ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

নজরুলের দেশে ফেরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪৫, ২৪ মে ২০২০ | আপডেট: ১৪:২৯, ২৪ মে ২০২০

আজ ২৪ মে। ১৯৭২ সালের আজকের এই দিনে বাংলাদেশে আসেন বিদ্রোহী কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে তাকে সপরিবারে ঢাকায় আন হয়। তার আশ্রয় হয় ধানমন্ডি ১৮ নম্বর সড়কের একটি ভবনে। যার নাম দেওয়া হয় ‘কবি ভবন’। ১৯৭৫ সালের ২৩ জুলাই কবিকে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (এখন যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি মারা যান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময়টা ছিল বেশ হৃদয়স্পর্শী। যেন দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটলো। সাক্ষাৎ হতেই বঙ্গবন্ধু কবির মাথায় শরীরে বারবার হাত বুলিয়ে দিতে থাকলেন। আর কবি নজরুল ‘নির্বাক কবি’ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন বঙ্গবন্ধুর দিকে। হাত বাড়িয়ে বিড়বিড় করে কি যেন বললেন। কিন্তু মুখের ভাষা বোঝা গেল না। দুর্বোধ্য সেসব কথা। সদা প্রাণোচ্ছল কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলার সব জায়গা একসময় চষে বেরিয়েছেন। তিনি বিদ্রোহের গান গেয়ে মানুষের মুখে ভাষা ফুঁটিয়ে জাগিয়ে তুলেছেন ঘুমন্ত বাঙালিকে। স্বাধীনতার মন্ত্রে দেশমাতৃকার মুক্তির পথে আগুয়ান এক কবি স্বাধীন বাংলায় এসেছেন নির্বাক ও ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে।

বিদ্রোহী কবি ও তার পরিবার সদস্যরা সেদিন ছিলেন ধানমন্ডির ২৮ নম্বর রোডের এক দ্বিতল বাড়িতে। কলকাতা থেকে ঢাকা আসার পর কবিকে দেখতে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, দুই মেয়ে আর ছোট রাসেল।

দৈনিক বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, গণভবন থেকে কাজ সেরে আড়াইটায় বঙ্গবন্ধু ধানমন্ডির বাড়িতে আসেন। বাড়ি গিয়ে তিনি বুকশেলফ থেকে বের করেন নজরুলের কাব্যগ্রন্থ সঞ্চিতা। আবৃতি করেন বিদ্রোহী কবিতা। তারপর মহাবিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেইদিন হবো শান্ত, আবৃত্তি করতে করতে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসেন। তার বাড়ি থেকে ২৮ নম্বর কবির বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত আওড়ালেন কবিতার চরণ।

নজরুলকে বাঙালির স্বাধীন সত্তার রূপকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘কবি নজরুল বাংলার বিদ্রোহী আত্মার, বাঙালির স্বাধীন সত্তার রূপকার।’ কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। পবিত্র মাটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের চারণ কবি বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম দিবস পালিত হচ্ছে সেটিকে আনন্দ ও গর্বের বিষয় উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, “শুধু বিদ্রোহ ও সংগ্রামের ক্ষেত্রেই নয়, শান্তি নিকুঞ্জ কবি বাংলার অমৃত কন্ঠ ‘বুলবুল’। দুঃখের বিষয়, বাংলা সাহিত্যের এই বিস্ময়কর প্রতিভার অবদান সম্বন্ধে তেমন কোনও আলোচনা হলো না। বাংলার নিভৃত অঞ্চলে কবির বিস্মৃতপ্রায় যেসব রত্ন আছে, তা পুনরুদ্ধারের যেকোনও উদ্যোগ প্রশংসাযোগ্য।”

বাণীতে বঙ্গবন্ধু কবির সৃষ্টি পুনর্মূল্যায়নের দায়িত্ব বাংলাদেশের বিদগ্ধ সমাজকে গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নজরুল একাডেমী কাজে অগ্রণী হয়েছে জেনে আস্বস্ত হওয়া গেছে। নজরুল জন্ম দিবসের উৎসবে মিলিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কাজে বিদগ্ধ সমাজ আত্মনিয়োগ করবে বলে আশা রাখি।’
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি