ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

শুয়ে শুয়ে বই পড়ে ডেকে আনছেন বিপদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:১৫ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:১৫ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার

ছাত্রজীবন পার করতে হলে বই পড়া আবশ্যক। চাকরি জীবনেও অনেকে অবসর সময়ে বই পড়েন। মেধার বিকাশ ও জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে বই পড়ার বিকল্প নেই। কিন্তু এই বই অনেকে বসে, আবার কেউবা শুয়ে পড়েন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুয়ে বই পড়ার অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, শুয়ে বই পড়লে উপকারের থেকে ক্ষতিটাই বেশি হয়। 

এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেন- শিরদাঁড়া টান টান করে বসে বই পড়া উত্তম। অথচ তাতে গা দেয় না অনেকেই। এমনকি অনেক সময় অভিভাবকরাও সন্তানদের বিষয়ে কড়া হন না এ নিয়ে। ফলে শুয়ে শুয়ে পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে যায় খুদে পড়ুয়াদেরও। এছাড়া বহু মানুষেরই অভ্যাস রয়েছে ট্রেনে-বাসে, লঞ্চে শুয়ে বই পড়া। কিন্তু এতে আপনি বিপদই ডেকে আনছেন। 

চলুন জেনে নিন শুয়ে বই পড়লে কী কী সমস্যা হতে পারে-

চোখের ওপর চাপ
বিজ্ঞানীরা সবসময় পরামর্শ দেন বই থেকে চোখের দূরত্ব অন্তত যেন ১৫ ইঞ্চি হয়। শুধু তাই নয়, পড়ার জন্য চোখের সঙ্গে বইয়ের অ্যাঙ্গেল থাকতে হবে ৬০ ডিগ্রি। যারা বাইফোকাল চশমা পরে বই পড়েন তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা এর থেকে সামান্য কম কোণে পড়ার পরামর্শ দেন। শুয়ে বই পড়ার সময় বইয়ের দিকে যে কোণে তাকানো হয়, তাতে বইয়ের সঙ্গে ৬০ ডিগ্রি কোণ থাকে না। ফলে চোখের ওপর চাপ পড়ে।

এতে কিছুক্ষণ পড়ার পরেই ক্লান্তি হয় শরীরে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে। পাশ ফিরে শুয়ে যদি বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন, তারপরও সমস্যা থেকে যায়। এ ছাড়া পাশ ফিরলে একদিকের পেশির ওপর চাপ বেশি পড়ে। ফলে পেশিগুলো সহজে কাজ করতে পারে না। এমনকি এতে চোখের অংশে কমে যেতে পারে রক্তচলাচল।

 

চোখ লাল হওয়া
অনেকে ভাবেন রাতে বিছানায় শুয়ে না ঘুমিয়ে বই পড়ার কারণে চোখ লাল হয়। কিন্তু মেডিকেল সায়েন্স বলছে, অন্য কথা। তাদের কথায়, চোখের পেশিগুলোয় অত্যাধিক চাপ পড়ে বলেই চোখ এমন লাল হয়ে যায়। এটিও অ্যাস্থেনোপিয়া রোগেরই একটি বিশেষ লক্ষণ। এর ফলে চোখের অশ্রুগ্রন্থির পানি শুকিয়ে যেতে পারে।

অশ্রুগ্রন্থির পানি চোখের মণিকে আর্দ্র রাখে যাতে বাইরের কোনো ব্যাকটেরিয়া সহজে চোখে প্রবেশ করে কোনো রকম ইনফেকশন না ঘটাতে পারে। কিন্তু চোখের পানি শুকিয়ে গেলে চোখের মণিতে বাইরের বাতাসে বায়ুর ধূলোর কণা সহজেই প্রবেশ করতে পারে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভালো নয়।

মাথা ব্যথা
শুয়ে বই পড়লে চোখে তো চাপ পড়েই, একই সঙ্গে সেই চাপ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে মাথাতেও। বিভিন্ন নার্ভ আমাদের ব্রেনে গিয়ে ভিশনারি সেন্স তৈরি করে। তাই চোখের ওপর অস্বাভাবিক চাপ পড়লে নার্ভগুলো ঠিকমত কাজ করে না। উপরন্তু চোখের পেশির কাজে বাধা তৈরি হওয়ায় তা প্রভাব ফেলে মাথার পেশিতেও। এতে কমে যেতে পারে ঘুমের পরিমাণ।

শুয়ে বই পড়লে চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা যাবে-এমন আশঙ্কার কথা চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মুখে এখনো শোনা যায়নি। তবে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই বলে থাকেন। তাই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগেই সাবধান হওয়া ভালো।

এসএ/