ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

করোনার এই কঠিন সময়ে অমানুষের মুখচ্ছবি কেন দেখতে হচ্ছে?

শওগাত আলী সাগর

প্রকাশিত : ০৯:৩০ এএম, ২৯ মার্চ ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০৯:৩১ এএম, ২৯ মার্চ ২০২০ রবিবার

লেখক ও সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর

লেখক ও সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর

করোনা ভাইরাসকে আমরা কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছি? আতংক ছড়াতে ছড়াতে এই ভাইরাস সম্পর্কে মানুষের মনে কতোটা ভীতি আর কুসংস্কার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি?

করোনা আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনের জন্য জায়গা নির্ধারন করতে গেলে এলাকাবাসী বাধা দেন, হাসাপাতালে রোগী ভর্তি করতে গেলে মিছিল করে এসে হাসপাতাল অবরোধ করে রাখেন, কবরস্থানে ব্যানার টানিয়ে রাখেন- ‘এখানে যাতে করোনায় মৃত কাউকে কবর দেয়া না হয়। করোনায় আক্রান্ত মৃতদেহ সন্দেহে ট্রলারে হামলা করেন। এখন আাবার করোনা চিকিৎসা হাসপাতাল বানানোয় বাধা দিচ্ছেন।’

কি আশ্চর্য!

করোনার চিকিৎসায় বাধা দেবেন, মৃতদেহের সৎকারে বাধা দেবেন, হাসাপাতল বানানোয় বাধা দেবেন- করোনা সম্পর্কে এমন ভীতিকর ধারণা আপনাদের মনে কিভাবে তৈরি হলো? কারা তৈরি করলো? কাদের অপপ্রচারণা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করলো?

সরকারি উদ্যোগে নয়, যে ব্যবসায়ীদের আমরা হরহামেশা মিডিয়ায় দেখি, যারা সরকারের নানা ধরনের সহযোগিতা পায় তাদের কেউ নয়- আকিজ গ্রুপ নিজের উদ্যোগে একটা হাসপাতাল বানাবে। তাতে যারা বাধা দিতে আসে- তারা কি আসলে মানুষ? তারা কেমন মানুষ?

ধন্যবাদ দেই পুলিশকে, তাদে হস্তক্ষেপে হাসপাতালের বাধা সরেছে। কিন্তু করোনা সম্পর্কে মানুষের মনে যে ভীতি পুঁতে দেয়া হয়েছে তা সরাবে কে?

গবেষকরা প্রথম থেকেই করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য দিচ্ছেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা পরীক্ষিত এবং প্রমানিত তথ্যগুলো প্রতিদিন প্রচার করছেন। সেগুলো মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া গেলে মানুষের মনে এমন ভুল ধারনা তৈরি হতো না।

সেই কাজটি কেন করা হলো না?

প্রতিদিন ফেসবুকে আপনি কতো শত শত পোষ্ট দেন, তার কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল, কোনটা মানুষের মনে ভুল ধারনা তৈরি করছে- তা কি কখনো ভেবেছেন? বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কয়টা তথ্য আপনি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন?

করোনার এই কঠিন সময়ে একদল অমানুষের মুখচ্ছবি কেন আমাদের দেখতে হচ্ছে! কেন!

এসএ/