ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪

সারাদেশে প্রায় ৩০ লাখ মামলা বিচারাধীন: আইনমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪২, ২১ নভেম্বর ২০১৭

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমানে দেশের আদালতগুলোতে প্রায় ৩০ লাখ মামলা বিচারাধীন আছে। এ মামলার জট কমিয়ে আনা বিচার বিভাগ ও সরকারের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন,‘দেওয়ানি কার্যবিধি এবং অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির বিধান অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির সহায়ক আইন করা হয়েছে। বিচার বিভাগের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এবং শত বছরের পুরনো আইন ও বিধিগুলো সংস্কার করে বিচার ব্যবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

মঙ্গলবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের জুডিশিয়াল কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ১৩৭তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার জট কমিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে বিচারকদেরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘সরকার দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। কারণ, দুর্নীতি বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম শত্রু।’ সেজন্য দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার বিচারকালে বিচারকদের অত্যন্ত সজাগ এবং মামলার প্রতিটি পর্যায়ে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে আইনানুগ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি। তাছাড়া, বিচারপ্রার্থী জনগণ যাতে স্বল্প খরচে, স্বল্প সময়ে ন্যায়বিচার পান এবং আইনি প্রক্রিয়া বা আইনি ব্যবস্থার জটিলতা কিংবা মামলায় অযথা দীর্ঘসূত্রতার শিকার না হন, তাও নিশ্চিত করতে বলেন তিনি।

সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বিচারকরা প্রত্যেকেই স্বাধীন, একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় একজন বিচারক যদি সৎ, দক্ষ ও নিরপেক্ষ হন, তাহলে তার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে কোনও ভয় থাকবে না।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘বিচারকরা মামলার প্রতিটি পর্যায়ে সততা, দক্ষতা,নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে এবং বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বাড়বে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মানসম্মত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সৎ, নিষ্ঠাবান, দক্ষ ও মেধাবী বিচারক গড়ে তোলার কাজটি করে থাকে। তাই এটিকে একটি উন্নতমানের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য সরকার আন্তরিক।’ তিনি বলেন, ‘সরকার ইনস্টিটিউটটিকে বিচার বিভাগীয় শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। পাশাপাশি বিচারকদের বেতন-ভাতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং ভিশন ২০২১-এর লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য আইন মন্ত্রণালয় বিচার বিভাগকে সব ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের ৪২টি জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় নবনির্মিত ভবনে বিচারিক কাজ চলছে। জেলা জজ আদালতগুলোর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বিচারকদের আবাসন ও পরিবহন সমস্যা সমাধানেও সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। বিচারকদের অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপানে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তব্য রাখেন।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি