ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪,   বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

ঘটন-অঘটন-পটিয়সী

শাহাজাদা বসুনিয়া

প্রকাশিত : ০৪:০৪ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২০ সোমবার

স্বীকৃত যে, সর্বদা জল্লাদকে নিয়ে আমরা ভীতিগ্রস্থ-আতঙ্কগ্রস্থ হই। আমিও ব্যতিক্রম নই, ইদানিং জল্লাদকে ভয় পাইনে। দীর্ঘদিন থেকে জল্লাদের হস্তক্ষেপে আমার আত্মা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন। বীভৎস দৃশ্য। প্রারম্ভে ভাবতে কষ্ট পেতাম; এখন শান্তনা পাই ভেবে এই যে, দেহ থেকে আমার আত্মা অবমুক্ত। ভারবিহীন চলাফেরায় অসুবিধা হয় না; উড়িয়া উড়িয়া চলি, চক্ষু মেলিয়া দ্যাখিঃ

উড়তে উড়তে চলতে চলতে দেখি
দুচোখে একশ চোখের ছানি
বন্ধ চোখে দেখতে থাকি রঙ্গশালার দেশ
চুরি-চামাড়ী, থাবা-খাবায় সোনার বাংলাদেশ

বলাবাহুল্য, সময়-অসময়ে আমার অশরীরী আত্মা নীরব দর্শক। ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে আত্মাটি চক্ষু খুলিয়া চাহিয়া দ্যাখে। হো হো করিয়া হাসিয়া উঠে-যাহা শঙ্খ শব্দের মতো দিগন্তে মিলিয়া যায়। চক্ষু খুলিয়া অবলোকন করিয়া অনেক গুপ্ত রহস্যের স্বাক্ষী আমার আত্মাঃ

গোলাভর্তি ত্রাণের চাল
কেউ পায় না
কেউ জানে না
কেউ বুঝে না
তাহারা বাদে সবাই যেন চ্যাটের বাল

আত্মাটি দেহ থেকে বিচ্ছিন্নের পর প্রায় অফিস পাড়ায় যাওয়া-আসা করত। দেহহীন প্রাণটা স্ব-চেয়ারে দেহহীন সময়ক্ষেপণ করত। দেহহীন প্রাণের অস্তিত্ব কেউই টের পেত না। খেলা চলত-জব্বর খেলাঃ

সবাই হাঁটে, হাঁটতে থাকে উল্টোপথে
কত ফাইল, কত নোট, কত হিসাব-নিকাশ
টাকা হাঁটতে থাকে, চলতে থাকে পকেটপথে
যত মত-তত পথ, ওই পথেতে অর্থ-কঁড়ির বিকাশ

স্বপ্নঘুম। ভগ্নঘুম। নির্ঘুম রাত। এখন আত্মা ও দেহ এক-অভিন্ন-সচল। ভাবছি, আমার কী দোষ? যেমনি নাচায়-তেমনি নাচি-পুতুলের কি দোষ? চেতন-অবচেতন মনে ভাবি আমি স্বপ্নবিশারদ।

ঘটন-অঘটন-পটিয়সী