ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশের অস্তিত্ব আর বঙ্গবন্ধু একসূত্রে গাঁথা: শেখ পরশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১৬, ১৯ মার্চ ২০২৪

১৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুভ জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ ১৯ মার্চ, ২০২৪খ্রিঃ, সকাল ১১টায়, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ, মহাখালী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ইফতার বিতরণ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন-শেখ ফজলে শামস্ পরশ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-সিমিন হোসেন রিমি এমপি, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি, প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-বঙ্গবন্ধু ছিলে স্বপ্নচারি ও সম্মোহনী নেতা। সম্মোহনী নেতার সবচেয়ে বড় গুণটি হচ্ছে, তিনি যা বলেন তা জনগণের মনে গেঁথে যায়। তারা উৎসাহিত হয়, প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন-একটি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন, যা তিনি ১৯৪৭ সাল থেকে দেখে আসছিলেন, তা সমন্বিত আকারে তিনি বলেছেন ৭ই মার্চের ভাষণে। বিভ্রান্ত বাঙালি জাতি সেদিন পেয়েছিল পথের দিশা। তার বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিলো: ‘এবারে সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

এ ভাষণে বাঙালির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়েছে। জনগণের গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তি এবং স্বাধীনতার স্বপ্নের প্রকাশ এ ভাষণ। তাই আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের অস্তিত্ব আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন এক সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দুটি ধাপ ছিল: প্রথমটি এই অঞ্চল (পূর্ব বাংলা) জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর দ্বিতীয় ধাপ ছিল: বাংলাদেশের রূপকল্প। তিনি কেবল একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেননি, স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেননি, স্বাধীন রাষ্ট্রটি কেমন হবে তার একটি রূপকল্প তৈরী করেছিলেন। কেমন বাংলাদেশে তিনি চান, তার একটি স্বপ্নও বঙ্গবন্ধু একেছিলেন। সেই স্বপ্নের চূড়ান্ত পরিণতি হলো, আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, স্ব-নির্ভর আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন-৭৫’-এর পর বাংলাদেশ যে ধারায় চলতে শুরু করেছিল, তাতে এই রাষ্ট্রটি এতোদিন থাকতো না। থাকলেও ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের মতো পরিস্থিতি হতো বাংলাদেশে। কিন্তু সেটা হয়নি। বরং বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর কা-ারী হলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার উন্নয়ন কৌশল হলো-বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন। বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, বাংলাদেশকে সেরকম আধুনিক উন্নত এবং স্বনির্ভর করাই শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্যই তিনি নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, আর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির নেতা। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ বদলে গেছে। তাঁর নেতৃত্বেই বিশ্বে আজ বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে। একথা বললে ভুল হবে না যে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আর শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি।

তিনি বলেন-মূলত তিনটি বিষয় বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ রাজনৈতিক প্রেরণার পিছনে ভূমিকা রেখেছে: ১) বঙ্গবন্ধুর বাঙালিত্ব, ২) শোষিত-বঞ্চিত মানুষের প্রতি তাঁর নৈতিক, যৌক্তিক এবং নিরপেক্ষ দায়বদ্ধতা এবং ৩) তাঁর পারিবারিক শিক্ষা ও বেড়ে উঠা। এই তিনটি চালিকা শক্তির কাঁধে ভর করে তরুণ মুজিব ধাবিত হয়েছিল মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। যেই লক্ষ্য থেকে তাঁকে কোন শক্তি বা শাসকগোষ্ঠী কোনদিন বিচ্যুত করতে পারেনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাঙালির অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন। বাঙালিকে ভালবেসেছেন এবং বাঙালির উন্নতির কথা ভেবেছেন। তিনি আরও বলেন-আমাদের নতুন প্রজন্মের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে এবং একই সাথে শুধু দেশপ্রেমী নয়, বাঙালি সংস্কৃতির ও ইতিহাসের অনুরাগী হতে হবে। শুধু আবেগ নির্ভর রাজনীতি নয়, নৈতিক এবং যুক্তিশীল রাজনীতি করতে হবে। একই সাথে বাঙালি মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে। নিজেকে জানতে হবে এবং আত্ম সমালোচনাও করতে হবে। কেবল তাহলেই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের সম্মান আমরা দিতে পারব। ভুলে গেলে চলবে না, এদেশ সহজে স্বাধীন হয় নাই, বহু বাঙালির মা-বাবা, ভাই-বোনদের রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশর সৃষ্টি হয়েছিল। এই বাংলাদেশের বিনির্মাণে আমাদের সচেতন থাকতে হবে এবং একই সাথে দায়িত্বশীল হতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে মৌলবাদী ধর্মান্ধতা এবং অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসকে প্রতিহত করে একটি প্রগতিশীল বিজ্ঞান-ভিত্তিক, গঠনমূলক রাজনৈতিক পথ তরুন প্রজন্মকে বেছে নিবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এমপি বলেন-আজকে যুবলীগের যে কার্যক্রম মানবিক উদ্যোগ এ কথাই মনে করিয়ে দেয় আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো তারা সকলেই এ বাংলার গরীব-দুঃখী মানুষের পাশে। সবসময় আছে। তারা যে কোন দুর্যোগ-দুঃসময়ে মানুষের পাশে এসে কাজ করে যাচ্ছে। করোনার সময় যখন মানুষ ঘর থেকে বের হয় নাই, মানুষের ধান কাটার জন্য লোক পাচ্ছে না তখন শেখ হাসিনার নির্দেশে যুবলীগ, ছাত্রলীগ করোনা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে। তখন যদি এই মানবিক কাজগুলো আমাদের আওয়ামী লীগের সংগঠনগুলো না করতো তাহলে মানুষগুলো সমস্যায় পড়ে যেতো। বঙ্গবন্ধুর যে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশের যে চিন্তা কিন্তু সাধারণ মানুষকে নিয়ে। তিনি আরও বলেন-প্রতিটি উপজেলায় ২১০০০ মানুষ শেখ হাসিনার মানবিক সুবিধা পায়। আমাদের সেগুলোও প্রচার করতে হবে। 

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি বলেন-৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো এদেশে। একটি অপশক্তি বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে মিলে দেশের গণতন্ত্রকে ব্যাহত করার জন্য ৭ জানুয়ারির সাংবিধানিক নির্বাচনকে বাঞ্চাল করার ষড়যন্ত্র করেছিল। এই নির্বাচন বাঞ্চাল হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যাহত হতো, অগণতান্ত্রিক অপশক্তির উত্থান ঘটতো; বাংলাদেশের আজকের শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতো। পৃথিবীর অনেক দেশে নারী-শিশুসহ কোন নিরাপত্তা সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। যখন যে দেশে গণতন্ত্র থাকে না, শান্তি থাকে না, শৃঙ্খলা থাকে না তখন সে দেশে, সে সমাজে মানুষের ওপর জুলুম নেমে আসে। সেই ধরণের পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে ব্যাহত করার একটি অপচেষ্টা ছিল। তিনি আরও বলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে নির্বাচন বাঞ্চাল করার অপচেষ্টাকে রুখে দিয়েছে। যারা গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিরোধী শক্তি তাদেরকে রুখে দিতে হবে। দরিদ্র রোজাদারদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য তিনি যুবলীগকে ধন্যবাদ জানান।

আরও বক্তব্য রাখেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, এ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল এমপি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। 

কেআই//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি