ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫

পানির উচ্চতা এক মিটার বাড়লে দেশের ১৬ শতাংশ স্থান প্লাবিত হবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৩, ১৬ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৩৬, ১৬ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

বঙ্গোপসাগরে দিনকে দিন পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। সমুদ্রের পানি আর ১ মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী ১৬ শতাংশ স্থান প্লাবিত হবে। যার ফলে প্রায় ৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত হবে। জীব বৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। এতো বিশাল জনগোষ্টিকে কোথাও সরিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। তাই বিশ্ব জলবায়ু মোকাবেলা এখনি করতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন প্রকৌশলী ড. এস. আই. খান।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)র ঢাকা কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ভালনারেবিলিটিজ এন্ড রেসপন্সেস এট ম্যাক্রো অ্যান্ড মাইক্রো লেবেল’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। আইইবি’র ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে (১৫ মে) মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় আইইবি কাউন্সিল কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ ওয়ালিউল্লাহ সিকদাদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, ভাইস-প্রেসিডেন্ট (প্রশাসন ও অর্থ) প্রকৌশলী মোঃ নূরুজ্জামান এবংসাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, জাতিসংঘের জলবায়ু ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক প্রকৌশলী ড. এস. আই. খান। অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এস. আই. খান বলেন, ‘চীন,যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইউরোপের কয়েকটি দেশ ৮০ শতাংশ গ্রীন হাউজ গ্যাস তৈরী করে থাকে। এর জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে হিমায়িত বরফ গলে যাচ্ছে। যা আমাদের দেশে চলে আসছে। বঙ্গোপসাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে লক্ষ করছি। আমরা ধারণা করছি সমুদ্রের পানি ১ মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী ১৬ শতাংশ স্থান প্লাবিত হবে। যার ফলে প্রায় ৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত হবে। আমাদের জীব বৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। এতো বিশাল জনগোষ্টিকে কোথাও সড়িয়ে নেয়া সম্বব নয়। তাই বিশ্ব জলবায়ু মোকাবেলা এখনি করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্য বইতে বিষয়টি যুক্ত করতে পারি। ২০১৬ সাল থেকে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ হিসেবে ধরে নিয়েছি। বজ্রপাতের ফলে শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। বজ্রপাত মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশ সরকার নানান পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে লাখ লাখ তাল গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। নদীবন্দর গুলো আছে সেগুলোতে ‘লাইট নিং ডিটেক্টিভ সেনসর’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই সেনসর গুলো বসানোর ফলে ১০ থেকে ৬০ মিনিট আগে বজ্রপাতের সংকেত পাওয়া যাবে। যার ফলে মানুষ সাবধান হতে পারবে। বাংলাদেশে যে হাউর অঞ্চলগুলো আছে সে হাউরে লোকজন কাজ করে থাকে। কিন্তু বজ্রপাতের জন্য কোন আশ্রয় স্থল নাই। সেই জন্য বর্তমান সরকার কিছু কিছু বজ্রপাত আশ্রয় কেন্দ্র তৈরী করার পরিকল্পনা করছে। যার ফলে অল্প সময়ের নোটিশে তারা আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিতে পারবে।’

ড. এস আই খান আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলইট-১ পুরোপরি ভাবে চালু হলে আগামী ছয় মাস পর থেকে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগের আগাম আভাস পাবে। পটুয়াখালি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ষার পানি আটকাতে ৬০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৩০ বছর সময়ের মধ্যে জাতিসংঘ এবং বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে জাপানি প্রযুক্তি দ্বারা ‘বে ক্রস ড্যাম’ নির্মান করা হবে। বাংলাদেশ সরকার এই বিষয় গুলো পর্যালোচনা করে দেখবে। এসময় ড. এস. আই. খান গঙ্গা চুক্তির পাশাপাশি তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারত সরকারের আসু সহযোগিতা কামনা করেন। পরে তিনি উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন।

এমজে/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি