ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

জীবন বদলের ৪০টি হাদিস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩১, ১ নভেম্বর ২০২৩

কঠোর পরিশ্রমই উত্তম পুরস্কার আনে। আল্লাহ যখন কারো মঙ্গল চান, তখন তাকে পরীক্ষায় ফেলেন। যে ব্যক্তি ইতিবাচকভাবে বিষয়টি গ্রহণ করে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হন (সে বিজয়ী হয়)। আর যে বিরক্তি ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্ট হন (সে ব্যর্থ হয়)। অর্থাৎ, জীবনে ব্যর্থতার বড় কারণ হচ্ছে সমস্যা এলে বিরক্ত হওয়া ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা। কারণ এগুলো মানুষকে সমস্যার ভেতর থেকে নতুন সুযোগ বের করে আনার বদলে তাকে হতাশায় নিমজ্জিত করে। হতাশা বা বিরক্তি নয় ভালো কাজে লেগে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর ভালো কাজ শুধু নিজের জন্য নয়, বরং অন্যের জন্য ভালো কাজই প্রকৃত ভালো কাজ। যার প্রতিদান স্রষ্টা দিবেন। তাই এ সময়ে ধৈর্য ধারণ করা এবং অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসা দরকার।

মানব জীবনে যে কোন সমস্যা সমাধানে হাদিসগুলো আপনাকে আলোর পথ দেখাবে। তাই জীবন বদলের এই ৪০টি হাদিসগুলো হতে পারে আপনার সফল জীবনের
পাথেয়।   

১. তোমাদের পরস্পরের প্রতি সাতটি দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে—১. কারো সাথে তোমার দেখা হলে তাকে আগে সালাম দেবে। ২. কেউ তোমাকে দাওয়াত দিলে তা কবুল করবে। ৩. কেউ পরামর্শ চাইলে সৎ-পরামর্শ দেবে। ৪. ওয়াদা করলে তা পালন করবে। ৫. হাঁচি দিয়ে কেউ ‘আলহামদুলিল্লাহ’ (অর্থাৎ সকল প্রশংসা আল্লাহর) বললে তুমি জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ (অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে রহম করুন) বলবে। ৬. অসুস্থ হলে দেখতে যাবে। ৭. মারা গেলে জানাজায় শরিক হবে। 
-আবু হুরায়রা (রা); বারা ইবনে আজিব (রা); বোখারী, মুসলিম।

২. নবীজী (স) আমাকে নয়টি উপদেশ দেন—১. আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করবে না। ২. ফরজ নামাজ আদায়ে গাফেলতি করবে না। ৩. কোনো অবস্থাতেই মদ বা মাদক গ্রহণ করবে না। মদ বা মাদক সকল পাপের চাবি। ৪. পিতামাতাকে মান্য করবে। ৫. শাসকদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হবে না। ৬. নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও জেহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যাবে না। ৭. পরিবারের জন্যে তোমার সম্পদের উত্তম অংশ ব্যয় করবে। ৮. পরিবারের সদস্যদের শুদ্ধাচারী করার প্রচেষ্টায় দৃঢ় হতে দ্বিধা করবে না। ৯. পরিবারের সদস্যদের আল্লাহ-সচেতন হিসেবে গড়ে তুলবে।
-আবু দারদা (রা); মুফরাদ (বোখারী)

৩. তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতে যাবে—১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, যে তার সাধ্যমতো কল্যাণ কাজ করে। ২. হৃদয়বান মানুষ, যার সমমর্মিতার ছোঁয়া পায় আত্মীয় থেকে শুরু করে চারপাশের সবাই। ৩. এমন ধর্মপরায়ণ মানুষ, সংসারী হয়েও যে সংযমী।
-আয়াজ ইবনে হিমার (রা); মুসলিম

৪. ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওজু করে (বিছানায় ডান কাতে শুয়ে) তুমি দোয়া করবে : ‘হে আল্লাহ! তোমার কাছেই আমি নিজেকে সমর্পণ করছি। আমার পুরো মন সঁপে দিচ্ছি তোমার স্মরণে। আমার সবকিছু সোপর্দ করছি তোমার হেফাজতে। ভালবাসা ও শঙ্কা সহকারে আশ্রয় গ্রহণ করছি তোমার পবিত্র সত্তার কাছে। তোমার দয়া ছাড়া আমার কোনো নিরাপত্তা নেই। তোমার আজাব থেকে একমাত্র তুমিই মুক্তি দিতে পারো। আমি বিশ্বাস করি তোমার কিতাবে, তোমার রসুলে।’
এই দোয়া পড়ে তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। যদি রাতে তুমি মারা যাও, তবে বিশ্বাসী হিসেবে মারা যাবে। আর সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠলে কল্যাণ তোমার জন্যে অপেক্ষা করবে।
-বারা ইবনে আজিব (রা); বোখারী, মুসলিম

৫. খাবার গ্রহণ করার পর তুমি বলো, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর। তিনি আমাকে খাওয়ালেন। আমাকে রিজিক দিলেন, যা (শুধু) আমার প্রয়াস ও ক্ষমতায় সম্ভব ছিল না। সবটাই তাঁর দয়া।’ তোমার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
-মুয়াজ ইবনে আনাস (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী

৬. মজলুমের অভিশাপে অভিশপ্ত হয়ো না। মজলুমের প্রার্থনা সরাসরি আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়। আর আল্লাহ কারো ওপর অত্যাচার অনুমোদন করেন না।
-আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); মেশকাত

৭. বিশ্বাস বা ঈমানের পর তোমার প্রতি স্রষ্টার সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা।
-আবু বকর সিদ্দীক (রা); আহমদ

৮. আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যখন কেউ আপন ভাই বা কোনো অসুস্থ মানুষকে দেখতে যায়, তখন একজন ঘোষক তাকে বলে, ‘তুমি আনন্দিত হও, তোমার যাত্রা শুভ হোক, জান্নাতে তোমার মর্যাদা সুউচ্চ হোক’।
-আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী, ইবনে মাজাহ, আহমদ

৯. যারা সৎ কাজের কথা বলে কিন্তু নিজেরা তা করে না, আর খারাপ কাজ করা থেকে অন্যদের বিরত থাকতে বলে কিন্তু নিজেরা সেই খারাপ কাজ করে, আখেরাতে তাদের শাস্তি হবে কঠিন।
-উসামা ইবনে জায়েদ (রা); বোখারী, মুসলিম

১০. নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখো, আল্লাহর রাগ থেকে তুমি সুরক্ষিত থাকবে।
-আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা); আহমদ

১১. মহাবিচার দিবসে তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই তার প্রতিপালক কথা বলবেন। এই কথাবার্তায় কোনো দোভাষী থাকবে না। যখন ডানে তাকাবে, তুমি তখন তোমার অতীত ভালো কাজ দেখতে পাবে। বামে তাকালে তুমি তোমার অতীত মন্দ কাজ দেখবে। আর সামনে দেখবে জাহান্নামের লেলিহান আগুন। তাই সময় থাকতে, এমনকি এক টুকরা খেজুর দান করে হলেও নিজেকে বাঁচাও। আর তা-ও যদি না পারো, তবে হাসিমুখে কথা বলে, ভালো কথা বলে ও ভালো ব্যবহার করে নিজেকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।
-আদী ইবনে হাতিম (রা); বোখারী, মুসলিম

১২. তোমরা রোগ নিরাময়ের জন্যে সাদাকা দাও।
-জামে উস-সগীর

১৩. প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হন। একজন (সকালে যে দান করেছে এমন) দাতার জন্যে প্রার্থনা করেন : ‘হে আল্লাহ! দাতাকে সর্বোত্তম পুরস্কার দান করো।’ আর অন্যজন (দান করা থেকে বিরত কৃপণের জন্যে) প্রার্থনা করে : ‘হে আল্লাহ! কৃপণের ধন বিনষ্ট করো।’
-আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

১৪. পানি যেভাবে আগুনকে নিভিয়ে ফেলে, দানও তেমনি পাপমোচন করে।
-আনাস ইবনে মালেক (রা), মুয়াজ ইবনে জাবল (রা); তিরমিজী, ইবনে মাজাহ

১৫. সাতটি কাজের নেকি একজন মানুষ তার মৃত্যুর পরও পেতে থাকবে। ১. জ্ঞানাগার (অর্থাৎ বই বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান), ২. খাল খনন, ৩. পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ৪. বৃক্ষরোপণ, ৫. মসজিদ নির্মাণ, ৬. কোরআনের কপি বিতরণ, ৭. নেক সন্তান, যে তার জন্যে দোয়া করবে। [সদকায়ে জারিয়ার ধারণা বাংলার মুসলমানদের অন্তরে এত বদ্ধমূল ছিল যে, ইংরেজরা বাংলা দখল করার আগে বাংলার এক-তৃতীয়াংশ স্থাবর সম্পদই ছিল ওয়াকফ সম্পত্তি। এই ওয়াকফ সম্পত্তি দিয়েই মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থা, এতিমখানা, মুসাফিরখানা ও সেবামূলক কাজ পরিচালিত হতো। ইংরেজরা বাংলা দখল করে প্রথমেই এই বিশাল ওয়াকফ সম্পত্তি গ্রাস করে। ফলে মুসলমানদের পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।]
-আনাস ইবনে মালেক (রা); বাজ্জার

১৬. কোনো মানুষ পাপ করে অনুতপ্ত হলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। আবারও পাপ করে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেন। আবারও যদি পাপ করে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তখনো ক্ষমা করে দেন। তুমি যদি অনুশোচনা ও ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে ক্লান্ত না হও, আল্লাহ কখনো ক্ষমা করতে ক্লান্তবোধ করেন না।
-উকবা ইবনে আমির (রা); তাবারানী

১৭. সকল সৃষ্টি হচ্ছে আল্লাহর পরিবার। আল্লাহর পরিবারের সাথে ভালো ব্যবহারকারী আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়।
-আনাস ইবনে মালেক (রা); আবু ইয়ালা, বায়হাকি

১৮. স্রষ্টার ইবাদত করা যেমন তোমার কর্তব্য, একইভাবে নিজের প্রতিও তোমার দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্ব রয়েছে পরিবারের প্রতি। তোমার কর্তব্য হচ্ছে—পরিবারের সকলের প্রতি তোমার দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করা।
-আবু জুহাইফা (রা); বোখারী

১৯. ধর্মপালনকে মানুষের জন্যে সহজ করো। একে মানুষের জন্যে কঠিন কোরো না। তাদের সুসংবাদ দাও। ভীতসন্ত্রস্ত করে ধর্ম থেকে তাদের দূরে সরে যাওয়ার কারণ হয়ো না।
-আনাস ইবনে মালেক (রা), বোখারি

২০. ঋণশোধ না হওয়া পর্যন্ত একজন বিশ্বাসীর আত্মা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রবেশপথে আটকে থাকবে।
-আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী

২১. সর্বোত্তম জীবন হচ্ছে সংগ্রামী জীবন। আল্লাহর পথে যে চলে অবিরাম। ন্যায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুহূর্তে। বিপদ বা শত্রুর মোকাবেলায় থাকে অগ্রভাগে। কামনা করে শহিদী মৃত্যু (যাতে সহযোদ্ধারা বেঁচে গিয়ে লাভ করতে পারে বিজয়ীর জীবন)। অথবা তার জীবন, যে চলে যায় কোনো পাহাড় চূড়ায় বা কোনো উপত্যকায়। কায়েম করে নামাজ, আদায় করে যাকাত, সদাচরণ করে মানুষের সাথে, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না কোনোভাবেই। আর আমৃত্যু নিবেদিত থাকে আল্লাহর
ইবাদতে।
-আবু সাঈদ খুদরী (রা), আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

২২. কোরআনে পাঁচ ধরনের আয়াত রয়েছে—১. হালাল (বৈধ)। ২. হারাম (অবৈধ)। ৩. মুহকামাত (সুস্পষ্ট বিধিবিধান)। ৪. মুতাশাবেহাত (রূপক)। ৫. কেসাস (উদাহরণ)। তোমরা হালালকে হালাল মানবে। হারাম থেকে দূরে থাকবে। আল্লাহর সুস্পষ্ট বিধিবিধান মোতাবেক কাজ করবে। মুতাশাবেহাত আয়াতেরওপর বিশ্বাস রাখবে (এ নিয়ে কোনো বিতর্কে যাবে না)। কেসাস  বা উদাহরণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে।
-আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

২৩. আল্লাহ বহু জাতির উত্থান ঘটাবেন কোরআনের মাধ্যমে। আবার (অনুসরণ না করার কারণে) বহু জাতির পতনের কারণও হবে কোরআন।
-ওমর ইবনে খাত্তাব (রা); মুসলিম

২৪. পৃথিবী বিশ্বাসীর জন্যে পরীক্ষাগার আর অবিশ্বাসীরা একেই মনে করে স্বর্গ।
-আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী

২৫.  যেদিন আমি তোমার কাছে তোমার বাবা-মা সন্তানসন্ততি এমনকি তোমার নিজের চেয়ে বেশি প্রিয় হবো, সেদিনই তুমি যথার্থ বিশ্বাসী হবে।
-আবু হুরায়রা (রা); বোখারী

২৬. অন্যায় ও পাপ দেখলে তোমার অন্তরে যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘৃণা সৃষ্টি না হয় এবং অবস্থার পরিবর্তন কামনা না করো তাহলে বুঝতে হবে তোমার অন্তরে একবিন্দু ঈমানও অবশিষ্ট নেই।
-আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা); মুসলিম

২৭. তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানুষ হচ্ছে : ১. যাকে দেখলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে। ২. যার কথা শুনলে বিশ্বাস জোরদার হয়। ৩. যার কাজ পরকালের জন্যে কাজ করার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়।
-আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা); হাকেম, আশকালানী

২৮. একজন বিশ্বাসীর তিনটি বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয় : ১. রাগে ফেটে পড়লেও কখনো অন্যায়ের আশ্রয় নেয় না। ২. আনন্দে ভেসে গেলেও সত্যের সীমা লঙ্ঘন করে না। ৩. ক্ষমতা-কর্তৃত্ব পেলেও অন্যের অধিকারকে অস্বীকার করে না।
-তাবারানী, মাজমাউস জাওয়াজিদ

২৯.‘হে আল্লাহর রসুল! আমাদের অন্তরে এমন সব প্রশ্ন, এমন সব কথা ঘুরপাক খেতে থাকে যা মুখে প্রকাশ করা কখনোই সম্ভব নয়। এমনকি কেউ দুনিয়ার সব সম্পদ দিতে চাইলেও তা প্রকাশ করতে পারব না। নবীজী (স) জিজ্ঞেস করলেন, সত্যিই কি তোমাদের অন্তরে এ ধরনের কথা আসে? তারা বললেন, জ্বি হাঁ।

তিনি বললেন, এটাই সত্যিকার বিশ্বাসের বৈশিষ্ট্য। আসলে বিশ্বাসীদের অন্তরেই শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় বেশি। কুমন্ত্রণার চাপে তারা বিরক্ত। বিশ্বাসীদের বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তরণের বৈশিষ্ট্যই এটা। অতএব চিন্তার কিছু নেই। অন্তরে কুমন্ত্রণা এলে বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে (আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রাজিম) আর কাজে মন দেবে। অথবা অন্তরে তেমন কোনো কুমন্ত্রণা অনুভব করলে তিন বার বলবে ‘আল্লাহ মহান!’
-আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা), আবু হুরায়রা (রা), আয়েশা (রা); মুফরাদ (বোখারী)

৩০. বিশ্বাসী ও বিশ্বাসের উপমা হচ্ছে খুঁটির সাথে বাঁধা ঘোড়া। ঘোড়া যে-দিকেই যাক, শেষ পর্যন্ত খুঁটির দিকেই ফিরে আসে। একইভাবে বিশ্বাসী ব্যক্তিও ভুল করতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে বিশ্বাসের দিকেই ফিরে আসে।
-আবু সাঈদ খুদরী (রা); বায়হাকি, আহমদ

৩১. কোনো বিশ্বাসীর পার্থিব কোনো কষ্ট দূর করলে মহাবিচার দিবসে আল্লাহ তার একটি বড় কষ্ট দূর করে দেবেন। কোনো অভাবীর অভাবের কষ্ট লাঘব করলে আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার কষ্ট লাঘব করবেন। অন্যের কোনো দোষ গোপন রাখলে আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। অন্যকে সাহায্য করলে আল্লাহও তাকে সাহায্য করা অব্যাহত রাখবেন।
-আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম

৩২. দুনিয়ার পেছনে ছুটো না, তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালবাসবেন। আর সাধারণ মানুষ যা নিয়ে মত্ত থাকে তা কামনা কোরো না, তাহলে তারা তোমাকে ভালবাসবে।
-সহল ইবনে সাদ (রা); ইবনে মাজাহ

৩৩. ‘হে আল্লাহর রসুল! জিকিরের মজলিসের পুরস্কার কী? নবীজী (স) বললেন, ‘জিকিরের মজলিসের পুরস্কার হচ্ছে জান্নাত।’
-আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা); আহমদ

৩৪. কেউ যদি প্রতিদিন একশত বার বলে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ (মহাপবিত্র আল্লাহ! সকল প্রশংসা শুধুই তাঁর), তাহলে তার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
-আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

৩৫. প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর যে ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ!’ (আল্লাহ মহাপবিত্র!), ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ!’ (সকল প্রশংসা আল্লাহর!) এবং ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবর!’ (আল্লাহ মহান!) পাঠ করবে, সে কখনো ব্যর্থ হবে না।
-কাব ইবনে উজরাহ (রা); মুসলিম

৩৬. যখন তোমরা প্রার্থনা করো, তখন প্রথমে আল্লাহ মহামহিমের মহিমা ঘোষণা করো। তারপর নবীর ওপর দরুদ পড়ো। তারপর ইচ্ছেমতো দোয়া করো।
-ফাদালা ইবনে ওবায়েদ (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী

৩৭. একজন বিশ্বাসী যখন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, তখন তিনি তা কবুল করেন। সে যা চায় তিনি তাকে তা দান করেন অথবা সমপরিমাণ বিপদ-মুসিবত-অকল্যাণ দূর করে দেন। অবশ্য সে যদি অন্যায় কিছু চায় বা কোনো আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করতে চায়, তাহলে ভিন্ন কথা।
-উবাদা ইবনে সামিত (রা); তিরমিজী

৩৮. নবীজী (স) রাতে বিছানায় শোয়ার আগে দুই হাত একত্র করে তালুতে ফুঁ দিতেন। তারপর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়ে হাত দুটি শরীরে বুলিয়ে নিতেন।
-আয়েশা (রা); বোখারী, মুসলিম

৩৯. নবীজী (স) আমাকে এই দোয়াটি শিক্ষা দেন : ‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়ারহামনি ওয়াহদিনী ওয়ারজুকনি’ (হে আল্লাহ! আমায় ক্ষমা করো! আমায় দয়া করো! আমায় হেদায়েত করো! আমায় রিজিক দান করো!)
-সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা); মুসলিম

৪০. বেশি বেশি দরুদ পড়ো। যত পারো দরুদে নিমগ্ন থাকো। তোমার সকল অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা ভেসে যাবে। তোমার গুনাহরাজি ক্ষমা পাবে। -উবাই ইবনে কাব (রা); তিরমিজী। 

সূত্র-হাদিসের বাংলা মর্মবাণী বই থেকে নেয়া। 
কেআই//
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি