ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

ডায়েটে ত্বকের সমস্যা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪০, ২৬ মার্চ ২০২২

ওজন কমাতে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ঝুকছেন অনিয়ন্ত্রিত ডায়েটের দিকে। নিজেকে সুদর্শন দেখানোর জন্য অভিজ্ঞ ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ না নিয়ে, চটজলদি ফলের আশায় তারা নানা ধরনের চার্ট অনুসরণ শুরু করেন। আর এটিই হচ্ছে বিপদের কারণ।

চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মোটামুটি দৈনিক তিন হাজার কিলো ক্যালরি চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ক্র্যাশ ডায়েটে সেই চাহিদা ৮০০ কিলো ক্যালরিতে বেঁধে দেওয়া হয়। এর সরাসরি কুপ্রভাব দেখা যায় সেই ব্যক্তির ত্বক ও চুলে। আর এই ক্ষতি সম্পর্কে অনেক ক্ষেত্রেই ডায়েট অনুসরণকারীরা সচেতন থাকেন না।

যে কোনও সুষম ডায়েটে ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য থাকে। কিন্তু ডায়েটের আমূল পরিবর্তনে শরীরে এই উপাদানগুলোর ঘাটতি তৈরি হয়।

চলুন দেখে নেওয়া যাক অনিয়ন্ত্রিত ডায়েটের ফলে ত্বক এবং চুলে কী কী উপসর্গ দেখা যায়- 
ত্বক ও চুলের যে স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা থাকে, তা অনেকটাই কমে যায়। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। বেশি বয়সে ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কম বয়সে এমন ডায়েটের কারণে ত্বকের টানটান ভাব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বলিরেখাও দেখা দিতে পারে।

কারও ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ, কারও বা সাদা দাগ হতে পারে। ঠোঁট, হাতেও এমন স্পট দেখা যেতে পারে। ত্বকের জালিকা বা ক্যাপিলারি ফেটে রক্ত পড়তে পারে। শরীরে প্রোটিনের জোগান কমে যাওয়ায় চনমনে বা ফুরফুরে ভাব কমে যেতে পারে। কাজে অনীহা, ক্লান্তি দেখা দেয়।

ভিটামিন এ-র অভাবে রাইনোডার্মা বা টোড স্কিন হতে পারে। এতে ব্যক্তির হাত-পায়ে পদ্মকাঁটার মতো দেখা যায়। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বা রাইবোফ্লেভিনের অভাবে ঠোঁট লাল হয়ে থাকে, ঠোঁটের কোণ ফেটে যায়।

ভিটামিন বি টুয়েলভের অভাবে হাতের আঙুলগুলো কালো হয়ে যায়। ঠোঁটের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে গিয়ে শুষ্ক হয়ে যায়।

ভিটামিন সি-এর অভাবে হাত-পায়ে ছোপ পড়তে পারে। ত্বক ফেটে রক্ত পড়তে পারে। হাত-পায়ের তালুতে লাল ছোপ ছোপ দেখা যায়।

ভিটামিন বি সিক্স-এর অভাবে ঠোঁটের কোণে ঘা, জিভ লাল হয়ে যায়। ভিটামিনের অভাবেই জিভের ক্যাপিলাগুলো বড় হয়ে যায়। নখের গ্রোথ কমে যায়। নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়। কারও নখে গর্ত বা দাগের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

চুলের সমস্যা-
ক্র্যাশ ডায়েটের কারণে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি হয়। যার ফলে চুলের ঔজ্জ্বল্যও কমতে থাকে। চুল খুব ভঙ্গুর হয়ে যায়। ঘুম থেকে উঠে বালিশে বা স্নানের সময়ে অস্বাভাবিক পরিমাণে চুল পড়ে যাওয়া এমন ডায়েটের কারণে হতে পারে।

চুল শুষ্ক হয়ে যায়। চুলের স্বাভাবিক রঙেরও পরিবর্তন দেখা যায়। হাত দিয়ে টানলেই চুল পড়ে যাওয়া এই সমস্যার একটি উপসর্গ।

চলুন দেখে নেওয়া যাক এর চিকিৎসা
মাল্টি-ভিটামিন ট্যাবলেট দিয়ে এই ভিটামিনগুলোর ঘাটতি পূরণ করা হয়। কখনও বা ভিটামিনের ঘাটতি গুরুতর হলে, ভিটামিন বি-টুয়েলভ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। এই চিকিৎসা কয়েক মাস পর্যন্ত চালানো জরুরি।

ত্বক এবং চুলের শুষ্কতা দূর করার জন্য ময়শ্চারাইজ়ার দেওয়া হয়। পিগমেনটেশন দূর করার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগের কারণ নির্মূল না করলে ত্বকের সমস্যা মিটবে না। অভিজ্ঞ ডায়াটিশিয়ান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হবে।
সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন
আরএমএ/ এসএ/


 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি