ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

বিশ্বব্যাপী ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে আক্রান্ত, মৃত্যু ৮৮৪৫৭ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪১ এএম, ৯ এপ্রিল ২০২০ বৃহস্পতিবার

বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ রূপে আবির্ভূত অচেনা করোনা ভাইরাসের শিকার ১৫ লাখের বেশি মানুষ। যেখানে প্রাণহানি লাখের কোটায় হাতছানি দিচ্ছ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটির কবলে পড়েছে মোট মৃতের সংখ্যার অনুরূপ। এসময়ে সাড়ে ৮৮ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫ লাখ ১৮ হাজার ২৩ জনে। অপরদিকে, মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে আরও ৬ হাজার ৩৮৩ জন। এতে করে উৎপত্তির তিন মাসে প্রাণহানির সংখ্যা ৮৮ হাজার ৪৫৭ জনে ঠেকেছে।  

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট ৪ লাখ ৩৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৬৮৮ জনের। তবে মৃতের হিসাবে শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৬৯। আর আক্রান্ত এক লাখ ৩৯ হাজার ৪২২ জন।

এরপরই রয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ স্পেন। করোনায় প্রাণহানির দেশের তালিকায় যার অবস্থান ইতালির পরেই। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ২২০ জন। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯২ জনের। 

মৃতের সংখ্যায় চতুর্থ স্থানে একই মহামদেশের ফ্রান্স। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। এরমধ্যে ১০ হাজার ৮৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ইরানে মারা গেছে যথাক্রমে ৭ হাজার ৯৭ ও হাজার ১৭১ এবং প্রায় ৪ হাজার জন।  

উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৩৩৭। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপনের অভিযোগ রয়েছে। উহানের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘বুদ্ধি-বিবেচনাসম্পন্ন যেকোনও মানুষ এই সংখ্যা (সরকারি পরিসংখ্যান) নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবেন।’

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতে সময়ের সাথে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটিতে ২১ দিনের লকডাউন চলার মধ্যেও প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল। লকডাউনের পরিমাণ আরও বাড়ানোর চিন্তা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৯১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৭৮ জন। 

আর বাংলাদেশে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, বুধবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২১৮ জন। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ২০ জনের। গত ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনা শনাক্ত হয়। 

এদিকে, ভাইরাসটির মহামারি রূপ এখনও সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পৌঁছায়নি বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের মতো সংঘাত কবলিত দেশগুলোতে সংক্রমণ শুরু হলে পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন গুতেরেস।

তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটি দেখিয়ে দিয়েছে কত দ্রুত তা সীমান্ত পার হতে পারে, দেশ বিধ্বস্ত করে দিয়ে জীবন কেড়ে নিতে পারে।’ করোনা মহামারি মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে আরও বেশি সহায়তা দিতে উন্নত দেশ এবং বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। 

এআই/