় ঢাকাই জামদানীর আদি জন্মস্থান। জামদানি শব্দটি এসেছে ফার্সি শব্দ থেকে। ফার্সি-জামা অর্থ কাপড় আর দানা অর্থ বুটি, দুইয়ে মিলে জামদানির অর্থ বুটিদার কাপড়। ১৮৫০ সালে ভারতে ঈশা খাঁর শাসনামলে কৃষকরা নীল চাষ নিয়ে বিদ্রোহ করায় ইংরেজরা তাঁতিদের আঙ্গুল কেটে নিয়ে ধ্বংস করে মসলিন শিল্প। পরে মসলিনের জায়গায় তাতীরা তাঁতে বোনেন বাংলার পরিবেশ, প্রকৃতি, জীবজগৎ ও বৃক্ষলতার নকশার কাপড়, যার নাম হয় জামদানি। আর ঈশা খাঁর সেই রাজ্য নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁই এখন জামদানি পল্লী। নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও ধামরাই ও কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে তৈরী এই পণ্য একসময় ইউরোপ, ইরান, আর্মেনিয়া, মোগল ও পাঠান ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যেতেন। জামদানি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয় সূতোয় রং করার মধ্য দিয়ে। রঙিন সুতা রোদে শুকিয়ে ভাত মেশানো পানিতে ভেজানো হয়। পরে ভেজাসুতা চরকাতে চরিয়ে তা শুকিয়ে সেই সূতো দিয়েই কারিগররা গড়ে তোলেন নজকাড়ানো সব জামদানী শাড়ি। মুঘল আমলে নেপালের আঞ্চলিক পোশাক রাঙ্গার জন্য জামদানি কাপড় ব্যবহৃত হত। তবে এখন, লাভের তুলনায় পরিশ্রম বেশি আর নকল ও ভারতীয় মানহীন জামদানির আমদানিতে হতাশ তাতীঁরা। জামদানী বাংলাদেশের সম্পদ, এই সম্পদকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকার, ব্যবসায়ীসহ সকলের সমন্বিত উদ্যোগ।