ঢাকা, রবিবার   ০৫ মে ২০২৪

বিয়ের আগে যে পরীক্ষাটি জরুরি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:২৭, ৭ মে ২০১৮

থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। পিতা মাতা উভয়েই যদি এই রোগের বাহক হন, তাহলে গড়ে তাদের প্রতি ৪ সন্তানের একজন এই রোগের রোগী হতে পারে। বাহক কখনোই রোগে ভুগেন না। সাধারণ জীবন যাপন করেন। পিতা মাতা খুব বেশি সৌভাগ্যবান হলে তারা উভয়ে বাহক হওয়া সত্ত্বেও সন্তানেরা স্বাভাবিক বা বাহক হতে পারে। আর বাহক পিতা মাতা হতভাগা হলে এমনকি তাদের সব সন্তান কাকতালীয়ভাবে রোগী হতে পারেন।

পিতা মাতার যে কোনো একজন শুধু বাহক হলে সন্তানেরা কখনোই রোগী হবেন না। কিন্তু পিতা মাতা উভয়ে বাহক হলে সব ধরণের দুশ্চিন্তার কারণ। কারণ সে ক্ষেত্রে সন্তানদের কেউ কেউ রোগী হতে পারে। autosomal recessive ধরনের রোগ সাধারণত আত্মীয়দের মাঝে বিয়ে হলে হয়। কিন্তু একটি সমাজে এর বাহকের সংখ্যা বেড়ে গেলে তখন আত্মীয়র বাইরে বিয়ে হলেও এ রোগ হতে পারে। জানা যাচ্ছে আমাদের দেশে এই রোগের বাহক এবং তার ফলশ্রুতিতে রোগীর সংখ্যা বাড়তেছে! ফলে এখন থেকেই সাবধানতা জরুরি ।

যখন কেউ রোগী হন তখন সেই রোগটার নাম বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর। আর বাহক হলে সেই অবস্থাটার নাম বিটা থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট বা বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর।

এ রোগ হলে রোগীকে সারা জীবন অন্যদের থেকে রক্ত গ্রহণ করে টিকে থাকতে হয়। এ ধরনের রোগীরা পিতামাতার বোঝা হয়ে গড়ে ২৫-৩০ বছর বেঁচে থাকে। আর রক্ত গ্রহণের থাকে নানাবিধ ঝামেলা। শরীরে আয়রন এর পরিমাণ বেড়ে গিয়ে হৃদপিণ্ড লিভার গিরার রোগ হতে পারে। দাতার শরীর থেকে বিভিন্ন প্রাণঘাতী জীবাণু ঢুকতে পারে রোগীর শরীরে ।

এছাড়াও নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের আছে আরও বহু জটিলতা। একদিকে থ্যালাসেমিয়া অন্যদিকে সেটার চিকিৎসার কারণে নতুন করে অন্যান্য অঙ্গের রোগ! কত কষ্ট! কত কষ্টের জীবন! অথবা রোগীকে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়। সেটা করতে গিয়েও থাকে নানাবিধ নতুন রোগের ঝুঁকি ।

কিন্তু এসব ঝুঁকি এড়ানোর একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীর হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস করানো। মূল্য আনুমানিক এক হাজার টাকা। এ পরীক্ষা করে কেউ যদি দেখেন যে, তিনি একজন বাহক; তাহলে তিনি যেন কোনো অবস্থাতেই অন্য একজন বাহক বা রোগীকে বিয়ে না করেন। করলে কিন্তু সেই দুশ্চিন্তায় পেয়ে বসবে। সন্তানদের কেউ কেউ রোগী হতে পারে। সেটা হলে সারা জীবন সেই সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়াতে হবে। অথবা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট এর মতো জটিল চিকিৎসা করাতে হবে।

আর যারা রোগী, তারা তো ছোটকাল থেকেই রোগী। তারা তো বেঁচেই থাকে ২৫- ৩০ বছর! সে কারণে তাদের বিয়ের প্রশ্নটি এমনিতেই অবাস্তব!

তাই বিয়ের আগে নিজের ভালোর জন্যই হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস এবং রক্তগ্রুপ পরীক্ষা করুণ এবং চিকিৎসককে সেটার ফলাফল দেখান। এতে আপনরাই উপকার হবে।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি