ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫

কমলাপুরে মানুষের স্রোত    

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৫, ২০ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১২:২৬, ২০ আগস্ট ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মানুষ ছুটছে নাড়ির টানে। শহর ছেড়ে গ্রামের কোলাহলমুক্ত নিরিবিলি পরিবেশে কয়েকটা দিন কাটানোর জন্য ভিড় করছে স্টেশনগুলোতে। পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বা প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে সকলেই ব্যস্ত ছুটে চলাতে। ইট-পাথরের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী। আর সেই ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে কমলাপুরে সৃষ্টি হয়েছে জনস্রোত। ট্রেনের বিলম্বের ভোগান্তিকে সঙ্গী করেই ঘরে ফিরছেন তারা। শিডিউল বিপর্যয়, যাত্রীর অতিরিক্ত চাপ, ভোগান্তি মেনে নিয়েই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শেকড়ের টানে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।  

অগ্রিম টিকিট যখন ছাড়া হচ্ছিল তখন ১১ আগস্টের সেদিনের অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল আজকের দিনে সর্বোচ্চ ভিড় হবে কমলাপুরে।

নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে সোমবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল কমলাপুর স্টেশনে। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ট্রেনগুলো কানায় কানায় পূর্ণ, ফাঁকা নেই ট্রেনের ছাদেও। কাঙ্খিত ট্রেনের অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে বসে আছেন অসংখ্য যাত্রী। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোতে দেখা গেছে। এদিকে সকাল থেকেই প্রায় ট্রেনগুলো বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে।

সকাল ৬টায় রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ৮টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছেছে। পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিলম্ব করে ৯টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এছাড়া চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টায়ও এসে পৌঁছায়নি। ট্রেনটির সম্ভাব্য ছেড়ে যাওয়ার সময় স্ক্রিনে দেয়া হয়েছে ১০টা ৪০ মিনিট। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল নয়টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেই ট্রেন তখনও এসে পৌঁছায়নি। স্টেশনে বড় স্ক্রিনে ট্রেনটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া আছে ১১টা ৪৫ মিনিট। অন্যদিকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ৯টা ১০ মিনিটেও ছেড়ে যায়নি। ঈদ স্পেশাল লালমনি এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি তখনও কমলাপুরে এসে পৌঁছাতে পারেনি। স্টেশন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকেই প্রায় ট্রেনই বিলম্বে ছেড়ে গেছে।

রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নয়ন আহমেদ বলেন, ‘সকাল ৬টায় যে ট্রেন আসার কথা সে ট্রেন আসলো ৯টায়। ঈদযাত্রা এমনিতেই ভোগান্তির, সেইসঙ্গে যদি একটি ট্রেন ৩ ঘণ্টা লেট হয় তাহলে এটা কীভাবে মেনে নেয়া যায়? ট্রেনের ভেতরে-ছাদে কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই। ১৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আজকের টিকিট সংগ্রহের পরও অনেকে নিজের আসন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছেন না। মানুষ ট্রেনের জানালা দিয়েও ভেতরে ঢুকছে। সব মিলিয়ে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।‘

নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী হায়দার হোসেন বলেন, ‘আমরা সকাল ৮টার ট্রেনের টিকিট নিই। কিন্তু এখনো সে ট্রেন আসেনি। সম্ভাব্য সময় দেয়া হয়েছে ১০টা ৪০ মিনিট কিন্তু সেই সময়ও ট্রেনটি এসে পৌছাতে পারবে না বলে মনে হয়। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের ট্রেনযাত্রায় এসে যদি ট্রেন ৩ ঘণ্টা বিলম্ব হয়, তাহলে এটা কীভাবে মেনে নেয়া যায়। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবেই যাত্রীদের এমন ভোগান্তি পোহাতে হয় প্রতিবারই।

ট্রেনের এমন বিলম্ব বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘ট্রেনগুলো দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে আসার কারণে ছেড়ে যেতে কিছুটা কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আজ সকাল থেকেই যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় স্টেশনে। যাত্রী চাপের কথা মাথায় রেখে প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঈদের সময় যাত্রীর চাপ থাকায় ট্রেনে ধীরগতি থাকে, আবার সব স্টেশনেই কিছু সময় দাঁড়াতে হয় যাত্রী উঠানো-নামানোর জন্য। সে কারণেও বিলম্ব হয়।’   

এসি

  


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি