ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

ব্যবসা-বাণিজ্য: চিন্তা এখন ভবিষ্যতের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০৪ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২০ শুক্রবার

(ফাইল ফটো)

(ফাইল ফটো)

করোনা যুদ্ধে সারা বিশ্বব্যাপী লড়ছে ১৯৯টি দেশ। বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে দেশের মানুষের মাঝেও এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে। করোনা থেকে বাঁচতে দেশে সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের দ্বিতীয় দিন চলছে আজ শুক্রবার। রাজধানীর চিত্র পাল্টে গেছে। গুলিস্তান, মতিঝিল, কাওরান বাজার, ফার্মগেট কিংবা ঢাকার অন্যান্য পয়েন্ট—কোথাও সেই চিরচেনা দৃশ্য চোখে পড়ছে না। তবু দুই-এক জন ফুটপাত ঘেঁষে দাঁড়িয়ে, কেউ মাস্ক নিয়ে, কেউ-বা ওয়ানটাইম হ্যান্ড গ্লাভস নিয়ে। যদি দুই-এক জন ক্রেতা পাওয়া যায়। একই চিত্র ঢাকার মুদি, কাঁচাবাজারেও। জিনিসপত্রের দামে কিছুটা কমতি। ক্রেতা নেই। বিক্রেতারাও নিরাপদ দূরত্বে। 

এমন পরিস্থিতিতে অনেকে জীবন রক্ষার্থে দোকান বন্ধ করে বাসায় স্বেচ্ছাবন্দি। বেসরকারি খাত সাধারণ ছুটির আওতায়। সংবাদপত্র কিংবা জরুরি সেবায় জড়িত লোকেরা শুধু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা সবার যখন কাজকর্ম বন্ধ, এ অবস্থা কত দিন চলবে এখনই বলা যাচ্ছে না। 

এতে করে সবাই শঙ্কিত। বিদ্যমান অবস্থায় আরো বেশি সংকটময় পরিস্থিতির আশঙ্কার কথা বলেছেন উদ্যোক্তারা। উদ্যোক্তাদের অনেকেই বলেছেন, ব্যবসা ঠিক না থাকলে কর্মীদের বেতনভাতা দেওয়া সম্ভব হবে না। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৩ লাখ লোক চাকরি হারিয়েছেন। বাংলাদেশেও তেমনটি যদি হয়। 

আর্থিক খাতের সূত্রগুলো বলেছে, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে চরম আর্থিক ও মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। তখন হাতে নগদ টাকার সংকট বাড়বে এবং সংকট অব্যাহত থাকলে মানুষের ভোগ্যপণ্য কেনার ক্ষমতাও দিন দিন হ্রাস পাবে। আর তাতে উৎপাদক থেকে সাধারণ বিক্রেতা এবং ক্রেতা—সব পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 

ব্যবসায়ীরাও বলেছেন, করোনা নিয়ে যেসব সতর্ক বার্তা আসছে তাতে কোনো ধরনের খামখেয়ালিপনার সুযোগ নেই। আর্থিক সক্ষমতা না থাকলে পণ্যের মজুত দিয়েও কোনো লাভ হবে না, যদি সাধারণ মানুষ ভোগ্যপণ্য কিনতে না পারে।

অন্যদিকে, রেমিট্যান্সনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে— করোনার কারণে প্রচুর বাংলাদেশি দেশে ফেরত এসেছেন। ওসব দেশও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বড় ধাক্কা খাবে। যা রেমিট্যান্সনির্ভর পরিবারগুলোর জন্য অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়াবে। কমে যাবে ওসব পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা। একইভাবে কমে যাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও।

ভারত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য। গ্যাস বিল মওকুফ করা হয়েছে সেখানে। নিয়মিত সুবিধার অতিরিক্ত বিনা মূল্যে চাল, ডাল দেওয়া হচ্ছে। বিমা সুবিধাসহ আর্থিক সুবিধার আওতায় থাকবে ৮০ কোটি মানুষ। বাংলাদেশে এখনো এ ধরনের ‘কম্প্রেহিনসিভ’ কোনো পদক্ষেপ নেই।

বিশিষ্টজনরা বলছেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা চরম দুরবস্থায় ভুগছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, ব্যাংক লোন, বিদ্যুৎ ও সার্ভিস চার্জ বিলসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিল মওকুফ চেয়ে সমিতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। প্রচ্ছন্ন রফতানি খাতগুলোও সরকারঘোষিত সুবিধা প্রাপ্তির দাবি রাখে। কিন্তু সেটি স্পষ্ট করা হয়নি। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আর্থিক সুবিধা না পেলে ব্যবসায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না।

একে//