ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

সাফল্যের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য

প্রকাশিত : ১৮:২২, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ১৮:২৩, ২৭ এপ্রিল ২০১৯

সাফল্যের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য বা অপেক্ষা। এ অপেক্ষা হাত-পা গুটিয়ে অসহায়ের মতো বসে থাকা নয়, এ অপেক্ষা ক্রমাগত প্রচেষ্টার। নীরবে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণের। অবিচল বিশ্বাসে নিরলস পরিশ্রম করার নামই ধৈর্য।
ধৈর্য প্রতিটি ব্যর্থতাকে সাফল্যের বীজে পরিণত করে। প্রতিকূলতাকে অনুকূলে, সমস্যাকে সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করে। ধৈর্য হচ্ছে যেকোন পরিস্থিতিকে হজম করার ক্ষমতা। ধৈর্য এমন এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মকৗশল যা সব প্রতিকূলতাকে ক্রমান্বয়ে নিস্ক্রিয় করে দেয়।
প্রতিটি ভালো বা মন্দ, অনুকূল বা প্রতিকূল পরিস্থিতি সহজ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করাই ইতিবাচকতা বা প্রো-একটিভিটি। ব্যর্থতা আছে বলেই সাফল্যের স্বাদ এত মিষ্টি। দুঃখের ভার আছে বলেই আনন্দ এতো হালকা লাগে। তাই সব সময় লক্ষ্যে অবিচল থাকুন । আপাত ব্যর্থতা যে কোন মূহুর্তে আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

জীবন বারবার শুরু করার আরেক নাম। কখনও, কোন অবস্থাতেই হালছাড়া যাবে না, থামা যাবে না, তাহলে অন্যরা এগিয়ে যাবে। বিজয় না আসা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
একটি শিশু জন্মের পর প্রথমে চিৎ হয়ে শুয়ে শুধু হাত পা নাড়ে। এক সময় সে কাত হয়, পরে উপুড় হয়। তারপর শুরু হয় হামাগুড়ি দিয়ে হাতে-পায়ে হাঁটা। এরপর সে উঠে দাঁড়ায়, হাঁটি হাঁটি পা পা করে। হাঁটতে গিয়ে সে বারবার পড়ে। আবার উঠে দাঁড়ায়, আবার হাঁটতে শুরু করে। এক সময় কারো সাহায্য ছাড়াই সে হাঁটে দৌড়ায়। ঠিক একইভাবে ক্রমাগত লেগে থাকতে হবে।
স্রষ্টা মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রমনির্ভর করে সৃষ্টি করেছেন। পরিবর্তনের জন্য আপনার যা আছে তা থেকেই শুরু করতে হবে। তাহলেই পারিপর্শ্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি স্রষ্টার রহমত পরিশ্রমকারীর ওপর বর্ষিত হবে। স্বপ্নের জন্য রক্ত যখন ঘাম হয়ে ঝরে, সেই নোনা পানিতে সাফল্যের বীজ অঙ্কুরিত হয়।

ধৈর্য সর্ম্পকে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‌‌‍‍‍‌“হে বিশ্বাসীগণ! ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গেই থাকেন। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনেককে ভয়, ক্ষুধা, জানমাল ও শ্রমের ফল বিনষ্ট করে আর্থাৎ বিপদ-আপদ দিয়ে পরীক্ষা করব। তবে এ বিপদের মধ্যে যারা ধৈর্যধারণ করে তাদের সুসংবাদ দাও। ধৈর্যশীলরা বিপদে পড়লে বলে, আমরা আল্লাহর। তাঁর কাছ থেকে এসেছি। তাঁর কাছেই ফিরে যাব।”

“আলাপ-আলোচনায় কেউ যদি আক্রমণাত্মক ভূমিকা নেয়, তবে তুমি শুধু সমপরিমাণ জবাব দিতে পারো, তবে (উত্তেজনা ও বিতর্ক পরিহার করে) ধৈর্যধারণ করাই শ্রেয়। ধৈর্যশীলদের জন্য রয়েছে কল্যাণ”।
“হে বিশ্বাসীগণ! প্রতিকূলতার মোকাবেলায় ধৈর্যশীল হও। পরস্পরের সঙ্গে সহনশীলতা ও ধৈর্যের প্রতিযোগিতা করো। সদাপ্রস্তুত থাক সত্য রক্ষায়, সত্য অনুসরণে। সব সময় আল্লাহ জন্য সচেতন থাকো। তাহলেই তোমরা লাভ করবে অনন্ত কল্যাণ।”
“জীবনে ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের পুরস্কার হিসেবে তারা জান্নাতে সুউচ্চ অবস্থানে উন্নীত হবে। সেখানে তাদের সালামসহকারে সাদর অভ্যর্থনা জানানো হবে। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। অবাসস্থল হিসেবে তা কতই না উত্তম”।

নিশ্চয়ই কষ্টের পর আনন্দ রয়েছে। কান্নার পর হাসি, অভাবের পর সচ্ছলতা আর ব্যর্থতার মাঝে লুকিয়ে থাকে সাফল্যের সম্ভাবনা। এ বাস্তব অনুভূতিগুলো আগে থেকে আঁচ করতে পারলেই মানুষের কখনও ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে না। সাফল্য আপনার পদচুম্বন করবে।


এসএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি