ঢাকা, শনিবার   ২৮ জুন ২০২৫,   আষাঢ় ১৫ ১৪৩২

মহান মে দিবস আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৫৭ এএম, ১ মে ২০২০ শুক্রবার

মহান মে দিবস আজ। মাঠে-ঘাটে, কলকারখানায় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে রক্তঝরা সংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টির দিন। দীর্ঘ বঞ্চনা আর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ১৮৮৬ সালের এদিন বুকের রক্ত ঝরিয়েছিলেন শ্রমিকরা।

এদিন শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন। সে ডাকে শিকাগো শহরের তিন লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ বন্ধ রাখেন। শ্রমিক সমাবেশকে ঘিরে শিকাগো শহরের হে মার্কেট রূপ নেয় লাখো শ্রমিকের বিক্ষোভসমুদ্রে। এক লাখ ৮৫ হাজার নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে আরও বহু বিক্ষুব্ধ শ্রমিক লাল ঝাণ্ডা হাতে সমবেত হন সেখানে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে অন্তত ১০ শ্রমিক প্রাণ হারান।

হে মার্কেটের ওই শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে। গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য। অবশেষে তীব্র আন্দোলনের মুখে শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে ১ মে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৮৯০ সাল থেকে প্রতি বছর দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ‘মে দিবস’ হিসাবে পালন করতে শুরু করে। এবারে মে দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই; সোনার বাংলা গড়তে চাই।’

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে এ বছর সরকার সব রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি স্থগিত করেছে। তবে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বাণী দিয়েছেন। সংবাদ পত্রগুলোও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, এবার নিষ্ক্রিয়ভাবে দিবসটি অতিবাহিত করতে হচ্ছে। আমরাও সরকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বর্ণাঢ্য র‌্যালিসহ সব কর্মসূচি স্থগিত করেছি। মূলত দিবসটি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের একমাত্র দিন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় আমরা মে দিবসের সব কর্মসূচি স্থগিত করেছি। তবে পরিস্থিতি উন্নত হলে পরে দেখা যাবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার। সরকার শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ফলে শ্রমিকরা অতীতের যে কোনও সময়ের তুলনায় এখন ভালো সময় পার করছে। শেখ হাসিনা সরকার অব্যাহত থাকলে শ্রমিকরা আরও উন্নত জীবন পাবে।

এমবি//