সিনেমা দেখলে চোখে জল! জেনে নিন আপনি কেমন মানুষ
প্রকাশিত : ১৫:০৮, ২৯ মে ২০১৭ | আপডেট: ১৭:০৬, ৩ জুন ২০১৭

সিনেমা দেখতে গিয়ে অনেকেই সাসপেন্স দেখে আবেগে কেঁদে ফেলেন। কিংবা অনেকে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আবার অনেকে একেবারে মুষঢ়ে পড়েন। তীব্র আবেগের মুহূর্তে নিজেকে সামলাতে না পেরে বাঁধ ভেঙে নেমে আসে চোখের জল? পাশে কে আছে সেটা ভাবার সময়ও থাকে না সে সময়।
শুধু সিনেমাই নয়, বই পড়তে পড়তে, গান শুনতে শুনতে, এমনকি কোনো পেইন্টিং দেখলেও যাদের অশ্রুপাত ঘটে, তারা বিরল সৌভাগ্যবান। মনোবিদদের মতে, যারা এই ‘সমস্যা’-য় ভোগেন, তাঁরা বিপুল নিঃস্বার্থপরতা থেকে এটা করে ফেলেন। তারা অন্যের আবেগ বা অনুভূতিকে যতটা দ্রুত নিজের ভিতরে নিতে পারেন, ততটা অন্যরা পারেন না। এটাও ঠিক, যারা এই অশ্রুপাত-সমস্যায় ভোগেন, তারা আবার দ্রুত নিজস্ব জীবনছন্দে ফিরেও আসতে পারেন।
তবে ব্যাপারটা ততটা হালকা নয়। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, কোনো সিনেমা দেখতে গিয়ে অথবা বই পড়তে পড়তে আপনি তখনই চোখের জল ফেলবেন, যখন আপনি সেই সিনেমা বা বইয়ের ভিতরে নিজেকে খুঁজে পাবেন। অর্থাৎ, আপনার কোনো স্মৃতি সেই সিনেমা বা বইটি জাগিয়ে তুললেই আপনি তার সঙ্গে একাত্ম বোধ করতে পারেন। অবচেতনে সেই ছবি বা গ্রন্থের কোনো বিশেষ সিকোয়েন্সকে খুজে নেয় আপনার স্মৃতি। তার পরে তাকে নিজের মতো করে গুছিয়ে নেয় সংলাপের জন্য। সেই সংলাপই আপনাকে আবেগস্পৃষ্ট করে।
এমন ক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে, আপনি এক বিরল গুণের অধিকারী। আপনার ভিতরে রয়েছে গভীর শিল্পবোধ। চোখের জল এখানে আপনার দুর্বলতার পরিচায়ক নয়। বরং তা আপনার অন্তর্নিহিত শক্তিকেই ব্যক্ত করে। আর শিল্পের প্রতি আপনার প্রীতি সত্যিই আসল, তার প্রমাণ ওই চোখের জলই। মনোবিদরা এই বিষয়টিকে ‘স্তাঁধাল সিনড্রোম’ বলে চিহ্নিত করেছেন।
১৯শতকের ফরাসি সাহিত্যিক স্তাঁধালের নামানুসারে এই ‘অসুখ’-এর নাম রাখা হয়। ১৮১৭ সালে স্তাঁধাল তাঁর ‘ফ্লোরেন্স: আ জার্নি ফ্রম মিলান টু রেজ্জিও’ গ্রন্থে তিনি এই সমস্যার কথা লিখেছিলেন। ১৯৭৯ সালে ইতালির মনোবিজ্ঞানী গ্রাজিয়েলা মাঘেরিনি প্রায় ১০০ জন মানুষকে সমীক্ষা করে এই সমস্যাকে চিহ্নিত করেন এবং তার নামকরণও করেন। তবে এটা কোনও ‘অসুখ’, নাকি এটা এক অতি উচ্চ পর্যায়ের সুখেরই নামান্তর, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে মনোবিদদের মধ্যে। তবে এটা যে একটা বিরল গুণ, তা স্বীকার করেন সকলেই।