ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে যাত্রী পারাপার অব্যাহত  

হিলি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৫:২১ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২০ শুক্রবার

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভারত তাদের নিজ দেশের নাগরিকসহ সকল দেশের নাগরিক গ্রহন বন্ধ করে দিয়েছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের ফেরত দিচ্ছে। এতে করে দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ হচ্ছে না। এমন সময়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার কারণে শংকিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এদিকে গতকাল দেশে ফেরা ৭ যাত্রীকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে হোমকোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। 

হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ওসি মো. সেকেন্দার আলী জানান, গত ১৩ মার্চ ভারত সকল প্রকার যাত্রী পারাপার বন্ধের ঘোষনা দেয় এরফলে গত১৪ মার্চ থেকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে শুধুমাত্র দুদেশের ভেতরে আটকে থাকা যাত্রী পারাপার চালু ছিল। কিন্তু গত ২৩ মার্চ সোমবার বিকেল থেকে ভারতীয় নাগরিকসহ বিশ্বের সকল দেশের নাগরিক গ্রহন বন্ধ করে দেয় ভারত। এর পর থেকে শুধুমাত্র ভারতে আটকে থাকা বাংলাদেশী নাগরিকরা দেশে ফিরে আসছেন। গতকাল ১০জন বাংলাদেশী নাগরিক ভারত থেকে দেশে ফেরেন। যার মধ্যে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর ৩জন হোম কোয়ারেন্টাইনের উদ্দেশ্যে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন আর বাঁকি ৭জন উপজেলা প্রশাসন তাঁদেরকে কোয়ারেন্টাইনে ভর্তির জন্য নিয়ে যান। আজ সকাল থেকে শুরু করে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভারত থেকে ১জন বাংলাদেশী নাগরিক দেশে ফিরেছেন, তাকে পুলিশ নিয়ে গেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী মাহমুদুল হাসান ও কাওসার উদ্দিন জানান, ভারত করোনা ভাইরাস আক্রান্তের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। অথচ সেই ভারত তারা তাদের নিজ দেশের নাগরিকসহ কোন দেশের নাগরিককে গ্রহন করছেননা। অথচ তারা বাংলাদেশী নাগরিকদের দেশে ফেরত দিচ্ছেন আর আমরাও তাদের দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছি। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় হিলিতে যখন স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে গত ২৪মার্চ থেকে হোটেল রেস্তোরা, সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে জনগনকে নিজ বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে ২৬মার্চ থেকে দশ দিনের ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে, বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের যাত্রীবাহিন বাস চলাচল ঠিক এমন অবস্থার মধ্যেও ভারত থেকে যাত্রী পারাপার হওয়ায় কারনে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের আশংকা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রামনের হাত থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে যাত্রী পারাপার বন্ধের দাবী জানান তারা।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুস সাইদ জানান, হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার পর ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে কর্তব্যরত মেডিকেল টিম তাদের স্বাস্থ্য পরিক্ষা করেছে। তবে দেশে আসা এসব নাগরিকগন অসুস্থ না হলেও করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তাদেরকে উপজেলা প্রশসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখার শর্তে তাদের অভিভাবকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এমন মুহুর্তে ভারত থেকে দেশে যাত্রী ফেরা আমাদের জন্য ঝুকির বিষয় আমরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।

হাকিমপুর (হিলি) পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত জানান, ইতোমধ্যেই করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আঘাত হেনেছে। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছে এবং ৫জন মারা গিয়েছেন। তাই হিলির জনগনের স্বার্থে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে যাত্রী পারাপারসহ এখনই সবকিছু লকডাউন করে দেয়া উচিত। 

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাফিউল আলম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানান, ভারত থেকে ইমিগ্রেশন চেকেপাষ্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার এখনি টোটালি বন্ধ করা দেয়া উচিৎ, আমরা এ বার্ডেন তো সয্য করতে পারছিনা। এরাই দেশে করোনা সংক্রমনের জন্য মেইন সোর্স বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আরকে//