ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘কালো গাড়িটা দেখেই মন খারাপ হলো, মনে খটকা বাধে’ (ভিডিও)

প্রণব চক্রবর্তী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২১, ৭ আগস্ট ২০২২

গোটা জীবনটাই উৎসর্গ করেছিলেন বাংলা ও বাঙালির জন্য। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর ভাবনাজুড়ে ছিলো জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন। ১৪ই আগস্ট শেষ বেলায় কর্মস্থল থেকে ফেরার সময় জাতির পিতার মনটা ছিল ভীষণ বিমর্ষ।

যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নটাকে বাস্তব করতে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণভবনে ব্যস্ত সময় কাটাতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

যে রাতে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় তার আগের দিনেও গণভবনে কর্মব্যস্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতার একান্ত সচিব ড. ফরাসউদ্দিন বললেন, সন্ধ্যায় যখন ৩২ নম্বরের বাড়িতে ফিরছিলেন তখন বেশ বিমর্ষ ছিলেন শেখ মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সাথে সেটিই ছিলো তার শেষ দেখা। আরেকটি সন্ধ্যা যে বঙ্গবন্ধুর জীবনে আসবে না তা ভাবতেও পারেননি কখনো।

বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, “১৪ আগস্টের কালোরাতে তোফায়েল সাহেবকে দায়িত্ব দিয়ে যথাযথ ৮টার সময়ে ৩২ নম্বরে চলে গেলেন। কালো গাড়িটা দেখেই মন খারাপ হলো, মনে খটকা বেধে ছিল। চতুর্দিকে তো রিউমার, কি হবে কি হবে না। ভারতের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, আবার গুজব আছে মোশতাক সাহেব ষড়যন্ত্র করেছে, তাঁকে সরিয়ে দিবে। আমরা দুঃখভারাক্রান্ত চিত্তে বিদায় নিলাম তাঁর কাছ থেকে। বাড়িতে চলে গেলাম, এই আমাদের শেষ দেখা।”

পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা ছিলো বঙ্গবন্ধুর।

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, “বিকালের দিকে একের পর এক আসতেন। প্রথমে আসলেন শিক্ষামন্ত্রী জাফর আহমেদ চৌধুরী। পরের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যাবেন এবং কি কি আলোচনা হবে এই বিষয়ে আলোচনা হল। সন্ধ্যার আগে আগে আসলেন প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী এবং রাজিয়া মতিন চৌধুরী। তাদের সঙ্গে বেশ বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, এমনকি দুপুরে রাজিয়া চৌধুরী কি রান্না করবেন, বঙ্গবন্ধুর কি রান্না খাওয়ার শখ আছে।”

গণভবনের প্রকৃতি আর লেকের মাছের সাথে সখ্য ছিলো বঙ্গবন্ধুর। খুব কাছ থেকেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানলেও কেউ তাকে হত্যা করতে পারবে তা একবারের জন্যও ভাবেননি জাতির পিতা।

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আরও বলেন, “মোশতাক সাহেব আপনাকে কোপ দেওয়ার চেষ্টা করতেছে। উনি বললেন, ওই পুঁচকে কি করবে? চেষ্টা করতাছে কিছুই হবে না। তিনি সরলমনা ছিলেন, কূটকৌশল হওয়া দরকার এটা তাঁর মধ্যে ছিল না।”

রাজনৈতিক সহকর্মীতো বটেই সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতিও বঙ্গবন্ধুর ছিলো অগাধ বিশ্বাস। সবাইকে নিয়েই দেশটাকে গড়তে চেয়েছিলেন নিবিড় মমতায়। কিন্তু হায়- যে বাঙালিকে তিনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবেসেছেন সেই বাঙালিই হত্যা করলো তার পিতাকে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি