ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং এর জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১০, ৮ জানুয়ারি ২০২০

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রথিতযশা বিজ্ঞানী, যাঁকে আইনস্টাইনের পর সবচেয়ে প্রতিভাবান পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়, সেই স্টিফেন হকিং এর জন্মদিন আজ। ১৯৪২ সালের আজকের এই দিনে তিনি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন।

হকিংয়ের বাবা ড. ফ্র্যাঙ্ক হকিং ছিলেন জীববিজ্ঞানের গবেষক। আর মা ইসাবেল হকিং ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী।

বাবা চেয়েছিলেন ছেলে চিকিৎসক হোক। কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই হকিংয়ের আগ্রহ বিজ্ঞান পাঠে। যদিও গণিত নিয়ে পড়াশুনা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কলেজে গণিত পড়ানো হতো না বলে ভর্তি হয়ে যান পদার্থবিজ্ঞানে। পরে তাপ গতিবিদ্যা, আপেক্ষিকতা এবং কোয়ন্টাম বলবিদ্যায় তার আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় বেশি।

২১ বছর বয়সে ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে তিনি Amyotrophic Lateral Sclerosis নামক মোটর-নিউরন ব্যধিতে আক্রান্ত হন। ফলে তার পুরো দেহ ধীরে ধীরে প্যারালাইজড হয়ে যেতে শুরু করে। এরপর নিজের দেহের কোন অংশই নাড়াতে বা কথা বলতে পারেননি। একটি speech generating device এর মাধ্যমে হকিং অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতেন। ভয়াবহ অসুস্থতা সত্ত্বেও হকিং পদার্থবিজ্ঞান ও মহাবিশ্ব সংক্রান্ত দুর্দান্ত সব গবেষণা করে গেছেন।

তিনি একইসাথে বিজ্ঞানী, লেখক ও অধ্যাপক। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি ক্যাম্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের Centre for Theoretical Cosmology-র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ১৯৭৯-২০০৯ সাল পর্যন্ত লুকাসিয়ান অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি রয়াল সোসাইটি অব আর্টের অনারারি ফেলো, পন্টিফিসিয়াল একাডেমি অব সায়েন্সের আজীবন সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ এ ভূষিত হন। হকিং এর মূল পরিচয় তাঁর ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইটি দিয়ে, যেখানে তিনি মহাবিশ্বের উৎপত্তি নিয়ে নিজের থিওরি খুব সহজ ভাষায় সাধারণ মানুষের জন্য তুলে ধরেন। আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে বইটি টানা ২৩৭ সপ্তাহ ধরে সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের তালিকায় শীর্ষে ছিল। তাঁর অন্য বৈজ্ঞানিক কাজের মাঝে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রোজার পেনরোজের সাথে সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত gravitational singularity theorems।

১৯৬৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি জেন হকিং-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। জেন পিএইচডি করার সময় তাদের ১৯৬৭ সালে তাদের প্রথম সন্তান রবার্ট জন্মগ্রহণ করেন। এর পর ১৯৭০ সালে তাদের দ্বিতীয় সন্তান লুসি ও ১৯৭৯ সালের এপ্রিল মাসে তাদের তৃতীয় সন্তান টিমোথি জন্মগ্রণ করেন। ত্রিশ বছর একসাথে সংসার করার পর ১৯৯৫ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। জেনের সাথে বিচ্ছেদের পর ১৯৯৫ সালে ইস্টিফেন তার নার্স এলেন মেসনকে বিয়ে করেন। ২০০৬ সালে মেসনের সাথেও তার বিচ্ছেদ ঘটে।

২০১৮ সালের ১৪ মার্চ ৭৬ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং।
 
 এক নজরে স্টিফেন হকিং-কে নিয়ে কিছু তথ্য :
- ১৯৪২ সালের অক্সফোর্ডে জন্ম।
- ক্যামব্রিজে পিএইচডি করার পূর্বে ১৯৫৯ সালে অক্সফোর্ডে ১৯৫৯ সালে প্রকৃতি বিজ্ঞানে অধ্যায়ন করেন।
- ১৯৬৩ সালে তিনি মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হন। ডাক্তার তাকে ২ বছর সময় দেন।
- ১৯৭৪ সালে তিনি ব্ল্যাক হোল থেকে ‘হকিং রেডিয়েশন’ নির্গত তত্ব ব্যাখ্যা করেন।
- ১৯৮৮ সালে ‘এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ টাইম’ প্রাকশ পায় যা বিশ্বে দশ মিলিয়নেরও বেশি অনুলিপি বিক্রি হয়।
- তার জীবনী নিয়ে ২০১৪ সালে হলিউডে ‘থিউরি অফ এভরিথিং’ নামক চলচিত্র নির্মিত হয়। যেখানে তার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন এডি রেডমেইন।

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি