ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কোভিড -১৯ ও গর্ভকালীন সতর্কতা

প্রকাশিত : ০৩:১৪ পিএম, ২ মে ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০৪:৩২ পিএম, ২ মে ২০২০ শনিবার

কোভিড-নাইনটিনের বিরুদ্ধে লড়ছে সাড়া বিশ্ব। জনগোষ্ঠির একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। শুরুতে করোনায় শিশু মৃত্যুর হার কম থাকলেও এখন তা বেড়েছে। 

তবে আশার কথা এই যে, গবেষণায় এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, গর্ভবতী নারীদের কাছ থেকে তাদের ভ্রূণ কোভিড-১৯ রোগে সংক্রমিত হয়েছিল।

চীনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ের শরীর থেকে সংক্রমণ না হলেও শিশুর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়াটা অমূলক নয়। একইসঙ্গে, ব্রেস্ট ফিডিংয়ে কোনো সমস্যা না থাকলেও সরাসরি কোলে না নিয়ে সুরক্ষা পদক্ষেপ নিয়ে শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তবে কোনো মা করোনা আক্রান্ত হলে নবজাতককে অবশ্যই আলাদা রাখার কথা বলছেন তারা। কোভিডকালে গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য করণীয় সম্পর্কে আইইডিসিআরও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

শুরুর দিকে সতর্কতার অংশ হিসেবে গর্ভবতী নারীকে প্রথম ১২ সপ্তাহ সবকিছু থেকে আলাদা রাখা উচিত। একইসঙ্গে জন্ম নেয়া শিশুকে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশেও রাখতে হবে।
গবেষকরা বলছেন, গর্ভবতী নারীরা প্রসবের কাছাকাছি সময়ে করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকিতে পৌছেন। তা এ সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।

দুশ্চিন্তা কমাতে আমরা জেনে নিতে পারি করোনা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থার কিছু গাইডলাইন -


* গর্ভাবস্থায় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় যেকোনো ফ্লু বা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। সাধারণ মানুষের তুলনায় শ্বাসকষ্ট বেশি হতে পারে। এর কারন এসময় বুকের গহ্বরের আকার হ্রাস পায় বাড়ন্ত শিশুর কারণে। ফুসফুস কম জায়গা নিয়ে কাজ করে বলে গর্ভবতী নারীরা শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যায় ভোগেন অনেক সময়। কোভিড-১৯ এর আক্রমণে তা আরো মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।’ এসময় অনাগত সন্তানও অক্সিজেনের অভাবে ভুগতে পারে।  তাই যেকোনো কাশি-জ্বর হলেই শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

* এছাড়াও ডায়বেটিস, স্থুলতা এবং উচ্চ রক্তচাপসহ বেশ কিছু গর্ভকালীন জটিলতা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে কোভিড-১৯ সংক্রমণে। তাই এ বিষয়ে যথেষ্ট সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

* যেহেতু অন্তঃসত্ত্বাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নাজুক, তাই তাদের সচেতনতা বেশি দরকার। জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। মার্কেট, মেলা, বিয়েবাড়ি ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজন না হলে ভ্রমণ করবেন না। অসুস্থ ব্যক্তির কাছে যাবেন না। বারবার হাত পরিষ্কার করুন। পশু–পাখি বা কাঁচা মাছ, মাংস ধরবেন না বা ধরলেও দ্রুত সাবানপানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

* করোনাভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা বা অন্য ধরনের সংক্রমণের জন্য গর্ভপাত, শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়া, জন্মগত ত্রুটি বা উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরের জন্য গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি বা মৃত্যু হতে পারে, শুরুত্বেই চিকিৎসা নিলে তা এড়ানো সম্ভব।

* গবেষণায় গর্ভস্থ পানি (এমনিওটিক ফ্লুইড) বা বুকের দুধে এর উপস্থিতি পাওয়া যয়নি। তাই আক্রান্ত মা নিশ্চিন্তে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। তবে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করে খাওয়াতে হবে। হাত ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে ও মুখে মাস্ক পরতে হবে খাওয়ানোর সময়।

সর্বোপরি করোনার সঙ্গে লড়তে হলে চাই, সচেতনতা আর ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পরিচ্ছন্নতাবোধ। অনাগত সন্তান ও নিজের ভালো থাকার জন্য যা মেনে চলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।