কাঁচামাল স্বল্পতায় গুটিয়ে যাচ্ছে ইস্পাত শিল্প
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৭ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২০ শুক্রবার
লকডাউনের কারণে কাঁচামাল সংকট, পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া ও উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে ইস্পাত কারখানা চালু রাখা যাচ্ছে না। তাই একের পর এক গুটিয়ে যাচ্ছে ইস্পাত কারখানা।
দেশের অধিকাংশ ইস্পাত কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও খোলা ছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত পণ্য উৎপাদনকারী বিএসআরএম গ্রুপ। এ সময় গ্রুপটির প্রধান কার্যালয় বন্ধ রাখলেও প্রায় ১২টি বিভিন্ন ধরনের কারখানা ও ওয়্যারহাউজ চালু রাখা হয়। চাহিদা থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য সরবরাহও দেয়া হয়। পণ্য সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে কয়েক দিন আগে প্রশাসনের কাছ থেকে ৪৮টি ডেলিভারি কাভার্ড ভ্যানের জন্য অনুমতিও নিয়ে রাখে তারা। কিন্তু দৈনিক ভিত্তিতে নেয়া শ্রমিক সংকট, বন্দর ও কাস্টমস থেকে আমদানি কাঁচামাল সংগ্রহে বিলম্ব, স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ থাকা এবং মজুদ কাঁচামালের সংকটে শেষ পর্যন্ত কোম্পানিটিও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। তবে কারখানার মেইনটেন্যান্স কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে এ সময় পর্যন্ত কর্মীদের ‘ওয়ার্ক অ্যাট হোম’ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জহির চৌধুরী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানই খোলা রাখা সম্ভব নয়।
একইভাবে বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রামের গোল্ডেন ইস্পাত। তারও আগে বন্ধ হয়েছে আরেক ইস্পাত জায়ান্ট একেএস ইস্পাত ও জিপিএইচ ইস্পাত (নতুন প্লান্ট)। কাঁচামাল সংকট, পরিবহন ও শ্রমিক সংকটে বন্ধের পথে রয়েছে কেএসআরএম, আরএসআরএম, বায়েজিদ স্টিলসহ অন্য ইস্পাত কারখানাগুলোও। রোলিং মিল সীমিত পরিসরে চালু থাকলেও মেল্টিং কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে কাঁচামাল সংকটে। তবে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হলে স্থগিত থাকা দেশের সব ধরনের নির্মাণকাজ চালু হবে। তখন চাহিদাও বেড়ে যাবে। এ কারণে সীমিত পরিসরে যতটুকু সম্ভব রড উৎপাদন করে মজুদ রাখতে চাইছে কোম্পানিগুলো।
জানতে চাইলে কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চীন ছাড়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশ থেকেই পণ্য আমদানি প্রায় বন্ধ। সংগত কারণে কারখানা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায়ও নেই।
খাতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় কয়েকশ ইস্পাত পণ্য উৎপাদনকারী কারখানা রয়েছে। তবে বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধীন কারখানার সংখ্যা ৩৬। এ প্রতিষ্ঠানগুলো বেশির ভাগই চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত। এসব কারখানা দেশের ইস্পাত পণ্যের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সরবরাহ করে।
আরকে/