ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনাকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৩ এএম, ৬ এপ্রিল ২০২০ সোমবার

নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় নতুন চারটিসহ পাঁচটি প্যাকেজে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘোষিত এ প্রণোদনাকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন ও খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। 

প্রণোদনা ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। সংগঠনটির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাণঘাতী মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক এ দুর্যোগের সময়ে একজন মমতাময়ী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুনির্দিষ্ট ব্যবসাবান্ধব কতিপয় বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় বিসিএমইএর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। চলমান এ সংকট থেকে উত্তরণে দেশের জনগণ ও অর্থনীতিকে রক্ষা করতে এখন পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত সব পদক্ষেপের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা, সমর্থন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

প্রণোদনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) বলছে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এ প্রণোদনা দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পকে সচল রাখবে এবং এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকবে বলে বিশ্বাস করে বিএবি।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের উচ্চপ্রশংসা করেছে বেসরকারি খাতের থিংকট্যাংক বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)। এ পদক্ষেপ সময়োপযোগী ও অর্থনৈতিক শ্লথগতি মোকাবেলায় সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে বেসরকারি খাতের এ থিংকট্যাংক।

বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, কভিড-১৯-এর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতে আজ (গতকাল) ‘অর্থনৈতিক প্রভাব ও অ্যাকশন প্ল্যান’ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘোষণায় কভিড-১৯-এর কিছু অর্থনৈতিক প্রভাবের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী, যেগুলো কিনা বর্তমান প্রবৃদ্ধির ধারা ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে ব্যাহত করতে পারে। এর প্রভাবে হোটেল, রেস্তোরাঁ, এভিয়েশন ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানান তিনি। প্রথমে লকডাউনের কারণে এসএমই ও বৃহৎ শিল্পের রফতানিতে পতন এবং স্থানীয় বাজার, রেমিটেন্স ও ক্রয়ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে আসার বিষয় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটার বিষয়ও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজকে অত্যন্ত সময়োচিত ও বিজ্ঞ রাষ্ট্রনায়কোচিত পদক্ষেপ বলে মনে করছে মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। 

সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সাধারণ জনগোষ্ঠীসহ খেটে খাওয়া মানুষ এবং বিশ্বব্যাপী করোনার বিস্তারে সম্ভাব্য বিশ্ব মন্দার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার লক্ষ্যে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের বিভিন্ন বিভাজনকে আমরা ইতিবাচক মনে করছি। প্রণোদনা প্যাকেজের বিভিন্ন বিভাজনে যে পদক্ষেপ তথা সরকার কর্তৃক গৃহীত ঋণের অর্ধেক সুদ প্রদান বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ও যুগান্তকারী। এর জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের মধ্য থেকে বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা প্রদান করায় তা টেক্সটাইল খাতসহ বিটিএমএর বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র এবং অন্যান্য ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ ইন্ডাস্ট্রি বিদ্যমান আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। অন্যদিকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় রফতানি উন্নয়ন তহবিলের সুদের হার হ্রাস করে ২ শতাংশ নির্ধারণ বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সময়োচিত বলে আমরা মনে করি।

বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)। কভিড-১৯-এর কারণে দেশের অর্থনীতিতে অবশ্যম্ভাবী প্রভাব কমাতে এটি একটি সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে সংগঠন দুটি।

প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছে পাবলিক কি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফোরাম বা পিকেআই ফোরাম। সংগঠনটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে যেমন বেকারত্ব ও শ্রমিক ছাঁটাই রোধ করতে প্রণোদনা প্যাকেজ সহায়তা করছে; তেমনি বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোও তাদের লোকবল ধরে রাখতে সক্ষম হবে।

এমবি//