ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রান্তিক কৃষকদের শঙ্কা, আশ্বাস দিল কৃষি বিভাগ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৩ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০২০ সোমবার

করোনা প্রভাবে দুশ্চিন্তায় কুষ্টিয়ার প্রান্তিক কৃষকরা। জেলার ১০/১২ শতাংশ কৃষকের নিজের কোনো জমি নেই। আবার ১৫/১৭ শতাংশের সামান্য কিছু জমি আছে কিন্তু সেই জমির সাথে তারা আরও জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন। 

এসব কৃষকদের সবসময় ধার-দেনার ওপরেই থাকতে হয়। ফসল তোলার পর তা পরিশোধ করেন। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চলতি মৌসুমে ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। 

চলমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতেও মাঠে কাজ করতে হচ্ছে এসব কৃষকদের। এখন ফসল তোলার সময়। এ ফসলের অর্থেই নিম্নবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত চাষিদের পাওনা টাকা পরিশোধের একটা বড় চাপ থাকে। আর সে জন্যই কম দামে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হন তারা। ফলে, এই দুর্যোগে কমে যাচ্ছে পণ্যের দাম। 

আজিবর আলী মন্ডল সদর উপজেলার বাসিন্দা। নিজের জমি নেই। ৩ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টাসহ কিছু রবি মৌসুমের ফসল চাষ করেছেন তিনি। 

আজিবর আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ফসল তোলার সাথে সাথে জমির মালিক, সার, বীজের দোকানদার, ফড়িয়া সব এসে হাজির হয়। আগে তো বিক্রি করব, তারপর ট্যাকা দিব।’ তাই দেনাদারদের টেকা পরিশোধ করার জন্য পানির দরে ফড়িয়াদের কাছে ফসল বিক্রি করা লাগে।’

আবুল হোসেনেরই প্রতিবেশী ফয়জুল মিয়া। তিনি জানান, ‘ফসল তুলে বাজারে নিয়ে গেলে সিন্ডিকেট করে ফড়িয়ারা চাপ দেয় ওদের দামে বিক্রি করার। দেনা দিতে হবে। তাই অনেক সময় ফড়িয়ার হাতে তুলে দিয়ে আসতে হয়।’ 

ফয়জুল বলেন, ‘আর এখন তো খারাপ সময় চলছে। ফসলের ভালো দাম না পেলে তো খুব ক্ষতি হয়ে যাবে।’

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক রঞ্জন কুমার প্রমাণিক বলেন, ‘প্রান্তিক কৃষকদের সুরক্ষার বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক বা এ ধরণের দুর্যোগে কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। তারা যেন ন্যায্য মূল্য পান, সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি, এবং কৃষকদের সমবায় সমিতি করাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষরা ফসল সঠিক দামে বিক্রি করতে পারবে। সেইসাথে ফড়িয়ারা যেন এদের চাপ দিতে না পারে সে দিকে আমরা নজর রাখছি।’

সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রী হিসেবে আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই যে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখার জন্য সরকার সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই কৃষি উপকরণ যেমন সার, বীজ, বালাইনাশক, বিদ্যুত, পানি সরবরাহ এগুলোকে নির্বিঘ্ন করবো।’

এছাড়াও ক্ষেতমজুর, দিনমজুরের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

প্রান্তিক কৃষকদের সুরক্ষার বিষয়ে কৃষি মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ বেশ সচেষ্ট বলে জানান জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। 

তিনি বলেন, ‘করোনায় সৃষ্ট এই দুর্যোগে কৃষকদের প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্য মন্ত্রী মহোদয়সহ সকলকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রান্তিক কৃষকরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হন সেদিকটায় আমরা সচেষ্ট থাকব।’

এআই/