ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫৯, ৮ মার্চ ২০২৩ | আপডেট: ১৯:০৯, ৮ মার্চ ২০২৩

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস (আইডব্লিউডি) উদযাপিত হচ্ছে। ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি। 

এবার পবিত্র শবে বরাত ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস একই দিনে হওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অনুষ্ঠানে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা বিশ্বের সকল নারীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সমাজ, রাষ্ট্র, ও পারিবারিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণ কাঙ্খিত উন্নয়নের অপরিহার্য শর্ত। তিনি জেন্ডার সমতা-ভিত্তিক দেশ গড়তে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ গত এক দশকে আর্থ-সামাজিক খাত ও নারীর ক্ষমতায়নে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল পর্যন্ত নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। নারী শিক্ষা নিশ্চিত করা, নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা, সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন এবং কর্মক্ষেত্র ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। 

বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী আন্দোলনের ইতিহাসে আজ এক গৌরবময় দিন। দীর্ঘ কর্মঘন্টা আর মজুরি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নারী আদায় করেছিল তার অধিকার।’

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি থাকায় এবছর নির্ধারিত সেমিনারটি পরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে আজ বেলা আড়াইটায় এক শোভাযাত্রা করেছে। শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল বিশ্ব হোক সবার; নারীর অধিকার সুরক্ষায় ও সহিংসতা মোকাবেলায় চাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন বৈষম্যহীন সৃজনশীল প্রযুক্তি’।  

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি  দিবসটি উপলক্ষে আগামী কাল দিনব্যাপি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সকাল ১০ টায় শোভাযাত্রা, নারী দিবসের বার্ষিক সংকলন ‘কন্ঠস্বর’ এর মোড়ক উন্মোচন এবং  বেলা ১১ টায় আলোচনা সভা। 

জাতীয় প্রেসক্লাব আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজন করছে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান। এ বছরের নারীর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল:ইনোভেশন এ-টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

এসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজন করেছে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা। 

দিবসটি উপলক্ষে বিনামূল্যে নারীদের ‘স্তন ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার’ পরীক্ষা এবং সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হেলথ এ্যান্ড হোপ হাসপাতাল। আগামীকাল বুধবার বেলা ১১.৩০ টা থেকে দুপুর ২.০০টা পর্যন্ত পান্থপথে হেলথ এ্যান্ড হোপ হাসপাতালে এটি অনুষ্ঠিত হবে।  

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও রয়েছে নানা আয়োজন।  নাট্য সংগঠন স্বপ্নদল হেলেন কেলার সম্মাননা ও বিশেষ নাটক মঞ্চায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটারে মঞ্চায়িত হবে হেলেন কেলার-এর জীবন-কর্ম-স্বপ্ন-সংগ্রাম ও দর্শনভিত্তিক বিশেষ নাটক ‘হেলেন কেলার’। প্রদর্শনীর আগে নিবেদিতপ্রাণ নাট্যজন জয়িতা মহলানবীশ-কে স্বপ্নদলের ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্মাননা ২০২৩’ দেয়া হবে।   

উল্লেখ্য, প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ বিশ্বজুড়ে উদযাপন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ১৯০৮ সালে শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নারী দিবসের দিবসের বীজ বপন করা হয়েছিল; যখন নিউ ইয়র্কের ১৫ হাজার নারী শ্রমিক কর্মঘণ্টা কমানো, ভালো মজুরি ও ভোটের অধিকারের দাবিতে  প্রতিবাদ মিছিল করে। এর এক বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যালিস্ট পার্টি নারী  শ্রমিকদের প্রতি সম্মান জানায়। মার্কিন শ্রমিক আন্দোলনের নেত্রী থেরেসা মালকিয়েলের পরামর্শে তারা ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্কে জাতীয় নারী দিবস উদযাপন করে।

আন্তর্জাতিকভাবে নারী দিবস পালনের পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্রের নারী অধিকারবিষয়ক আইনজীবী ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী ক্লারা জেটকিনের পক্ষ থেকে প্রথম আসে। ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে নারী শ্রমিকদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। যেখানে ক্লারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ ধারণাটির প্রস্তাব রাখেন।  সেই সম্মেলনে   ১৭টি দেশের ১০০ জন নারীনেত্রীর উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিতে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এটি জাতিসংঘ থেকে স্বীকৃত পেয়ে আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত হয়েছে। এবছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ১১৫তম বর্ষ পালিত হচ্ছে। 
কেআই//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি