ঢাকা, সোমবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৫

কাটা-ছেঁড়া অবহেলা করলে বিপদ বাড়ে!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫০, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

জীবনে কাটা-ছেঁড়া নতুন কিছু নয়। কখনও পড়ে গিয়ে, কখন বা কোন দুর্ঘটনায় কেটে বা ছিঁড়ে যায়। এই কাটা-ছেঁড়া যদি অল্প পরিমাণে হয় তখন আমরা অনেকেই এই বিষয়টিকে তেমনভাবে আমলে নেই না। আর আঘাত যদি বেশি হয় তখন ডাক্তার হাসপাতালে ছোটাছুটি পড়ে। কিন্তু ছোট কাটা-ছেঁড়ার ক্ষতও পরিণামে ভয়াবহ হতে পারে। এ থেকে গ্যাংগ্রিন, এমনকি অঙ্গাংশ বাদ দেওয়ার মতো বড় ক্ষতি হওয়ার ভয়ও অমূলক নয়। 

চিকিৎসকরা বলেন, প্রতিটি ক্ষতই গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কিন্তু কোন বয়সের মানুষের ক্ষত বা তার কোনও শারীরিক রোগের ইতিহাস আছে কি না— সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গুরুত্ব আলাদা। যাদের ডায়াবেটিস, এইচআইভি, কিডনি ফেলিয়োর বা রক্তে সমস্যা আছে, তাদের চিকিৎসা হবে অন্য রকম। বয়স বেড়ে গেলেও ক্ষতের চিকিৎসা হবে আলাদা। প্রবীণদের সব ধরনের ওষুধ দেওয়াও সম্ভব নয়।

তবে চিকিৎসা নির্ভর করে আঘাতের ধরনের উপর। কেটে-ছেঁড়ে যাওয়ার ঘটনা কোথায় ঘটেছে- রাস্তার ধুলাবালির মাঝে না কি বাড়িতে পরিষ্কার জায়গায়? আবার শরীরের কোন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- মুখ, গাল বা নরম কোনও জায়গায় না কি হাতের তালু কিংবা পায়ের তলায়? কাটা সামান্য না কি বেশ গভীর সে বিষয়টি বিচার্য। গভীর কাটা চামড়া, মাংস, ফ্যাট ভেদ করে হাড় অবধি পৌঁছেছে কি না এগুলোর উপর নির্ভর কোন ধরনের চিকিৎসা রোগী পাবে।

কাটার পর পরই যদি কিছু সাবধানতা নেওয়া যায়, তবে বড় রকমের বিপদের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। এবার সে সম্পর্কে জানা যাক...

* ঠাণ্ডা পানিতে ভাল করে সেই ক্ষত পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। সুযোগ থাকলে উষ্ণ পানিতে অ্যান্টি-সেপটিক লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। রাস্তায় কেটে গেলে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সে ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাবান পানি বা অ্যান্টি-সেপটিক লিকুইড ব্যবহার করা আবশ্যক। 

* ধোয়ার পরে দেখতে হবে, ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি না। রক্ত বেরোতে থাকলে কাটা জায়গাটা হাত দিয়ে চেপে ধরতে হবে। সাধারণত দু’-চার মিনিটের মধ্যেই রক্ত বেরোনো কমে যায়, তবে রক্ত বন্ধ না হলে চিকিৎসকের কাছে কিংবা হাসপাতালে যাওয়া বাঞ্ছনীয়।

* মাছ কাটতে গিয়ে কাঁটা ফুটে যাওয়া। প্রাথমিকভাবে মনে হতেই পারে, রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু কাঁটার অংশ ভিতরে থেকে যেতে পারে। আবার অনেকে কাঁটার অংশ তুলতে গিয়ে খোঁজাখুচি করেন, এই অভ্যাসটি একদমই ভাল নয়। এ থেকেও হতে পারে ইনফেকশন। ময়লা হাত দিয়ে ক্ষতের অংশটি না ধরে দু’হাতই অ্যান্টি-সেপটিক দিয়ে পরিষ্কার করুন। তারপর পর্যবেক্ষণ করুন ভেতরে কিছু রয়েছে কি না? জটিল মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অযথা খোঁজাখুচি না করাই ভাল।

* অনেকেরই কড়া পড়ে যাওয়া বা কর্নের সমস্যা থাকে। কর্ন ক্যাপ ব্যবহার করার পরে চামড়া নরম হয়ে গেলে হাত দিয়ে খুঁটে তুলে ফেলে ক্ষত সৃষ্টি করেন অনেকে। তা থেকেও হতে পারে ইনফেকশন।

* লোহায় কেটে গেলেই যে টিটেনাস নিতে হবে— এই ধারণা রয়েছে অনেকের। তবে জন্মের পরই যদি কারোর টিটেনাসের কোর্স নেওয়া থাকে তাহলে দশ বছর মধ্যে ক্ষতের জন্য টিটেনাস না নিলেও চলে। 

* ছোট কাটা-ছেড়া হলে ব্যান্ড-এড লাগিয়ে থাকেন অনেকেই। এখানে খেয়াল রাখা জরুরি, ব্যান্ড-এডের আঠালো অংশ যেন ক্ষতের উপর দিয়ে না যায়। তা থেকেও হতে পারে ইনফেকশন।

সামান্য কাটা-ছেঁড়া বা ক্ষত পরে ধারণ করতে পারে এমন আকার, যা থেকে বড় ক্ষতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাই যত সামান্য কাটাই হোক না কেন, তাকে অবহেলা করবেন না।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি