ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

অর্থনৈতিক মুক্তির দিশারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

এস এম পারভেজ তমাল

প্রকাশিত : ১৭:০১, ২৯ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১৭:০৯, ২৯ জুলাই ২০২১

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে যে ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক ভাষণটি দিয়েছিলেন সে ভাষণের অন্তরনিহিত তাৎপর্য ছিল পশ্চিম পাকিস্থানের শোষকগোষ্ঠী থেকে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষকে মুক্ত করা। বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনা সংবলিত এই ভাষণে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়াও সর্ম্পূণরুপে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেছিল। পৃথিবীর সব রাষ্ট্রনায়ক, জননেতাই স্বদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা ভাবেন এবং সেটা বাস্তবায়নে নিজেকে সচেষ্ট রাখেন। আর তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তার মুক্তির চিন্তা থেকেই বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন।

গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের মুক্তির লক্ষ্যেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবনের শুরু থেকেই আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। এই বাংলার মানুষের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অভাব-শোষণ-বঞ্চনা, দুমুঠো ভাতের জন্য কান্না, অসহায় মানুষের আর্তনাদই তাকে স্বাধীনতাকামী করতে উৎসাহিত করেছে। একটি প্রবৃদ্ধি সহায়ক অর্থনীতি প্রণয়ন করে, অর্থনীতিতেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এই কিংবদন্তি। কিন্তু ঘাতকের নিষ্ঠুরতায় অকালেই থমকে গেছে তাঁর সেই স্বপ্ন। তবে বর্তমান সরকার জাতির জনকের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে একাগ্রচিত্তে কাজ করে চলেছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে, শহরের পাশাপাশি গ্রামের কৃষক, শ্রমিক, জেলে, কামার, কুমারসহ সকলকে পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে জনগনের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি তার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। তাঁর সেই অর্থনীতিক উন্নয়নের ভাবনার গতিকে ধারণ করে বর্তমান সরকার যে ধরনের মৌলিক ব্যবস্থাপনা গ্রহন করেছে, তারই প্রতিফলন বর্তমানে গ্রাম বাংলায় অর্থনৈতিক মুক্তি। তাই বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন বলতে আজ আমরা এ দেশের দুঃখী মানুষের জীবনমানের উন্নতিকেই বেশি করে বুঝে থাকি।

বঙ্গবন্ধু রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার বহু আগে থেকেই এ দেশের শোষিত মানুষের কথা ভাবতেন। ১৯৭২ সালের ৯ই মে রাজশাহী মাদ্রাসায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি জীবনে প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী হবার জন্যে রাজনীতি করিনি। একদিকে ছিল আমার প্রধানমন্ত্রীর সিংহাসন আর একদিকে ছিল আমার ফাঁসির ঘর। আমি বাংলার জনগণকে মাথা নত করতে দিতে পারি না বলেই ফাঁসিরকাষ্ঠ বেছে নিয়েছিলাম।” তাই তার জীবনের শুরু থেকেই তিনি তার ব্যক্তিস্বত্ত্বায় ধারণ করেছেন, সাধারণ মানুষ ও তাদের কল্যাণ। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার কথা বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতিতে তাই তিনি যুক্ত করেছিলেন। তাঁর রাষ্ট্রীয়তন্ত্রে কৃষক, শ্রমিক ও জ্ঞানী মানুষের প্রাধান্য লক্ষ করার মতো ছিল। গণতান্ত্রিক-মনা বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে তাই “গণতন্ত্র” অতীব গুরুত্ব পেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি, সমৃদ্ধশালী একটি জাতি গঠনে রেখে গেছেন দারিদ্র্য মুক্তির পথ নির্দেশনা। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নির্ভীক। 

বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় সহায়তায় এ দেশের দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। তিনি কৃষির আধুনিকায়ন, শিল্প বিকাশে নয়া উদ্যোগ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রদান, ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার, সমবায় চেতনা বিকাশ ও সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেছেন। নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় নিয়ে এসেছিলেন তিনি। মানসম্পন্ন শিক্ষা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, নারী জাগরণ কর্মসূচি এবং সরকারি সেবাকে সাধারণ জনগণের দ্বারগোড়ায় পৌঁছে দেয়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল ভাবনা। ভবিষ্যৎ বিকাশের রেখা পরিস্ফুটিত হয় উন্নয়ন ভাবনার দর্শনে, যা বঙ্গবন্ধু আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন।

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে এ দেশের বেশিরভাগ মানুষই বাস করত গ্রামে, আর এই গ্রাম্য জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগোরিষ্ঠ অংশই ছিল ভূমিহীন কৃষক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর অর্থনীতির মূল চাকা ছিল কৃষিনির্ভর। দেশের এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বঙ্গবন্ধু এই বৃহৎ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রাম উন্নয়নের এক সামষ্টিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল, আর এই কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলো ছিল- গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রাম সমবায়, কুটিরশিল্প স্থাপন, চাষাবাদ পদ্ধতির আধুনিকায়ন করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষকের জন্য শস্যের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ এবং ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির খাজনা মওকুফ। গ্রাম উন্নয়ন, কৃষির উন্নয়ন, মেহনতী মানুষের আয় ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাবনায়। বঙ্গবন্ধু গ্রাম উন্নয়নের পাশাপাশি শিল্পক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে বড় বড় শিল্প-কারখানা, ব্যাংক, বীমা ও বৈদেশিক বাণিজ্যের একাংশ জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসেন।

লেখক এস এম পারভেজ তমাল, চেয়ারম্যান এনআরবিসি ব্যাংক

নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সেকালের বিধ্বস্ত বাংলাদেশ এক অনন্য ভঙ্গিমায় ঘুরে দাঁড়িয়ে আজকের এই অবস্থান তৈরি করেছে, যার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২ এর অর্থনীতির আকার যেখানে মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলার, সঞ্চয় জিডিপি’র তিন শতাংশ, বিনিয়োগ নয় শতাংশ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ঋণাত্বক ১৪ শতাংশ, সেই মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তুপ বললেও খুব বাড়িয়ে বলা হবে না। চারিদিকে শুধু ঘাটতি আর প্রতিকূল প্রকৃতি, রাস্তাঘাট, বন্দর, রেললাইন ও সেতু বিধ্বস্ত, এক কোটি শরণার্থীর পূনর্বাসন, এরকম শত শত প্রতিকূলতার মাঝেই ‘সোনার বাংলা’ গড়ার মহাদায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন জাতির পিতা। সেই ভঙ্গুর অর্থনীতি ২০২০ সালে ৩১৮ বিলিয়নে উন্নিত হওয়া- যা সত্যিই অকল্পনীয়। অর্থাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি এই ৫ দশকে বেড়েছে ৩৮ গুণের মত। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের মোট জিডিপির আকার ছিল ১০২.৫ বিলিয়ন ডলার, যা শেষ এক দশকে বেড়েছে প্রায় ৩ গুণের মত। অথচ এর আগের ৪ দশকের প্রতি দশকে বাংলাদেশের জিডিপির আকার বেড়েছে মাত্র ১.৭৬ গুণ। পঁচাত্তর পরবর্তী দশক ও তার পরের দশকে প্রবৃদ্ধির গড় হার ছিল ক্রমান্বয়ে ৪ শতাংশ এবং ৫.২ শতাংশ। অথচ সেই অবস্থা থেকে ২০০৭-২০২০ সময়কালে গড়ে ৭ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। গত এক দশকে কৃষির পাশাপাশি শিল্প ও সার্ভিস খাতের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে এবং রফতানি বেড়েছে কয়েকগুণ। আর অবিশ্বাস্য হারে বেড়েছে দেশের রেমিট্যান্স আয়। ১৯৭৫-৭৬ সালে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১৬.৩৫ মিলিয়ন ডলার। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ১৯.৮ বিলিয়ন ডলার (হাজার গুণ বেশি)। এখন প্রায় মাসে প্রবাস আয় গড়ে ২ বিলিয়ন ডলার করে দেশে আসছে। সর্বাধিক রেমিটেন্স আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে, যা জাতি হিসেবে আমাদের কাছে অতান্ত গৌরবের। উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে কর্মসংস্থানমুখী শিল্পের বিকাশ, ফলে নারীসহ গ্রামীণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গ্রামীণ অর্থনীতির চাঙ্গা ভাবের কারণে এই মহামারীর সময়েও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং পৃথিবীর ষষ্ঠতম সেরা বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। 

একটি শিল্পোন্নত দেশ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু তৈরি করলেন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-৭৮)। তিনি পরিকল্পানুযায়ী ছিয়াশি পৃষ্ঠাব্যাপী মস্ত এক শিল্পোন্নয়ন পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তৎকালীন বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকেই বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক মুক্তির চিন্তা করেছিলেন। দুটি ব্লকে বিভক্ত পৃথিবীর, একদিকে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া, চীন এবং অন্য দিকে পুঁজিবাদী শক্তি আমেরিকা। এ ভূখন্ডের মানুষ, তাদের সংস্কৃতি, মাটির গঠন, প্রাকৃতিক পরিবেশ, ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী স্বতন্ত্র একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে, তিনি তখন কোন ব্লকেই নিজেকে যুক্ত করেননি। এটা শুধু একজন রাজনীতিবিদের কাজ নয়, একজন দার্শনিকের কাজ। কিন্তু, নানাকারণেই সেগুলো কিছু বাধার সম্মুখীন হয়। একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। ব্যাংকে টাকা নেই, কোষাগার শূন্য, সমস্ত অবকাঠামো বিপর্যস্ত, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ভাঙা, ২ কোটি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে, ১ কোটি ৪০ লাখ কৃষক পরিবার তাদের লাঙল-জোয়াল, গবাদিপশু রেখে গেছে, বাড়িঘর সব লুটপাট হয়ে গেছে, এমন কি, ফিরে যাবার আগে-পরে পাকিস্তানি সেনারা এ দেশের গুদামগুলো পর্যন্ত লুট করে গেছে, না পারলে পুড়িয়ে দিয়ে গেছে। যেন পারমাণবিক বোমার আঘাতে এক পরিত্যক্ত বিভীষিকাময় ভূখন্ড। এ ধ্বংসস্তুপ দেশকে তিনি দাঁড় করাবেন কী করে? তাও প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। বিদেশ থেকে খাদ্য-আমদানি করলেন, রাস্তাঘাট ঠিক করতে লাগলেন, শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করতে লাগলেন। এর পাশাপাশি এদেশেরই একদল ভিন্ন মতাবলম্বী তাকে অসহযোগিতা করতে শুরু করলেন। কাজ করতে গেলে কিছু ভুল হয়ই। তিনি বলেছেনও, ‘আমি ভুল নিশ্চয়ই করব , আমি ফেরেস্তা নই, শয়তানও নই। আমি মানুষ, আমি ভুল করবই। আমি ভুল করলে আমার মনে থাকতে হবে, আই ক্যান রেকটিফাই মাইসেলফ’। (বাঙালির কণ্ঠ- ৪২৫)।

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু ব্যাংক, বীমা ও সব বৃহৎ শিল্প-কারখানাকে রাষ্ট্রীয়করণের ঘোষণা দেন এবং আরও জানান, শিল্প-কারখানার ম্যানেজমেন্ট বোর্ডে ৪০ শতাংশ শ্রমিক থাকবেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিলগ্নিকরণ করা হবে, যার অনেকগুলো পরিত্যক্ত করা হয়েছে। ভূমি মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার ঘোষণাও দেন। স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান (যেটি সংসদে প্রথম নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর অনুমোদন করেন) যথার্থরূপে ও স্পষ্টভাবে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক দর্শন নির্দেশিত ও প্রতিফলিত হয়েছে।

মূলত বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শনকে আমরা যদি বিশ্লেষণ করি তাহলে প্রথমেই পাব স্বনির্ভরতা, যতটা সম্ভব দেশের সম্পদ ব্যবহার করে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমানো। তার দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল, বিদেশ ও দাতাদের কাছ থেকে শর্তহীন অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে স্বাগত জানানো এবং ক্রমান্বয়ে এ ধরনের নির্ভরতা হ্রাস করা। আর তৃতীয় লক্ষ্য ছিল, বেসরকারি খাতকে নতুনভাবে গড়ে তোলার এক মহাপরিকল্পনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৪ সালের শুরুতেই বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ সীমা ২৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে তিন কোটি টাকা করা হয়। 

বঙ্গবন্ধুর প্রণীত সংবিধান ছিল এক কালোর্ত্তীণ সংবিধান। এ সংবিধানের প্রস্তাবনায় শোষণমুক্ত, সমাজতান্ত্রিক এক সমাজ গঠনের অঙ্গীকার করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে- নাগরিকদের মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। তাছাড়া ধারা-১০ মানুষে মানুষে শোষণ নিরসন, ধারা ১৩-এ রাষ্ট্রীয়, সমবায়ী এবং ব্যক্তিমালিকানায় সম্পদের বণ্টন ব্যবস্থা করা। ১৪ ধারায় বলা হয়, খেটে খাওয়া কৃষক, শ্রমিক ও পিছিয়ে পড়া জনগণের শোষণ থেকে মুক্ত করা এবং ১৫ ধারায় পরিকল্পিত উপায়ে রাষ্ট্র উৎপাদনশীল শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে নাগরিকদের জীবনের মান উন্নত করে খাদ্য, বস্ত্র, আবাসন, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, কাজের অধিকার, নিশ্চিত কর্মসংস্থান ও মজুরির ব্যবস্থাও করবে রাষ্ট্র। এই ধারাতে আরও বলা হয়েছে যে, বেকার, অসুস্থ প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক ও অন্যদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হবে। ১৬ ধারাতে গ্রামীণ পর্যায়ে বিদ্যুতায়ন, কুটির শিল্প, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, যোগাযোগ, শহর ও গ্রামের জীবনমানের বৈষম্য দূর করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। ১৭ ধারাতে গণমানুষের উন্নয়নের জন্য একই ধারার শিক্ষাব্যবস্থা, আইন দ্বারা শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার প্রতিশ্রæতি দেওয়া হয়েছে। ১৮ ধারাতে বলা হয়েছে যে, পুষ্টির মান ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের ব্যবস্থা করবে রাষ্ট্র। আর ১৯ ধারায় বলা আছে, নাগরিকদের সবাইকে সমান সুযোগের ব্যবস্থা করবে রাষ্ট্র।

এ ধারাবাহিকতায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের হৃদপিন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকিং চ্যানেলকে সচল করে এলোমেলো অর্থনীতিকে গুছিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধু বিশেষ নজর দেন। ফলে দেশ স্বাধীনের অব্যবহিত পরে বাংলাদেশে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ডিসি অফিস, ঢাকাকেই পূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। শুরুতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের  আদলে ‘স্টেট ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এর আদলে ‘ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ নামকরণের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বিদেশি ভাষায় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নামকরণ না কারার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। অর্থাৎ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নামে কোনো বিদেশি ভাষারীতি অনুসরণ করা হবে না বা কোনো বিদেশি ব্যাংকের অনুকরণে এর নাম রাখা যাবে না বলে তিনি নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এর অনুকরণে ও এর নাম রাখা যাবে না বলে তিনি নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম হয় ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’। ভাষার নামে দেশ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এই অকৃত্রিম স্বদেশি ভাবধারার একমাত্র রূপকার  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।

বাংলাদেশ বর্তমানে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে যে চোখ ধাঁধানো সাফল্য অর্জন করে চলেছে, তার গোড়াপত্তন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু তাঁর নেতৃত্বে প্রণীত অধিকারভিত্তিক সংবিধানে ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনায়। আমরা তাঁর সেই সামাজিক বিনিয়োগের সুফল পাচ্ছি এতদিন পরে। মাঝে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির অনীহার কারণে সাংবিধানিক এসব অঙ্গীকার সেভাবে রূপায়ণ না হলেও বঙ্গবন্ধুকন্যা সরকার পরিচালনার পুনরায় দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থ-সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করার মতো উন্নতি চোখে পড়ছে। প্রধানমন্ত্রী সাংবিধানিক ধারাগুলোর অঙ্গীকার মাথায় রেখে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শনকে সুদৃঢ়ভাবে রূপায়ণ করে চলেছেন বলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারাটি বিশ্বজুড়ে রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২.৬ বছর, শিশুমৃত্যুর অর্ধেক কমে দাড়িয়েছে প্রতি হাজারে ২৮। আজ বাংলদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা গিয়ে দাড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪২১ মেগাওয়াট। বাংলাদেশে আজ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে ১৫০াট দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৫০তম আর নারীর ক্ষমতায়নে ৭ম, দারিদ্রের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২০.৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে গর্বের জায়গা আমাদের জিডিপি আজ ৩৩০.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, রপ্তানী আয় ৪০.৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪.০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর সেই কারণেই শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যু, নারী ক্ষমতায়ন, জীবনের প্রত্যাশিত আয়ুর মতো সামাজিক সূচকের বাংলাদেশ পাশের দেশ ভারতসহ উন্নয়নশীল বিশ্বের চেয়ে অনেক ভালো অর্জনের অধিকারী হতে পেরেছে।

বঙ্গবন্ধু মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি  নিশ্চিত করতে  নিয়েছিলেন বহুমুখী  পরিকল্পনা, দিয়েছিলেন অর্থনীতির নতুন ফর্মুলা। তারই উদ্ভাবিত উন্নয়ন দর্শনকে বাস্তবে রূপ  দিতে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫৩ জন স্বপ্নসারথী প্রবাসী বাংলাদেশী ২০১৩ সালে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড। সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সেই চতুর্থ প্রজন্মের নবীন ব্যাংকটি আজ পুরো ৫৬,০০০ বর্গমাইল ব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে তার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এ যাবত দেশের সকল অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৮৪ টি শাখা, ৪২৩ টি উপশাখা, ৫৫ টি এটিএম বুথ, ৫৮৮ টি এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্ট স্থাপন করে রিয়েলটাইম ট্রানজেকশন সুবিধাসহ সর্বাধুনিক ও বিশ্বস্ত ব্যাংকিং সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। এর সাথে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বা অভ্যস্তরীণ রেমিটেন্স বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনআরবিসি ব্যাংক সম্প্রতি অফ-শোর শাখা স্থাপন করেছে যা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সারা দেশে ৩৩৬ টি ভূমি রেজিস্ট্রেশন ফি কালেকশন বুথ, ৬৪ টি জেলায় বিআরটিএ ফি কালেকশন বুথ, ৩০ টি ডিপিডিসি ও ডেসকো বিদ্যুৎ বিল কালেকশন বুথ, ১৫ টি পল্লী বিদ্যুৎ বিল কালেকশন বুথ স্থাপন করে অত্র ব্যাংক সরকারী রাজস্ব আহরণে প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার গ্রাহককে সেবা প্রদান করে চলেছে। 

উল্লেখ্য যে, অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সারা দেশের আরও ৬৫ টি বিআরটিএ অফিসে নিজস্ব বুথের মাধ্যমে ফি ও চার্জ গ্রহণ করার অনুমতি এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিল সংগ্রহে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছ থেকে তাদের নিজস্ব ভবনে এই ব্যাংকের বুথ স্থপনের মাধ্যমে সরকারী রাজস্ব সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছে। এছাড়া এনআরবিসি ব্যাংক দেশের ৫০৩ টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং অবশিষ্ট সকল জেলাতে বিআরটিএ-এর ফি ও ট্যাক্স আদায়ের জন্য কালেকশন বুথ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে ব্যাংকিং পার্টনার হিসেবে এবং কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব পালনে এনআরবিসি ব্যাংক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের সেফটিনেট প্রোজেক্ট এর আওতায় বর্তমানে ৫ টি জেলাতে প্রায় ১.০০ লক্ষ দুঃস্থ ভাতা ভোগীকে ব্যাংকটি প্রতিমাসে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভাতা ডিজিটালাজড এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ভাতা প্রদান করে আসছে, এছাড়াও সমগ্র বাংলাদেশের ৩০০ টি উপজেলাতে ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা সফলভাবে প্রদান করে আসছে। এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সাথে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড।

শুরু থেকেই এনআরবিসি ব্যাংক জাতির জনকের সুযোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০২১ কে সামনে রেখে করে এসেছেন। পিছিয়ে পড়া অনাগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় আনতে  নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। দেশ এবং জনগণ  নিয়ে কাজ করতে হলে হতে হবে জনগণের ব্যাংক। তাইত ১২ বছর পর প্রথম  ব্যাংক হিসাবে এনআরবিসি ব্যাংক পুঁজিবাজারে এসেছে। জনগণের ব্যাংক হওয়ার ক্ষেত্রে যা অনেক বড় একটা পদক্ষেপ। করোনা ভাইরাসসহ যেকোন দুর্যোগে মানুষের পাশে থেকে ‘মানবিক ব্যাংক’  হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে  এনআরবিসি ব্যাংক। যা আবারো প্রমাণ করে যে এনআরবিসি ব্যাংক শুধু ব্যবসায়িকভাবে নয় বরং নৈতিক এবং মানবিকভাবেও জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত এনআরবিসি ব্যাংকও বিশ্বাস করে যেকোন অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে গ্রাম কিংবা প্রান্তিক জনগণ। তাইত ২০২১ সালে অন্যান্য ব্যাংক যখন বড় বড় কর্পোরেট ঋণের দিকে ঝুঁকছে। মাইক্রোফিনান্স/সিএমএসএমই কিংবা ক্ষুদ্রঋণই তখন এনআরবিসি ব্যাংকের মূল ফোকাস। ২০২১ সালকে সামনে রেখে এনআরবিসি ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণের মহাযজ্ঞ  হাতে নিয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ। অর্থনৈতিক অর্ন্তভুক্তি এবং সিএমএসএমইতে সার্বিক লেনদেন বৃদ্ধি যেকোন দেশের জিডিপিতে ভূমিকা পালন করে। গ্রামকে শহরায়ন করতে উন্নয়নমুখী কাজে গ্রামের মানুষকে সম্পৃক্ত করছে এনআরবিসি ব্যাংক। গ্রামের মানুষকে কর্মমুখী করে সরকারের ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের সাথে ওতপ্রোতভাবে কাজ করে যাচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। করোনার সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক মানুষের কথা বিবেচনায় বিশেষ স্কিম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিল গ্রামের ছোট ব্যবসায়ী, ছোট উদ্যোক্তা, স্বল্প আয়ের পেশাদারি মানুষ, যাদের প্রত্যেককে ৫ লাখ করে মোট ৬৫ কোটি টাকা লোন দেয়া হয়েছে। বর্তমান প্রযুক্তির হাত ধরে এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড মোবাইল ব্যাংকিং ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের দ্রুত প্রসার ঘটিয়েছে। যার ফলে গ্রামীণ সমাজে আধুনিক অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এনআরবিসি ব্যাংক গ্রামীণ শাখা স্থাপনে অধিক গুরুত্ব আরোপ করে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে আসছে। ফলে গ্রামীণ উদ্যোক্তার সংখ্যাও ব্যাপক হারে বেড়েছে। এভাবেই গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ব্যাংকটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধ এবং কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর উন্নয়ন ভাবনার ব্যাপ্তি ছিল সর্বত্র এবং যা ছিল সর্বজনীন, অব্যর্থ ও কালজয়ী। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ তার সুযোগ্য তনয়া গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাস্তবে রূপ লাভ করে চলেছে। আজ যে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে দেখা যাচ্ছে, উন্নয়নের জোয়ার যেখানে বইছে, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষার ব্যাপক প্রসার, মেট্রোরেলের মত উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা কিংবা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান বাস্তবতা, গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রাধান্য এবং শিল্পায়নের অগ্রগতি- এসব কিছুরই স্বপ্নদ্রষ্টা হলেন সকল বাঙ্গালীর গর্ব এবং অহংকার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এ জাতির প্রতি তাঁর যে আদর্শ, তাকে বুকে ধারণ করে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড।

লেখক: চেয়ারম্যান এনআরবিসি ব্যাংক

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি