ঢাকা, শনিবার   ১০ মে ২০২৫

ঋণগ্রহীতার যাকাতের বিধান

প্রকাশিত : ১৬:১৪, ১১ মে ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ঋণগ্রহীতা অর্থাৎ যার কাছে মানুষের ঋণের অর্থ রয়েছে, তিনি ঋণ থেকে প্রাপ্ত অর্থের নিসাব ও বছর পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে যাকাত প্রদান করবেন কি-না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। তাহলো-

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ, রৌপ্য অথবা ব্যবসায়ী পণ্যের মালিক হন, তবে তিনি তার সম্পদের যাকাত দেবেন, ঋণের কারণে যাকাত মওকুফ হবে না। সে ক্ষেত্রে তিনি নিজের অন্যান্য সম্পদের সঙ্গে ঋণ থেকে প্রাপ্ত অর্থ যোগ করবেন, অতঃপর পূর্ণ সম্পদের ওপর ২.৫% যাকাত প্রদান করবেন।

ঋণগ্রহীতা ঋণ থেকে প্রাপ্ত অর্থের যাকাত প্রদান করবেন, যদি ঋণ থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিসাব পরিমাণ হয় ও তাতে বছর পূর্ণ হয় এবং সম্পদ তার আয়ত্তে ও কর্তৃত্বে থাকে। হযরত উমার (রা.) যাকাত আদায়ের সময় প্রত্যক্ষ সব সম্পদের যাকাত গ্রহণ করতেন, তাই তাতে ঋণ থাকুক বা না থাকুক।

যদি যাকাত প্রদানের সময় ঋণ পরিশোধের নির্দিষ্ট মেয়াদ চলে আসে, তবে তিনি আগে ঋণ পরিশোধ করবেন। ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পদ যাকাতের নিসাব থেকে কমে গেলে সেই সম্পদের যাকাত দিতে হবে না। অনুরূপভাবে, যার ওপর মান্নত বা কাফফারা ওয়াজিব (যেমন যিহার বা কসমের কাফফারা), তবে মান্নত বা কাফফারা আদায়ের পর তার সম্পদ নিসাব থেকে কমে গেলে তার ওপরও যাকাত আরোপিত হবে না। পুনরায় যখন নিসাব পরিমাণ হবে সঙ্গে সঙ্গে যাকাত দিতে হবে, হিজরী এক বছর পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষা করবে না। কারণ, আগেই তাতে বছর পূর্ণ হয়েছে।

ঋণের অর্থ দিয়ে তৈরি শিল্প, কারখানা/ফ্যাক্টরির যাকাত : যে সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ নয়, সেই সম্পদ অর্জনে গৃহীত কোন ঋণই যাকাত হিসাবের সময় বাদ দেয়া যাবে না। যেমন- বাসস্থান, পরিধেয় বস্ত্র, ঘরের আসবাবপত্র, যানবাহন ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু অথবা মিলকারখানা, ফ্যাক্টরি, মেশিনারিজ ইত্যাদি ক্রয় বা বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে গৃহীত ঋণ যাকাতের নিসাব হতে বাদ দেয়া যাবে না। কারণ, এ ঋণ নিয়ে মিল-কারখানা ইত্যাদি সম্পদ অর্জিত হয়েছে সুতরাং একদিকে ব্যক্তির ঋণ আছে, অপরদিকে ঋণের পরিবর্তে সম্পদও রয়েছে। ব্যক্তি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হলে উল্লেখিত সম্পদ থেকে ঋণপ্রদানকারী তার প্রাপ্য ঋণ উসুল করে নিতে পারবেন। সুতরাং এ ধরনের ঋণ যাকাতের নিসাব হতে বাদ দেয়া যাবে না। তবে কিস্তি পরিশোধের সময় হলে তা পরিশোধের অর্থ যাকাতের নিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে।

যাকাত হিসেবে ঋণ মওকুফ : নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ব্যক্তি যদি কোন গরীব ব্যক্তির কাছে কর্জের টাকা পায়, তাহলে যাকাতের নিয়াতে ওই কর্জ মওকুফ করে দিলে যাকাত আদায় হবে না। আবার যদি পাওনাদার ঋণগ্রস্ত গরীবকে এ শর্তে যাকাত দেয় যে, যাকাতের টাকা দিয়ে সে তার পাওনা পরিশোধ করবে, তাহলেও যাকাত আদায় হবে না। কারণ, সে ফেরত দেয়ার শর্তারোপ করেছিল। যদি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি নিয়াত করে যাকাতের টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবে, আর যাকাত প্রদানকারী এ নিয়াতে যাকাত দেয় যে, যাকাতের টাকা নিয়ে সে আমার ঋণ পরিশোধ করবে কিন্তু কেউ কারও ওপর শর্তারোপ করেনি এবং বিষয়টি প্রকাশ্যে মুখেও উচ্চারণ করেনি, তাহলে তার যাকাত আদায় হবে এবং ঋণগ্রস্ত ফকিরও ঋণ পরিশোধ করলে ঋণ থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন।

তথ্যসূত্র : সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি