ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫,   পৌষ ৪ ১৪৩২

বিষ দিয়ে শতাধিক পাখি নিধনের অভিযোগ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২০ রবিবার

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের কোকিল মন্টুপাড়া গ্রামের মাঠে ধান, গম ও চালে বিষ মিশিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিনে দুই শতাধিক পাখি ও অর্ধশতাধিক কবুতর এই বিষ মেশানো গম-চাল খেয়ে মারা গেছে। এতে করে কবুতরের মালিক ও প্রকৃতি-প্রেমিরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রোববার দুপুরে ওই মাঠে গিয়ে দেখা গেছে বিশ মাখানো গম-চাল ও সরিষা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

অভিযোগে জানা গেছে, ওই গ্রামের রবিউল, পাশের গ্রামের বৈদ্যসিং তার প্রতিবেশি রবি সিং ও হিন্দু ও মুড়া পাড়ার আরও কয়েকজন যুবক বেশ কিছুদিন ধরে ধান,গম,চাল ও সরিষায় বিশ মিশিয়ে গ্রামের মাঠে ছড়িয়ে দিয়ে পাখি ও কবুতর শিকার করে আসছে। এই বিষ মেশানো গম চাল খেয়ে কবুতর, ঘুঘু পাখি, শালিক, গুদু–রকানি, বুলবুলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ শতাধিক পাখি ও অর্ধ শতাধিক কবুতর ইতিমধ্যে মারা গেছে। অভিযোগ রয়েছে নিধন করা এসব পাখি বিশেষ করে ওই এলাকার আদিবাসী সিং সম্প্রদায় ও কিছু উঠতি বয়সের যুবকরা রান্না করে খেয়ে আসছে। তবে রবিউল,বৈদ্য শিং ও রবি সিং অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমরা বিষ মাখিয়ে পাখি শিকার করি না। এটা অন্য কেউ করে আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা দিনেশ মাহাতো বলেন, দুর্বৃত্তরা আমার ২৪টি কবুতর হত্যা করেছে। একই গ্রামের তোজাম্মেল হোসেন বলেন, তারা কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নিধনে উম্মত্ব হয়ে উঠেছে। তাদের প্রতিহত করা না গেলে এই এলাকায় পাখির কলকাকলী থেকে আমরা বঞ্চিত হবো।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান আলী ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি, এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে তারা প্রকৃতির প্রেম বন্যপ্রাণি ও বিভিন্ন পাখি ধ্বংস করবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে।

এঘটনায় প্রকৃতিপ্রেমী ইতিহাসবিদ ধামইরহাট সরকারী এম এম কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিষ দিয়ে পাখি নিধন একটি গুরুত্বর অপরাধ, যা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থি, জীব বৈচিত্র ও প্রকৃতি সংরক্ষণে পাখিদের বিচরণ অতি প্রয়োজন, পাখিদের কলতানে মুখরিত আমাদের আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যানের আসা পর্যটকরাও পাখি দেখতেও অনেকেই আলতাদিঘীতে আসে। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই ও দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।

ধামইরহাট উপজেলা বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, স্থানীয়দের তথ্যমতে দুর্বৃত্তরা বহুদিন ধরেই তারা পাখি শিকার করে আসছিল, যা কখনই আমাদের কেউ অভিযোগ করেনি, যখন কবুতর মরতে শুরু হলো। তখন টনক নড়ে স্থানীয়দের, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গলপতি রায় বলেন, যেকোন প্রজাতির পাখি নিধন আইনত অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেআই/