ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

ভাইরাস জ্বর থেকে বাঁচার উপায়...

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৯, ১৭ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১২:৫২, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

শীতের আবেশ শুরু হয়েছে। তবুও গরম রয়ে গেছে।গরম আর শীতের মিশেলে সর্দি-কাশি, জ্বরের সঙ্গে গলা ব্যথা কাউকেই যেন ছাড় দিচ্ছে না।কিন্তু কিভাবে বাঁচা যায় এ ধরনের জ্বর থেকে।বিশিষ্ট জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মিত্র তার উপায় বাতলে দিলেন।

কেন এই হঠাৎ জ্বর: মূল কারণ আবহাওয়ার পরিবর্তন। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে রাতে ঠান্ডা ও সকালে গরম। এই সময় যে কোনও সংক্রমক রোগ, যেমন ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়াঘটিত রোগ খুব বৃদ্ধি পায়। এই আবহাওয়ায় জীবাণুর প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তাই মশা, মাছিবাহিত রোগের প্রকোপ থেকেও সাবধান।

জ্বরের ধরন: ভাইরাস ঘটিত জ্বর ৩ থেকে ৫ দিনের বেশি থাকে না। এই জ্বর মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর। জ্বর তীব্র হতে পারে। অর্থাৎ ১০২-১০৩ পর্যন্ত জ্বর থাকতে পারে। সঙ্গে খুব গলা ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে আবার খুব গলা ব্যথা ও গায়ে র‌্যাশ বাড়তে পারে। হাড়ের গিটে গিটে ব্যথা হয়। জ্বরের সঙ্গে নাক দিয়ে পানি পড়ে ও অল্প খুশখুশে খাশি থাকে। তবে খুব বেশি কফ হয় না ভাইরাল ফিভারের ক্ষেত্রে।

জ্বর যদি ক্রমশই বাড়তে থাকে এবং জ্বর অনেক দিন ধরে থাকে সেক্ষেত্রে এই লক্ষণ ডেঙ্গুরও হতে পারে। এমন জ্বরের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে ডায়ারিয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কাদের হচ্ছে: মূলত যাদের অন্যান্য কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাদের এই ভাইরাল ফিভারে আক্রান্তের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশেষ করে অ্যাজমা, ক্রনিক ব্রংকাইটিস, হার্টের অসুখ বা হার্ট ফেলিওরের সমস্যা ও ডায়াবেটিস থাকলে এই ভাইরাস খুব সহজে আক্রমণ করে।শারীরিক অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ওষুধ খেলে তাদের এই জ্বরে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ এক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। এই জ্বর শরীরকে খুব দুর্বল করে দেয়। যা থেকে জ্বরের পাশাপশি সংক্রমণের সম্ভাবনাও দ্বিগুণ বেড়ে য়ায়। বিশেষ করে চেস্ট ইনফেকশন এক্ষেত্রে বেশি হয়। এই জ্বর থেকে নিউমোনিয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

জ্বর ছেড়ে গেলেও যদি কারও দীর্ঘদিন সর্দি-কাশি, দুর্বলতা বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে তার অন্য কোনও অসুখ শরীরে লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

মেনে চলুন: আশপাশের কারও জ্বর হলে তার কাছাকাছি কম যাওয়াই ভাল। এখন এসিতে না থাকাই ভাল। উষ্ণ জলে স্নান করুন। শিশুদের একেবারেই ঠান্ডা জলে স্নান করান চলবে না। বৃষ্টির জল গায়ে লাগানো যাবে না। কোনওভাবে ভিজে গেলে বাড়ি ফিরে স্নান করে নিন। ভিজে জামাকাপড়ে থাকলে জ্বর হতে বাধ্য।

কেয়ার অফ জ্বর: এই জ্বর খুব ছোঁয়াচে। তাই বিশেষ সাবধানতা জরুরি। জ্বর যে ক’দিন থাকবে সেই কদিন বাড়িতে থেকে বিশ্রাম নেওয়াই সবচেয়ে ভাল। কারণ বেশি এদিক-ওদিক করলে তা যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনই তা একজনের থেকে অন্যের শরীরেও ছড়ায় সহজে।

পাশাপাশি এই জ্বর গায়ে থাকা অবস্থায় বেশি হাঁটাচলা করলে হঠাৎ রক্তচাপ কমে যেতে পারে, মাথা ঘুরতে পারে। তাই সাবধান।
যারা প্রেসারের ওষুধ খান, তাদের এই জ্বর হলে সেক্ষেত্রে প্রেসারের ওষুধ বন্ধ করে রাখা বা ডোজ কমানোর প্রয়োজন পড়ে। কারণ এই জ্বরের প্রভাবে রক্তচাপের হেরফের হয়। তাই চিকিৎসককে অবশ্যই প্রেসারের ওষুধ খান তা জানান।
প্রচুর পানি খেতে হবে। কারণ এই জ্বর হলে শরীরে ঘাম হয় খুব বেশি, ফলে পানির মাত্রা কমে। তাই জল বা ওআরএস মেশানো পানি খেলে খুব উপকার। ডাবের জলও এই দুর্বলতা কাটাতে খুবই উপকারী।

প্রচুর ফল, বিশেষ করে লেবু খেলে ভাল। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি ঠিক থাকে। এই জ্বরের চিকিৎসা খুব লক্ষণভিত্তিক। অর্থাৎ জ্বরের সঙ্গে আনুষাঙ্গিক যা যা সমস্যা থাকবে সেই অনুযায়ী ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
হাঁচি, কাশির সময় মুখে হাত দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আরও ভাল যদি মাস্ক ব্যবহার করা যায়। এতে জ্বরের ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও রোধ হয়।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি