ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাবা লোকনাথ মানে অপার রহস্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৬, ৪ জুন ২০২০

লোকনাথ বাবা। তার জীবন নিয়ে অনেকের মনে অনেক রকমের বিশ্বাস। নির্দিষ্ট কোনও জীবন কাহিনি না থাকায়, তাঁর জন্মস্থান নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস, ১৬০ বছর জীবিত ছিলেন তিনি। 

এবার দেখে নেয়া যাক কী কী বিশ্বাস রয়েছে ভারতের এই আধ্যাত্মিক পুরুষকে নিয়ে।

লোকনাথ ব্রহ্মচারী আবার লোকনাথ বাবা নামেও পরিচিত। বাবা লোকনাথ শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন জন্মাষ্টমীতে ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দের ৩১ আগস্ট (১৮ ভাদ্র, ১১৩৭ বঙ্গাব্দ) কলকাতা থেকে কিছু দূরে ২৪ পরগণার চৌরাশি চাকলা গ্রামে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রামনারায়ণ ঘোষাল এবং মাতা কমলাদেবী।

বাবা লোকনাথের জন্মস্থান নিয়ে শিষ্যদের ভিতরে বিতর্ক আছে। নিত্যগোপাল সাহা এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ও রায় অনুযায়ী তাঁর জন্মস্থান কচুয়া বলে চিহ্নিত হয়। যদিও অনেকেই মনে করেন, তাঁর জন্মস্থান বর্তমান উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার চাকলা। যা চাকলাধাম নামে লোকনাথ ভক্তদের কাছে পরিচিত।

বাবা লোকনাথের দীক্ষাগুরু ছিলেন ভগবান গাঙ্গুলি। পুরো নাম ভগবানচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বেশ কয়েক বছর দেশে বাস করে লোকনাথ ও বেণীমাধব বন্দ্যোপাধ্যায় নামের দুই শিষ্যকে নিয়ে কালীঘাটে আসেন। তাঁদের নিয়ে বারাণসীতে যান। দেহত্যাগের আগে ত্রৈলিঙ্গস্বামীর হাতে ভার দিয়ে যান দুই শিষ্যের।

বছরের পর বছর নিয়মিত ভাবে গুরুর নির্দেশ মতো লোকনাথের যোগসাধনা চলতে থাকে হিমালয়ের বরফাকৃত নির্জন স্থানে। দীর্ঘ সাধনার পরে এক দিন লোকনাথ ব্রহ্মদর্শন করেন এবং সিদ্ধিলাভ করেন।

লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবা দেশভ্রমণে বার হয়ে, বিভিন্ন স্থান ঘুরে, পৌঁছে যান মুসলমানদের তীর্থস্থান মক্কা ও মদিনা দর্শনে। লোকনাথ পশ্চিম দিকে দিয়ে আফগানিস্তান, মক্কা, মদিনা ইত্যাদি স্থান অতিক্রম করে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূল পর্যন্ত ভ্রমণ করেন।

পারস্য, আরব, গ্রিস, তুরস্ক, ইতালি, ফ্রান্স, সুইৎজারল্যান্ডেও যান লোকনাথ বাবা। পরে সুমেরু ভ্রমণের উদ্দেশে রওনা দেন। হিমালয় শৃঙ্গের বাধা পেয়ে চীনে চলে যান।

চীনে সেই সময়ে তিন মাস বন্দি থাকতে হয় তাঁকে। মুক্তির পরে বাবা লোকনাথ অসামের বারদি গ্রামে বাস করতে থাকেন। সে সময় থেকেই ‘বারদির ব্রহ্মচারী’ হিসেবে লোকনাথ পরিচিতি পান।

বাবা লোকনাথের আধ্যাত্মিক শক্তি সম্বন্ধে অনেক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বলেন, তিনি জাতিস্মর ছিলেন। তিনি নিজের দেহ থেকে যেমন বার হতে পারতেন, তেমনই অন্যের মনের ভাবও অবলীলায় জানতে পারতেন। এ ছাড়াও, অন্যের রোগ নিজের দেহে এনে রোগীকে রোগমুক্ত করতে পারতেন।

বাংলা ১২৯৭ সালের ১৯ জ্যৈষ্ঠ (২ জুন, ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ) ১৬০ বছর বয়সে লোকনাথ ব্রহ্মচারী দেহত্যাগ করেন। এই দিনটি লোকনাথ ভক্তরা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন।

ভক্তরা অনেকে বাবা লোকনাথকে শিব লোকনাথ হিসেবেও ডাকেন ও পূজা করেন।

তিনি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী আশ্রমে শেষ জীবন কাটিয়েছেন এবং সেখানে দেহত্যাগ করেছিলেন। অর্জিত তপস্যা শক্তিবলে মানুষের হিত সাধন করতেন তিনি। তাঁকে স্বয়ং মহাদেবের অবতার বলে মনে করা হয়। নিউইয়র্কসহ পৃথিবীর নানা অঞ্চলে তাঁর অগণিত ভক্ত রয়েছে।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি