ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪

পরকালে কঠিন শাস্তি

জুলুমকারী জীবনে পাবে লাঞ্ছনা ও অপমান

প্রকাশিত : ১৭:০৭, ২৪ মে ২০১৯

কুরআন অধ্যায়নের ফলে হাজার বছরের সংস্কার ও ধর্মান্ধতার বৃত্ত ভেঙে লাভ করে মুক্ত বিশ্বাস ও সঠিক জীবনদৃষ্টি। এরপর নিজের মুক্তির জন্যে, মানুষের মুক্তির জন্যে কোন ত্যাগ স্বীকারেই পিছপা হয়নি তারা। অবিদ্যা হিংসা সন্ত্রাস রক্তপাত শোষণ জুলুম আর নারী নির্যাতনে নিমজ্জিত মানুষেরাই পরিণত হয় সত্য ও ন্যায়ের মূর্ত প্রতীকে। অন্যায়ভাবে কাউকে দেশছাড়া করা, হত্যা করা, দান না করে সম্পদ কুক্ষিগত করাকে জুলুম বলে কুরআনে উল্লেখ করেছেন আল্লাহ।

জুলুম সম্পর্কে কুরআনে আল্লাহ বলেন : ‘তারপরও তোমরা একে অন্যকে খুন করেছ, তোমাদের একদলকে আরেক দল দেশছাড়া করেছ, তোমাদেরই একদল অন্যদলের ওপর অন্যায় ও জুলুমে জালেমদের মদদ দিয়েছ। আবার তারাই বন্দিরূপে তোমাদের সামনে হাজির হলে মুক্তিপণ নিয়ে তাদের মুক্ত করেছ। অথচ তাদের দেশছাড়া করাটাই তোমাদের জন্যে অবৈধ ছিল। তবে কি তোমরা আল্লাহর বিধি-বিধানের কিছু অংশ বিশ্বাস করো এবং কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান করো? তোমাদের মধ্যে যারাই এমন কাজ করবে, তারা প্রতিফল হিসেবে পার্থিব জীবনে পাবে লাঞ্ছনা ও অপমান। আর মহাবিচার দিবসে তো তাদের জন্যে অপেক্ষা করছে আরো কঠিন শাস্তি। তোমরা যা করো আল্লাহ সবই জানেন।’ (সূরা বাকারা ৮৫)

‘আল্লাহ অবশ্যই সুবিচার, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনদের দানের নির্দেশ দেন। তিনি অশ্লীলতা, ঈর্ষা ও অন্যায়-জুলুম করতে নিষেধ করেন। তিনি বার বার উপদেশ দেন, যাতে তোমাদের মনে থাকে।’ (সূরা আন-নহল ৯০)

‘কোন জনপদ ধ্বংস করার আগে আমি সেখানকার বিত্তবান ও প্রভাবশালী লোকদের সৎকর্ম করার নির্দেশ দেই। কিন্তু ওরা আমার আদেশের অবাধ্য হয়ে অন্যায় ও জুলুমে লিপ্ত হয়। তখন ন্যায়সঙ্গতভাবেই আজাবের ফয়সালা হয়ে যায় এবং তারা ধ্বংস হয়।’ (সূরা বনি ইসরাইল ১৬)

আল্লাহ মজলুমের কথা শোনেন : ‘আল্লাহ কোন মন্দ কথার প্রচারণা পছন্দ করেন না। তবে কারো ওপর অন্যায় হয়ে থাকলে, সে তা বলতে পারে। আল্লাহ মজলুমের সব কথা শোনেন, জালেমের সব কিছুই জানেন।’ (সূরা নিসা ১৪৮)

নিজেরা নিজেদের ওপর জুলুম : ‘(এই মুনাফেক ও সত্য অস্বীকারকারীরা) ওদের পূর্ববর্তী নূহ, আদ, সামুদ ও ইব্রাহিমের সম্প্রদায় এবং মাদিয়ান ও বিধ্বস্ত নগরীর অধিবাসীদের বিপর্যয়ের খবর কি পায় নি? ওদের প্রত্যেকের কাছেই সত্যের সুস্পষ্ট প্রমাণসহ রসুলরা এসেছিল। (কিন্তু ওরা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল।) তাই (ওদের অপরাধের শাস্তি দিয়ে) আল্লাহ ওদের ওপর কোন জুলুম করেননি, বরং ওরা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল।’ (সূরা তওবা ৭০)

‘(হে নবী!) সত্য অস্বীকারকারীরা শুধু প্রতীক্ষা করতে চায় ফেরেশতার দৃশ্যমান আগমনের অথবা তোমার প্রতিপালকের নির্ধারিত শাস্তি আসার। ওদের পূর্ববর্তী পাপীরাও তাই করত। (ওদের যখন ধ্বংস করে দেয়া হলো, তখন) আল্লাহ ওদের ওপর কোন অন্যায় করেন নি, ওরা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল। ওদের জুলুমের বোঝাই ওদের ওপর নিপতিত হলো। যে আজাব নিয়ে ওরা ঠাট্টাবিদ্রূপ করত, সে আজাবই ওদের গ্রাস করল।’ (সূরা আন-নহল ৩৩-৩৪)

‘(অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে) মূসা প্রার্থনা করল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি আমার নিজের ওপর জুলুম করেছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করো’। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা কাসাস ১৬)

দান না করে অর্থ কুক্ষিগত করা জুলুম : ‘অন্যের জন্যে তোমরা যা-কিছু ব্যয় করো বা যা-কিছু তোমরা মানত করো, আল্লাহ সবই জানেন। (দান না করে অর্থ কুক্ষিগত করা জুলুম।) আর এই জালেমদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।’

জুলুম থেকে মুক্তির প্রার্থনা : ‘তখন তারা বলল, ‘আমরা আল্লাহর ওপরেই ভরসা করছি।’ (প্রার্থনা করল) ‘প্রভু হে! আমাদেরকে জালেমের হাতে নিগৃহীত করো না। প্রভু হে! দয়া করো। জালেমের জুলুম থেকে আমাদের মুক্তি দাও।’ (সূরা ইউনুস ৮৫-৮৬)

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি