ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

শিশুর প্রথম পাঠ হোক শুদ্ধাচার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪২, ১ মার্চ ২০২১ | আপডেট: ১২:৪৮, ১ মার্চ ২০২১

পরিবার-পরিজনবেষ্টিত আনন্দোচ্ছল জীবন আর মানুষে মানুষে বাস্তব সামাজিক যোগাযোগ—এই ছিল আমাদের চিরায়ত সংস্কৃতি। যৌথ পরিবারে শিশুরা শিষ্টাচারের পাঠ নিত দাদা-দাদি, নানা-নানি, মা-বাবা ও গুরুজনদের কাছ থেকে।

অন্যদিকে আধুনিক সাজানো-গোছানো জীবনে বিচ্ছিন্ন একক পরিবারগুলোতে শিশুরা বেড়ে উঠছে একাকী। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের স্নেহের পরশ ও সান্নিধ্যের পরিবর্তে তারা হাঁসফাঁস করছে ইন্টারনেট- ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের ফাঁদে বন্দি এক জীবনে। শৈশব অদৃশ্য হয়ে পড়েছে তথাকথিত আধুনিকতার চোরাবালিতে। অথচ শেখার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো শৈশব। বলা হয়ে থাকে, 'Children are big learners'.

নবীজী (স) বলেছেন, শুদ্ধাচার শিক্ষাদান সন্তানের জন্যে পিতার শ্রেষ্ঠ উপহার। (তিরমিজী) সন্তানকে আদব শিক্ষা দেয়া ভিক্ষুককে অনেক ভিক্ষা দেয়ার চেয়ে উত্তম। (মেশকাত)

তাই পরিবারে শুদ্ধাচার চর্চার কোনো বিকল্প নেই। এ চর্চাই নীরবে-নিঃশব্দে ক্রমশ নির্মাণ করবে একটি মহান জাতি। সে কাজটিকে সহজ ও সার্বজনীন করে তুলতেই প্রকাশনা ‘শুদ্ধাচার’। প্রতিটি পরিবারে এ বইটি নিয়মিত পাঠ ও চর্চার মধ্য দিয়ে দেশের প্রতিটি শিশু হয়ে উঠুক শুদ্ধাচারী ভালো মানুষ। নৈতিকতার শিক্ষায় একেকটি প্রজন্ম গড়ে উঠুক দেশপ্রেমিক হয়ে, দেশের সম্পদ হয়ে।

এই মাসে ‘শুদ্ধাচার’ বই থেকে তুলে ধরা হলো ‘দেশপ্রেমিক হিসেবে’ অনুচ্ছেদটি :
যখনই এবং যেখানেই জাতীয় সংগীত বাজবে, উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান এবং পুরো সময় দাঁড়িয়ে থাকুন। একসাথে গাইতে থাকুুন বা মৌন থাকুন। জাতীয় সংগীত চলাকালে গল্প করবেন না, রসিকতা ও হাসাহাসি করবেন না। অন্য দেশের জাতীয় সংগীতকেও একইভাবে সম্মান করুন। ব্যঙ্গ করবেন না, মন্তব্য করবেন না।

বাঙালির চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিজের মধ্যে লালন করুন। ধর্ম-বর্ণ-অঞ্চল নির্বিশেষে সব মানুষকে সমমর্যাদা প্রদান করুন।

দেশপ্রেম হোক আপনার প্রতিটি কাজের প্রধান মানদন্ড। কাজ করার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, কাজটি দেশ ও দেশের মানুষের জন্যে কল্যাণকর, না ক্ষতিকর? কল্যাণকর হলে কাজটি করুন। আর অকল্যাণকর হলে সে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।

জাতীয় স্থাপনাসমূহের চত্বরে কোনো ময়লা ফেলবেন না। স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনারসহ সকল স্থাপনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সহযোগিতা করুন। হই-হুল্লোড়, উচ্চস্বরে গান বাজানো, আড্ডা দেয়াসহ যে-কোনো ধরনের অমার্জিত-অশ্লীল কাজ ও আচরণ থেকে জাতীয় স্থাপনাসমূহকে মুক্ত রাখুুন।

অন্য দেশে ভ্রমণের সময় দৃষ্টিনন্দন বা ভালো কিছু দেখে প্রতিনিয়ত নিজের দেশের কোনোকিছুর সাথে নেতিবাচক তুলনা করবেন না। অন্যত্র ভালো যা-কিছু দেখলেন ও শিখলেন, তা কাজে লাগিয়ে নিজের দেশ গড়ায় মনোনিবেশ করুন।

সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই প্রমিত বাংলায় কথা বলা ও লেখা শেখাতে সচেষ্ট হোন। মাম্মি, ড্যাডি, আন্টি, আংকেল নয়; মা-বাবা, চাচা-মামা-খালু- ফুপা, চাচী-খালা-ফুপু-মামী ডাকতে উদ্বুদ্ধ করুন।

শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলুন। অন্য ভাষার সাথে মিলিয়ে ভাষার জগাখিচুড়ি বানানো মাতৃভাষার জন্যে অসম্মানজনক। দেশকে ভালবাসুন। সবসময় মনে রাখুন, নিজের কাজ সবচেয়ে ভালোভাবে করাই প্রকৃত দেশপ্রেম।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি