ঢাকা, মঙ্গলবার   ০১ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ১৭ ১৪৩২

সুরক্ষার স্বার্থে কী করবেন ঘূর্ণিঝড়ে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২২ এএম, ১৯ মে ২০২০ মঙ্গলবার

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। বঙ্গোপসাগর এখন উত্তাল, তাই সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলারগুলো চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে উপকূলীয় এলাকার ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

আবহাওয়াবিদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি ও এর বিপদ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখার পাশাপাশি ঝড় আঘাত আনার সময়ে করণীয় সম্পর্কে উপকূলের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হতে পারে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

তবে এবার ঘূর্ণিঝড় এসেছে করোনাভাইরাসের মহামরীর সময়ে, যখন সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে সুনির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং ভিড় এড়িয়ে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব (অন্তত তিন ফুট) বজায় রাখতে বলা হচ্ছে।

২০০৭ সালে বাংলাদেশে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় সিডর, তাতে তছনছ হয়েছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল, প্রাণ হারিয়েছিল দুই হাজারের বেশি মানুষ।

তার এক যুগ পরে এখন যে ঘূর্ণিঝড়ের সামনে বাংলাদেশ, সেই আম্পান সিডরের চেয়েও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এর কেন্দ্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যাওয়ায় এটি সোমবার পরিণত হয়েছে সুপার সাইক্লোনে।

আশ্রয়কেন্দ্রে সাধারণ মানুষকে নিজের সুরক্ষার স্বার্থে সচেতন থাকতে হবে।   

- ঝড়-জ্বলোচ্ছ্বাস প্রবণ বাংলাদেশে মূলত এপ্রিল-মে এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে।

- এ সময়ে উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিধস ঘটতে পারে।

- ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও গতিপথ অনুযায়ী বন্দরগুলোতে জারি করা হয় বিপদ সংকেত। সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়।

- ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় উপকূলের নিচু এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বসে প্লাবিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিচু এলাকায় পাকা দালানে থেকেও বিপদ ঘটতে পারে। সুতরাং কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মেনে দেরি না করে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়া উচিৎ।

- উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের আগে পাঠাতে হবে।

- আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় টর্চ লাইট, দেশলাইসহ মোমবাতি, শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান ইতোমধ্যে বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক পরে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে।

- ঘূর্ণিঝড়ের ‘চোখ’ বা কেন্দ্র উপকূলীয় এলাকা দিয়ে অতিক্রমের সময় কিছুটা সময় সব শান্ত হয়ে আসে। তখন ঝড় শেষ ভেবে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়া চলবে না, কারণ ‘চোখ’ পেরিয়ে গেলে আবারও আগের শক্তি নিয়ে তাণ্ডব চালায় ঝড়। সুতরাং ঝড় সরে যাওয়ার বা থেমে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্র ত্যাগ করা উচিৎ হবে না।
এসএ/