কোরবানির ঈদ, প্রস্তুতি নিয়েছেন তো?

পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ সামনে। মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। ঈদে ধর্মীয় বিধান পালনের পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক পরিসরে আনন্দ ভাগাভাগির উৎসবও বটে। আর তাই কোরবানির ঈদ ঘিরে প্রস্তুতির চাপও বেড়েছে ঘরে বাইরে।

ঈদের দিন সুষ্ঠুভাবে কাটাতে চাইলে এখন থেকেই নিতে হবে ঘরোয়া প্রস্তুতি। কারণ ঈদের দিনে কোরবানি, মাংস প্রসেসিং, সংরক্ষণ ও অতিথি আপ্যায়ন সব মিলিয়ে সময় ও পরিশ্রমের চাপ থাকে দ্বিগুণ।

ঈদের আগে ঘরের প্রস্তুতি ও বাজার সদাই—সবকিছু সময়মতো না করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বিশেষ করে ফ্রিজ ও ফ্রিজার প্রস্তুতি, রান্নাঘরের উপকরণ সংগ্রহ এবং পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় অবহেলা হলে ঈদের আনন্দ বিষাদে রূপ নিতে পারে।

মাংস সংরক্ষণ: ফ্রিজার খালি করে পরিষ্কার করে ফেলতে বলা হচ্ছে এখনই। জীবাণুমুক্ত করার জন্য লেবু বা বেকিং সোডার ব্যবহার কার্যকর। সঙ্গে জিপলক ব্যাগ, পলিথিন বা প্লাস্টিক বক্স সংগ্রহ করে রাখাও জরুরি।

রান্নাঘরের প্রস্তুতি: ঈদের সবচেয়ে ব্যস্ত স্থান রান্নাঘর। তাই ছুরি, বটি, কড়াই, হাঁড়ি, ফ্রাইং প্যান থেকে শুরু করে মসলা, আদা, রসুন, পেঁয়াজের স্টক আগেভাগেই গুছিয়ে রাখা উচিত। প্রেসার কুকার বা ব্লেন্ডার ঠিকভাবে কাজ করছে কি না, তাও দেখে নিতে হবে।

পরিচ্ছন্নতা: ঈদের আগেই ঘর, রান্নাঘর, ফ্লোর, বাথরুম, দরজা-জানালা, পর্দা ও ফার্নিচার ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন গৃহিণীরা। মাংস কাটার জায়গা পরিষ্কার রাখার জন্য অতিরিক্ত পলিথিন রাখার পরামর্শও দিয়েছেন অনেকেই।

বাজারের প্রস্তুতি: ঈদের পোলাওয়ের চাল, সেমাই, নানারকম মসলা ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য এখনই তালিকা করে কিনে নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। বাজারের ভিড় ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা মাথায় রেখে আগেভাগেই কেনাকাটা সম্পন্ন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

অতিথি আপ্যায়ন: আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের জন্য অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতিও নিতে হবে আগে থেকেই। ঘরের বসার জায়গা পরিষ্কার ও সাজানো রাখা, পর্দা বা বিছানার চাদর ধোয়া বা নতুন করে নেওয়ার প্রস্তুতিও নিতে দেখা যাচ্ছে অনেক পরিবারকে।

কোরবানির ঈদ শুধু কোরবানির মাংস কাটা বা বিতরণ নয়—এটি একটি সামগ্রিক প্রস্তুতির উৎসব। যারা আগেভাগেই কাজ গুছিয়ে নেয়, তাদের জন্য ঈদের দিনটা হয় আনন্দময়। আর যাদের প্রস্তুতি থাকে না, তাদের জন্য তা হয়ে ওঠে দুশ্চিন্তার উৎস।

এদিকে শহরের বাজারগুলোতেও ঈদ উপলক্ষে বাড়ছে ভিড়। অনেকে এরই মধ্যে সেমাই, মসলা, জিপলক ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে শুরু করেছেন। ফ্রিজ ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স দোকানগুলোতেও বাড়ছে খুচরা বিক্রি।

ঈদুল আজহার আর মাত্র কিছুদিন বাকি। তাই এখন থেকেই ঘর গোছানো, রান্নার প্রস্তুতি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও বাজার সদাইয়ের কাজ গুছিয়ে ফেললে ঈদের দিনটা হবে অনেক বেশি সুশৃঙ্খল ও আনন্দময়—এটাই প্রত্যাশা সবার।

এমবি//