ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

সৌদিআরব সহ মধ্যপ্রাচ্যে ২৩ এপ্রিল রোজা 

মোহাম্মদ ফিরোজ, সৌদি আরব প্রতিনিধি  

প্রকাশিত : ০৫:২৬ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২০ বুধবার | আপডেট: ০৫:৩৩ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২০ বুধবার

এবারের রমজান মাসটি বিশ্ববাসীর কাছে একটু ব্যতিক্রম, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বেশিরভাগ দেশেই চলছে লকডাউন। আগামী ২৩শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার চাঁদ দেখার বৃত্তিতে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রোজা শুরু। 

বিশ্বের সর্বত্র মুসলমানদের সিয়াম সাধনা তথা আল্লাহভীতির (তাকওয়া) সর্বোচ্চ পরীক্ষার মাস রমজান। তবে সৌদি আরবে এই বারের রমজান ঘরে বসে তারাবীহ পড়ে শুরু হবে। আর তাই মুসলমানরা বাসায় অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এবারের রমজানের রোজা পালন করবেন।

২৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রমজানের চাঁদ দেখা গেলে ২০২০ সালে সৌদি আরবে রমজানের প্রথম রোজা হবে ২৪ এপ্রিল। যেহেতু রমজানের রোজা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল সেহেতু যদি রমজানের চাঁদ দেখা যায় তবে ২৩ তারিখ তারাবিহ পড়ে ভোর রাতে সেহরি খেতে হবে। ২৪ এপ্রিল হবে রমজানের প্রথম রোজা।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে হারামাইন শরিফাইন তথা মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববিতে এ বছর তারাবির নামাজ ১০ রাকাত পড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশকিছু নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথাও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মক্কা ও মদিনার মসজিদের প্রধান শেখ আব্দুর রহমান আস-সুদাইসি। সীমিত সংখ্যক মুসল্লির অংশগ্রহণে রমজানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, তারাবি ও শেষ ১০ দিন তাহাজ্জুদের (কিয়ামুল লাইল) জামাত চলবে।

তবে এসব সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর জন্য। দেশের অন্য মসজিদের ক্ষেত্রে সরকারের দেওয়া পুরোনো সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

পাশাপাশি পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনার মসজিদে হারামাইনের চত্বরের ইফতারের আয়োজনই বিশ্বে সবচেয়ে বড়। কঠোর নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে সেখানে লাখো মুসল্লি একসঙ্গে ইফতারে অংশগ্রহণ করত এই দুই মসজিদে মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাবে কারণে কারফিউ ও লকডাউন বহাল থাকায় বিশ্বের এই সবচেয়ে বড়ো ইফতারের আয়োজন স্থগিত রাখা হয়েছে। 

এর আগে সৌদি আরবের ইসলামি বিষয়ক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ আল শেখ সেই দেশের নাগরিক ও সৌদিতে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পবিত্র রমজান মাসে তারাবীহ নামাজ ঘরে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। 

এদিকে আগামী ২৪ এপ্রিল শুক্রবার সৌদি আরবে প্রথম রোজা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মরোক্কোর জ্যোতির্বিদ আব্দেলআজিজ খার্বুচ আল ইফরানি।
পাশাপাশি অন্যান্য দেশ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক- যারা সৌদি আরবের উম আল-কুরা ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে, সেখানেও একই দিন রোজা শুরু হবে। মরক্কোর গণমাধ্যম এমডব্লিউএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

উম আল-কুরা হলো সৌদি আরবের সরকারি ক্যালেন্ডার। এটি একটি চান্দ্রপুঞ্জি, যা পবিত্র মক্কা নগরীতে চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়। এর প্রচলিত নাম হলো উম আল-কুরা। আরবিতে যাকে বলে ‘গ্রামগুলোর মা’ বা ‘দ্য মাদার অব ভিলেজেস’।

আরব উপদ্বীপের দেশগুলো এবং অন্যান্য দেশের মুসলিম সম্প্রদায় যেমন- দ্য ইসলামিক সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকা, দ্য ফিকাহ কাউন্সিল অব নর্থ আমেরিকা এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর ফাতওয়া এন্ড রিসার্চ উম আল-কুরা অনুসরণ করে।

তবে উমমিড ডটকম নামের আরেকটি ওয়েবসাইট বলছে, আগামী ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সৌদি আরব ও এর পার্শ্ববর্তী উপসাগরীয় দেশগুলোতে রোজা শুরু হতে পারে, যদি আগামী ২৯ শাবান নতুন চাঁদ দেখা যায়। অর্থাৎ ১৪৪১ হিজরির রমজান মাস ২৩ এপ্রিল না ২৪ এপ্রিল শুরু হবে তা নির্ভর করছে চাঁদ দেখার ওপর।

আরকে//