ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

ফুলকপি ক্যালসিয়াম ও আয়রনে ভরপুর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫০, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৪:৫৬, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯

জনপ্রিয় শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি অন্যতম। বহুমুখী পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজিটি রান্না করে, সেদ্ধ বা কাঁচাও খাওয়া যায়। এতে আছে গরুর দুধের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম। এটির পাতার উপরিভাগে ক্যান্সার নিরোধক উপাদান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মলাশয় ক্যান্সার আক্রান্তের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সক্ষম ফুলকপি। 

কচুশাকের চেয়ে প্রায় তিন গুণ, লালশাকের চেয়ে দ্বিগুণ এবং কলমিশাকের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি ক্যালসিয়াম রয়েছে ফুলকপিতে। আর আয়রন আছে কলমিশাকের চেয়ে ১০ গুণ, মুলাশাকের চেয়ে ১২ গুণ ও পালংশাকের পাঁচ গুণ বেশি। এছাড়া পরিমাণ আলু, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, চিচিঙ্গা ও ঝিঙ্গার চেয়ে বেশি আয়রন রয়েছে ফুলকপিতে।

ফুলকপিতে আছে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ক্যালসিয়াম, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য ফাইটোকেমিক্যাল।  এতে ৮৫% পানি, অল্প পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন রয়েছে। নানাগুণে গুণান্বিত এই সবজি রোগ প্রতিরোধক হিসেবে দারুণ উপকারী।এতে থাকা ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

এবার জেনে নিন পুষ্টিগুণে ভরপুর ফুলকপি খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়...

ক্যান্সার প্রতিরোধক
ক্যান্সারের জীবাণুকে দেহ থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ফুলকপির কোন জুডি নেই। ফুলকপিতে থাকা সালফোরাফেন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করতে পারে এবং টিউমারের বৃদ্ধিকে বাঁধা দেয়। স্তন ক্যানসার, কোলন ও মূত্রথলির ক্যান্সারের জীবাণুকে ধ্বংস করে এই সবজি।

ফুসফুসকে রক্ষা করে
ফুলকপি আমাদের ফুসফুসকে অনেক জটিল রোগ থেকে রক্ষা করে। ফুলকপি ফুসফুসের রোগের জন্য দায়ী জীবাণুকে প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এছাড়া ফুলকপি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তাই ফুসফুস ভালো রাখতে বেশি বেশি ফুলকপি খেতে পারেন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
ফুলকপির সালফোরাফেন উপাদান উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং কিডনি সুস্থ রাখে। এছাড়া ধমনীর ভেতরে প্রদাহ রোধে ফুলকপি সাহায্য করে। যারা উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা খাবারের তালিকায় ফুলকপি রাখতে ভুলবেন না।

মস্তিষ্ক ভালো রাখে
ফুলকপিতে বিদ্যমান ভিটামিন বি এবং কোলিন উপাদান মস্তিষ্ক ভালো রাখতে দারুন কার্যকরী। গর্ভাবস্থায় এ সবজি একটি ভালো খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। গর্ভবতী মায়েরা নিয়ম করে ফুলকপি খেলে, নবজাতকের মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ বিকাশ সাধন হবে।

ওজন কমতে সাহায্য করে
কম ক্যালরির খাবার হিসেবে ফুলকপি আদর্শ একটি খাবার। ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে এবং খুবই কম ক্যালোরি ও ফ্যাট থাকে যা ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। ফুলকপি শরীরের বাড়তি মেদ কমিয়ে শরীরকে একটি সুন্দর গঠনে আনতে সাহায্য করে। যারা শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তিত তারা নির্দ্বিধায় খেতে পারেন ফুলকপি।

হজমের সহায়ক
ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বা খাদ্য আঁশ যা খাদ্য হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।  এছাড়া ফুলকপির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সালফার-জাতীয় উপাদান খাবার হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।

চোখের যত্নে ফুলকপি
ফুলকপি চোখকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। ফুলকপিতে ভিটামিন এ-এর পরিমাণ বেশি থাকায় চোখের যত্নে ফুলকপির কোন তুলনা হয় না। তাই চোখকে সুস্থ আর সুন্দর রাখতে বেশি বেশি ফুলকপি খাবেন।

শরীরকে বিষমুক্ত করে এবং প্রদাহ কমায়
ফুলকপির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরকে বিষমুক্ত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে গ্লুকোসিনোলেটস থাকে যা শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ফুলকপিতে ইন্ডোল-৩-কার্বিনোল থাকে যা শরীরকে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ থেকে রক্ষা করে।

নিয়মিত ফুলকপি খেলে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। তাছাড়া ফুলকপির অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতির হাত থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়, বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং টিস্যু ও অঙ্গের ক্ষতি হওয়া প্রতিহত করে।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি