সামরিক শক্তিতে মুসলিম বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে পাকিস্তান
প্রকাশিত : ১৮:১৭, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

দুই-তিন শতাব্দী আগেও মুসলিমরাই ছিল বিশ্ব রাজনীতির নিয়ন্ত্রক। অটোমান সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে মুঘল, আব্বাসীয়, ফাতেমীয়, এক সময় মুসলিম শাসকরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে। যদিও আজকের বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন, বিশ্ব রাজনীতিতে মুসলিম দেশগুলোর প্রভাব অনেকটাই কমে গেছে। তবুও সামরিক শক্তির দিক দিয়ে এখনো কিছু দেশ টিকে রয়েছে প্রতিযোগিতায়।
সামরিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক রাষ্ট্র হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। তালিকায় পাকিস্তানের আগে রয়েছে শুধু তুরস্ক। তবে অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় পাকিস্তানের অবস্থান অনেকটাই স্বতন্ত্র, কারণ এটি মুসলিম বিশ্বের মধ্যে একমাত্র দেশ যার হাতে রয়েছে পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, মুসলিম বিশ্বের মধ্যে তুরস্ক, পাকিস্তান, ইরান ও সৌদি আরব সামরিক ক্ষেত্রে বেশ অগ্রসর। এই দেশগুলো শুধু নিজেদের নিরাপত্তাই নিশ্চিত করছে না, বরং বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখারও চেষ্টা করছে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশ তুরস্ক। সামরিক শক্তিতে বিশ্বের শীর্ষ ১৪৫টি দেশের তালিকায় তুরস্কের অবস্থান নবম। অর্থাৎ বিশ্বের নয় নম্বর শক্তিশালী দেশ তুরস্ক। তুরস্কের পর মুসলিম বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় শক্তিশালী দেশ পাকিস্তান। পাকিস্তান বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ১২তম অবস্থানে রয়েছে। পাকিস্তানের রয়েছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন সব মিসাইল ও পরমাণু বোমার মতো বিধ্বংসী অস্ত্র। এছাড়া পাকিস্তান ‘জেএফ-১৭ থান্ডার’ নামে উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমানও উৎপাদন করছে।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সামরিক শক্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে দেশটির অবস্থান ১৩তম। এর পর রয়েছে ইরানের অবস্থান। অর্থাৎ ইরান মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ৪র্থ শক্তিশালী দেশ। তবে ইরান তার প্রায় সব ধরনের অস্ত্র এখন নিজেরাই উৎপাদন করে থাকে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় দেশটির অর্থনীতি সবসময় বড় ধরনের চাপের মধ্যে থেকেছে। তার পরেও ইরান চেষ্টা করে যাচ্ছে এসব নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করে স্বনির্ভর হয়ে দাঁড়াতে। এমনকি ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রয়োজনীয় সক্ষমতাও অর্জন করে ফেলেছে। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ইরানের অবস্থান ১৬তম।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তালিকা অনুযায়ী, ইরানের পর শক্তিশালী মুসলিম দেশ মিসর। মিসর আফ্রিকার মধ্যে সামরিকভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। এটি সৌদি আরবের প্রতিবেশী এবং মধ্যপ্রাচ্যের আওতাভুক্ত। মিসরের পরে শক্তিশালী মুসলিম দেশ সৌদি আরব। অর্থাৎ মক্কা-মদিনার দেশ সামরিক শক্তিতে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ৬ষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে।
মুসলিম বিশ্বের সপ্তম শক্তিশালী দেশ আফ্রিকার রাষ্ট্র আলজেরিয়া। আর অষ্টম অবস্থান নাইজেরিয়ার। এর পরেই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ৩৫তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ৯ম শক্তিশালী দেশ। আর সবশেষ ১০ম অবস্থানে রয়েছে মালয়েশিয়া। অর্থাৎ মালয়েশিয়া মুসলিম বিশ্বের দশম শক্তিশালী দেশ।
এমবি//
আরও পড়ুন