১ লাখ পরিবারকে অর্থসহায়তা দিচ্ছে ব্র্যাক

দেশের অতিদরিদ্র ও কর্মহীন এক লাখ পরিবারকে ১৫ কোটি টাকা অর্থসহায়তা দিচ্ছে ব্র্যাক। দুই সপ্তাহের খাবারের জন্য প্রতি পরিবার ১ হাজার ৫০০ টাকা করে পাবে। ব্র্যাকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়। 

গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দরিদ্র পরিবারগুলোকে নগদ এ অর্থসহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। ব্র্যাকের এ সহায়তা চার সদস্যের একটি পরিবারকে দুই সপ্তাহের জন্য ন্যূনতম খাদ্য উপকরণ কিনতে সাহায্য করবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক দূরত্ব ও লকডাউনের মতো পদেক্ষপ নেওয়ার কারণে জীবিকার ঝুঁকিতে পড়া দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য খাবার কেনার সহায়তা দিতে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ব্র্যাক। মহানগর ও নগর এলাকার বস্তি, উপশহর এবং দুর্গম এলাকার পরিবারগুলোর জন্য এ সহায়তা দেওয়া হবে। ১২টি সিটি করপোরেশন, আটটি পৌরসভা, ৩৮টি সদর উপজেলা, হাওড়, নদীবন্দর ও বাজারহাট এলাকা এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের পাড়াগুলোতে বসবাসকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলো এ সহায়তা পাবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্র্যাকের কর্মীবাহিনী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে। ব্র্যাকের চারটি উন্নয়ন কর্মসূচি, যথা আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, আলট্রা পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম, সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি এবং হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের মাধ্যমে এ সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে। 

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, কভিড-১৯ এমন এক মানবিক সংকট, যার একটি গুরুতর স্বাস্থ্যগত তাত্পর্য রয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর অর্থনীতিতে এ সংকটের মারাত্মক প্রভাবও বিদ্যমান। বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ দিনে ৫০০ টাকার বেশি উপার্জন করে। অধিকাংশ গ্রামের মানুষ শহর ও বিদেশ থেকে স্বজনদের পাঠানো অর্থের ওপর নির্ভর করে। এটা একটি বৈশ্বিক সংকট হওয়ার ফলে সারা পৃথিবীতে মানুষ কাজ হারাচ্ছে। এর ফলে আয় বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের জরুরি সহায়তার লক্ষ্য সেসব নিম্ন আয়ের পরিবার, যারা করোনা ভাইরাসের প্রকোপে আয়ের উৎস হারিয়েছে। আমরা এক লাখ পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছি। যদিও প্রয়োজন আরো অনেক বেশি পরিবারের। আমি তাই সহানুভূতিশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যেন তারাও এগিয়ে আসে। তাদের সাহায্যে আমরা আরো অনেক বিপন্ন পরিবারের কাছে পৌঁছাতে পারব।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, অর্থ প্রদানের এই কার্যক্রম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যাতে একই পরিবারের কাছে একাধিকবার সাহায্য না যায় এবং যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক অতিদরিদ্র পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়।

ব্র্যাক এরই মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশজুড়ে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এতে যুক্ত রয়েছে এর এক লাখেরও বেশি কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও স্বাস্থ্যকর্মী। আরো বেশিসংখ্যক অতিদরিদ্র পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি উদ্যোগও গ্রহণ করেছে ব্র্যাক, যার বিস্তারিত পাওয়া যাবে ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে: https://www.brac.net/covid19/donate/.

একে//