ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫

‘আজরাইল দেইখ্যা ফালাইছি’

প্রকাশিত : ১১:১৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১২:৪০, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

‘আজরাইল দেইখ্যা ফালাইছি, মৃত্যুর মুখ থাইক্যা অল্পের লাইগা প্রাণে বাইচ্যা গেছি,’- পুরান ঢাকার চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত সড়কের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা থেকে বেঁচে আসা রিকশাচালক নূর আলম এভাবেই বলছিলেন রক্ষা পাওয়ার কথা। 

বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দ কুমার দত্ত সড়কের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুনের ভয়াবহতা বর্ণনা করে আহত রিকশাচালক নূর আলম জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে নন্দকুমার দত্ত রোড দিয়ে রিকশায় যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই ঘটে বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। সে সময় তার রিকশার ওপর ভেঙে পড়ে ভবনের দেয়ালের অংশ।

বছর ত্রিশেকের নূর আলম বলেন, ‘আমার উপরে পড়ার সাথে সাথেই রিকশা থেকে পইড়া যাই। আর যাত্রীরা গিয়া পড়ে রাস্তার লগের ড্রেইনে।’

তিনি জানান, দেয়ালের অংশ পড়ে মাথা ফেটে গেলেও তখন তার জ্ঞান ছিল। তিনি ফোনে বিষয়টি পাশেই এক আত্মীয়কে জানান। পরে ওই আত্মীয় ঘটনাস্থলে এসে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান।

রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও রোজগারের একমাত্র অবলম্বন রিকশা এখনও পাননি। তাই মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েই ভোর রাত সাড়ে চার দিকে হাসপাতাল থেকে ছুটে আসেন দুর্ঘটনাস্থলে। কারণ ওই সময় রিকশা ফেলেই প্রাণ বাঁচাতে যান হাসপাতালে। এ সময় তিনি বলেন, এমন দৃশ্য জীবনেও দেখি নাই। আজকে আমি আজরাইল দেইখ্যা ফালাইছি। অল্পের লাইগা প্রাণে বাইচ্যা গেছি।

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারি জনিয়েছেন, আগুনের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানান আইজিপি।

আইজিপি বলেন, ভবনটিতে রাসায়নিক গুদাম ছিল। এছাড়া নিচতলায় কয়েকটি গাড়ি ছিল, যেগুলো গ্যাসে চলে। এই আগুনের কারণে গাড়িগুলো বিস্ফোরিত হয়। আরেকটি গাড়ি ছিল, যার ভেতর ছিল অনেকগুলো সিলিন্ডার। ওই সিলিন্ডার হয়তো আশপাশের বাড়িতে ও হোটেলে গ্যাস সরবরাহের জন্য ছিল। ওই গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এ কারণে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেড়ে যায়।

অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের লাশ উদ্ধার হলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতেই একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিথর ঝলসানো দেহ। অর্ধশতাধিক ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে ভর্তি।

একে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি