ঢাকা, সোমবার   ১৪ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৮ ১৪৩১

করোনা সেবায় ৩৩৩

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:২৫ পিএম, ৯ মে ২০২০ শনিবার

চলমান করোনা দুর্যোগে ঘরবন্দি মানুষ। এতে প্রাণঘাতি ভাইরাসটিসহ সাধারণ অসুস্থায়ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না অনেকে। ঘরে বসেই নিচ্ছেন পরামর্শ ও সেবা।

করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে ফ্রি কলের ব্যবস্থা হয়েছে অনেক আগেই। যা থেকে প্রতিনিয়ত সেবা নিচ্ছেন হাজারো মানুষ। যেখানে কাজ করছে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩। বিশেষ এই ফোনকলে পাওয়া যায় করোনা ভাইরাসের তথ্যসেবাসহ অন্যান্য চিকিৎসা পরামর্শ। যারা সেবা দিচ্ছেন, সবাই চিকিৎসক, প্রত্যেকই স্বেচ্ছাসেবী। 

কঠিন এই মুহূর্তে নিজের কর্মস্থলে সেবা দেয়ার পাশাপাশি দেশের চার হাজারের বেশি চিকিৎসক বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যাদের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ মানুষ তথ্যসেবা পেয়েছেন। 

করোনা নিয়ে অধিকাংশ মানুষই আতঙ্কে। এসময় চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে পারলে অনেকে উদীপ্ত হোন। তাইতো প্রতিদিনই শতশত মানুষ জাতীয় এই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করছেন। 

যে অ্যাপটির মাধ্যমে এ সেবা দেয়া হচ্ছে তার নাম হল ‘করোনা ডক্টর পুল’। যা বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির ও চিকিৎসকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্ল্যাটফর্মের একটি উদ্যোগ। হটলাইনের সঙ্গে যুক্ত অ্যাপটিতে ৪ হাজারের বেশি চিকিৎসক নিবন্ধিত হয়ে সেবা দিচ্ছেন। এ ছাড়া মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দল কাজ করছে তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায়। যারা সবাই স্বেচ্ছাসেবী। 

এই স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকদের সমন্বয়ক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-কর্মসূচি ব্যবস্থাপক (মেডিকেল বায়োটেকনোলজি) ডা. মো. মারুফুর রহমান। এই উদ্যোগের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘গত মার্চে করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ১৭টি হটলাইন নম্বর চালু করা হয়। কিন্তু কলের পরিমাণ এত বাড়ছিল যে চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। তখন এটুআই ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে অ্যাপ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। উদ্দেশ্য, এটি ব্যবহার করে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকেরা পছন্দমতো সময়ে হটলাইন সিস্টেমে যুক্ত থেকে ই-ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ দিতে পারবেন। সে অনুযায়ী তৈরি হয় অ্যাপ। চিকিৎসক আহ্বান করা হয় প্ল্যাটফর্মের ফেসবুক গ্রুপে।’

তিনি বলেন, ‘সে সময় নিরাপত্তা সামগ্রীর স্বল্পতার কারণে অনেকে ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ রাখছিলেন। কেউ কেউ টেলিফোনে সেবা দিচ্ছিলেন। এমন চিকিৎসকদের লক্ষ্য করেই উদ্যোগটা নেওয়া। আগ্রহী চিকিৎসকদের কোভিড-১৯ সম্পর্কিত অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করা চিকিৎসকেরা সনদ নম্বরের মাধ্যমে অ্যাপে নিবন্ধন করে যুক্ত হন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে।’

মারুফুর রহমান বলেন, এই স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকেরা গত ২৪ মার্চ থেকে ৫ মে পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ কল গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে সরকারের টেলিমেডিসিন সেবাপ্রদানের নির্দেশিকা মেনে সাড়ে ৬ হাজার মানুষকে দিয়েছেন ই-ব্যবস্থাপত্র, কোয়ারেন্টাইন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ২ হাজার ৬০৪ জনকে।

এআই//