ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ছায়ানটের ডিজিটাল প্রভাতী দিয়ে বর্ষবরণ শুরু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৯ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:৫৩ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার

বিশ্বমহামারী করোনা ঘরবন্দী করেছে মানুষকে। বাঙালির চিয়ায়ত উৎসব বর্ষবরণেও সবখানে নীরবতা। রমনা বটমূলে ছিলো না প্রাণ, ছিলো না ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। তবে ডিজিটাল আয়োজনে মানবতার জয়গান গায় সংগঠনটি।

করোনার কারণে বন্ধ বৈশাখের সব আয়োজন। বাইরে আয়োজন নেই তাতে কি, ডিজিটাল দুনিয়াতে উদযাপিত হচ্ছে বর্ষবরণ উৎসব। অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে আসা ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজনে ছেদ পড়লেও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গে যুথবদ্ধভাবে বিশেষ প্রভাতী আয়োজন প্রচারিত হয়েছে আজ।

আজ পয়লা বৈশাখ। ভোরের আলো ফুটতেই বাংলা নতুন বছর ১৪২৭-কে বরণ করে নিয়েছে বাঙালি জাতি। আর সেই নতুন বঙ্গাব্দ বরণের অন্যতম অনুষঙ্গ রমনার বটমূলে ছায়ানটের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। তবে ৫৬ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো সেই অনুষঙ্গ উদযাপনে ছেদ পড়ছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সব ধরনের জনসমাগম বন্ধ থাকায় রমনার বটমূলে নেই ছায়ানটের কোনো অনুষ্ঠান। স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনেই নিয়মিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ও মিলনমেলার আয়োজন থেকে সরে এসেছে তারা। তবে এর বদলে  ছোট পরিসরের একটি অনুষ্ঠান প্রচার করেছে বাংলাদেশে টেলিভিশন। 

যদিও বর্ষবরণের এই টিভি অনুষ্ঠান ধারণ করার মতো পরিস্থিতিও নেই। ফলে রমনার বটমূলে গত কয়েক বছর ধরে যে অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এসেছে ছায়ানট, তারই ধারণকৃত ভিডিও দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এবারের টিভি অনুষ্ঠান। গত কয়েকটি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নির্বাচিত ভিডিও দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয় আজ সকাল ৭টায়। বাংলাদেশ টেলিভিশন ছাড়াও অনুষ্ঠানটি একই সঙ্গে ছায়ানটের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল ছায়ানট ডিজিটাল প্লাটফর্মেও সম্প্রচারিত হয়।

১৯৬৭ সালে ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন শুরু হয়েছিলো ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’ গানটির মধ্যে দিয়ে। শুরুর এ গানটি দিয়ে ২০১৭ সালে ৫০ বছর পূর্তির আয়োজনও শুরু করেছিলো ছায়ানট। বিশেষ ব্যবস্থার এ আয়োজনটিও শুরু হয় এ গান দিয়ে। এর পর একে একে প্রচারিত হতে থাকে গান। যেসব গানে বর্ণিত হয়েছে মানুষের জয়গান।

সম্মেলক কণ্ঠে গীত হওয়া ‘ওই প্রভাত’, ‘নাই নাই রে ভয়’, ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’সহ আরো কয়েকটি গান। খায়রুল আনাম শাকিল কাজী নজরুল ইসলাম, লাইসা আহমেদ লিসা রবীন্দ্রনাথ ও চন্দনা মজুমদারের কণ্ঠে লালন সাঁইয়ের গান প্রচারিত হয়।

আসাদুজ্জামান নূরের কণ্ঠ কবি দিলওয়ারের কবিতা ‘ক্ষমা করবেন শ্রদ্ধেয় পিতা’ আয়োজনে ভিন্ন মাত্রা দেয়।

এর পর ছায়ানট সভাপতি সানজীদা খাতুনের সমাপনী কথন প্রচারিত হয়। যেখানে তিনি বলেন, উৎসবের দিন নয় আজ। বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করবার দিন। নিজে নিরাপদ থাকার পাশাপাশি সবাইকে নিরাপদ রাখার সময়। এই সর্বব্যাপী বিপদে আক্রান্ত বিরূপ বিশ্বে মানুষ একা হয়ে পড়েছে, আবার সব বিশ্ববাসী আজ একই সংগ্রামের সহযাত্রী হয়ে মিলেমিশে একাকার।

ছায়ানটের রীতি অনুযায়ী, জাতীয় সঙ্গীত প্রচারের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ডিজিটাল প্রভাতী আয়োজন।


এসএ/