ট্রাম্পের বক্তব্যে জীবাণুনাশক ব্যবহারে সতর্কতা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২০ শনিবার

করোনায় মৃত্যু উপত্যকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভাইরাসটি মোকাবিলায় দেশটির সবধরণের গবেষণালব্ধ ফলাফল এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। নতুন কোনো উপায় খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।
এমন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘করোনা লড়াইয়ে অতিবেগুণি রশ্মি বা শক্তিশালী আলো ব্যবহার করে চিকিৎসা করা যায় কিনা। তা নিয়ে আরও গবেষণা করার পরামর্শ দেন তিনি।’
তার সেই বক্তব্য বিশ্বের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে তুমুল সমালোচনা ও হাস্যরসে পরিণত হন ট্রাম্প। যদিও গতকাল শুক্রবার ওই বক্তব্য তিনি মজা করে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন।
কিন্তু তার সেই বক্তব্য ইতিমধ্যেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীবাণুনাশক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানব শরীরে জীবাণুনাশক ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ট্রাম্পের বক্তব্যের পরই প্রতিষ্ঠানটি এই সতর্কবাণী দিলো।
রেকিট বেনকিজার নামক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ‘কোন অবস্থাতেই তাদের তৈরি পণ্য শরীরের ইঞ্জেকশন হিসেবে প্রয়োগ বা খাওয়া উচিত হবে না। জীবাণুনাশক বা এ জাতীয় উপাদানগুলো বিষাক্ত হতে পারে। এগুলো শরীরের সংস্পর্শে এলে এমনকি ত্বক, চোখ বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যারও তৈরি করতে পারে।’
ট্রাম্পের সেই কথায় ২০১৮ সালের মতো পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে যখন অনেকে কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট খেয়েছিলেন। এমন আশঙ্কা থেকে এ সতর্কবাণী দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্র মেরিল্যান্ডের গভর্নরের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, সেখানকার হটলাইনে জীবাণুনাশক খাওয়ার ব্যাপারে একশোর বেশি টেলিফোন আসার পর সতর্কবার্তা জারি করেছে জরুরি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি।
চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ‘প্রেসিডেন্টের ওই পরামর্শ মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে।’
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির চিকিৎসক জোনাথক স্পাইসার বলেন, ‘এসব পণ্যের মধ্যে এমন সব ক্ষয়কারী উপাদান রয়েছে, যা আমাদের শরীরের ভেতরটা ধ্বংস করে দিতে পারে। এ ধরণের কোন পণ্য শরীরের ভেতরে প্রবেশ করানো বা খাওয়া চরম বিপদজনক হবে।’
যদিও, চিকিৎসা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনার সৃষ্টি এবারই প্রথম নয়। করোনার চিকিৎসার ক্ষেত্রে এর আগে তিনি ম্যালেরিয়ার একটি ওষুধ, হাইড্রোক্লোরোকুইন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
যদিও এ নিয়ে গবেষণালদ্ধ কোন তথ্যপ্রমাণ নেই, বরং অনেকে এটা ক্ষতিকর হতে পারে বলেও মনে করেন।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা
এআই/