ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

করোনার সংক্রমণ রোধে ‘হ্যান্ড ওয়াশিং স্টেশন’ করছে ইউনিলিভার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৯ পিএম, ১২ মে ২০২০ মঙ্গলবার

করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত এই সময়ের মধ্যেও দেশের ৬৪ জেলায় খোলা থাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে একসঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্সের গ্রুপ এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশ।      

যেকোনো দুর্যোগের সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়গুলোই মূলকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে থাকে। চলমান লকডাউনের মধ্যেও দেশের জনগণকে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় খোলা রাখা হয়েছে এবং করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।    

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় ইতোমধ্যেই প্রায় ২০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ। এর মধ্যে নিজস্ব পণ্য বিনামূল্যে বিতরণ, সচেতনতা সৃষ্টি, স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এই উদ্যোগটি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইউনিলিভার বাংলাদেশের বৃহত্তর প্রতিশ্রুতিরই অংশ।    

সমন্বিত এই উদ্যোগের আওতায় দেশের ৬৪টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামগ্রিক ওয়াস ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করা হবে। প্রত্যেকটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জায়গা বা ‘হ্যান্ড ওয়াশিং স্টেশন’ বসানো, অফিস চত্বরকে সংক্রমণমুক্ত রাখা, স্যানিটেশন পরিচ্ছন্নতা ও খাবার পানি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। এক্ষেত্রে ইউনিলিভারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য- লাইফবয়, ডোমেক্স এবং পিওরইটের পাশাপাশি সংক্রমণমুক্ত করার জন্য স্প্রে মেশিন ও উপযুক্ত দ্রব্যাদি প্রদান করা হবে।       

এছাড়া মহামারী চলাকালে অফিসকে সংক্রমণমুক্ত রাখতে আগত দর্শনার্থীদেরকে পরিচ্ছন্নতা প্রটোকল সম্পর্কে সজাগ করা সহ কিভাবে নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে হবে, সে সম্পর্কেও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মীদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।    
 
এর বাইরে, চলমান মহামারী থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের ৬৪টি জেলা শহরে জীবনরক্ষায় জরুরি তথ্যাদি প্রচার করা হবে। এটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রেরিত বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরিতে সহায়তা করবে।           

সারাদেশের সবগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে করোনা প্রতিরোধে গৃহীত এই যৌথ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সারা দেশে মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে সবচেয়ে বড় মানবিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি’।   

এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদ ইতোমধ্যেই কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিকে ভালোমত সামাল দিতে হলে আমাদের একাধিক খাতের সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন। কোভিড-১৯ ভাইরাসের হাত থেকে জীবন রক্ষা ও এর সংক্রমণ সম্পর্কে জন সচেতনতা তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে চালানো আমাদের এই কার্যক্রমের সঙ্গে ইউনিলিভার বাংলাদেশ এবং ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্সের গ্রুপ যুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত।”  

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও কেদার লেলে বলেন, “বরাবরের মতোই দেশের প্রতি আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কঠিন এই সময়ে সরকারি অফিসের কর্মীসহ এ মহামরী মোকাবেলায় সামনের সারির সকল কর্মীদের পাশে থেকে তাদেরকে সাহায্য করাটা আমাদের কর্তব্য। অনেক মানুষের নিয়মিত যাতায়াতের সুযোগ থাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়গুলো এখন করোনার ঝুঁকিতে থাকা জায়গাগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।   
ভাইরাসটির সংক্রমণ রুখতে আমাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড- লাইফবয়, ডোমেক্স এবং পিওরইটের মাধ্যমে সামগ্রিক পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত আচরণে উৎসাহী করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্সেস গ্রুপের সাথে আমাদের এই সমন্বিত উদ্যোগ নাগরিকদের ওপর আরও জোরালোভাবে প্রভাব রাখতে সক্ষম হবে এবং অনিশ্চয়তার দেয়াল ভেঙে আমাদের সবাইকে সামনে এগিয়ে যাবার সাহস যোগাবে।” 

এসি