ঢাকা, রবিবার   ০২ জুন ২০২৪

আলোক হেলথ কেয়ারে ১০ টাকায় চিকিৎসা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৭, ১৭ মে ২০২৪

সবার জন্য মাত্র ১০ টাকায় চিকিৎসা। দুস্থ ও অসহায় হলে লাগে না কোনো টাকা। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ ও আশপাশের বাসিন্দাদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে ‘আলোক হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ফাউন্ডেশন হাসপাতাল’।

‘সেবা নিন, সুস্থ থাকুন; সুস্থ জীবন, সুন্দর পৃথিবী’– স্লোগানে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে আলোক হেলথ কেয়ার। সংশ্লিষ্টরা জানান, আলোক হেলথ কেয়ারে মাত্র ১০ টাকার টিকিট কেটে এমবিবিএস চিকিৎসককে দেখাতে পারেন। বিশ্বমানের প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে মানসম্পন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কারণে নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে।

আলোক হেলথ কেয়ার হাসপাতালে কথা হয় চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা লিমা আক্তারের সঙ্গে। অন্যান্য রোগীর মতো টিকিট কেটে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।

লিমা আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, প্রচণ্ড পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন তিনি। ১০ টাকার টিকিট কেটে ডাক্তারের রুমে গেলে ওজন, শরীরের তাপমাত্রা, ব্লাড সুগার ও অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করেন এবং কিছু টেস্ট দেন। নমুনা দিয়ে এসেছেন, রিপোর্ট নিয়ে আবারও ডাক্তার দেখাবেন। ডাক্তার-নার্সদের আন্তরিকতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। ৭১ বছর বয়সী খুরশীদ আলমও ১০ টাকার টিকিটে এমবিবিএস চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন। কিছু টেস্ট করিয়েছেন, যেগুলোর মূল্য সরকারি হাসপাতালের মতো কম বলে জানালেন।

সপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ছাড়া প্রতি দিন এ হাসপাতালে স্বল্পমূল্যের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০ টাকার সেবা মেলে। এরপর বিকেল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত একই সেবা নিতে লাগে ৩০ টাকা।

হাসপাতালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও অসংক্রামক রোগ, প্রসব-পূর্ব এবং প্রসব-পরবর্তী পরিচর্যাও রোগীরা একই সেবামূল্যে পেয়ে থাকেন। সরকারি মূল্যে সিবিসি, ক্রিয়েটিনিন, ইসিসি, ডেঙ্গু, ডায়াবেটিসসহ ১৭টি পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে।

একবার কোনো রোগী নিবন্ধন করলে চিকিৎসকরা ফলোআপ করেন এবং পরে দেখাতে এসে আগের চিকিৎসা-সংক্রান্ত সব তথ্য দেখতে পারেন অনায়াসে। চিকিৎসকরা রোগ অনুযায়ী পর্যাপ্ত সময় নিয়ে দেখে থাকেন। হাসপাতালে দু’জন করে নারী-পুরুষ এমবিবিএস চিকিৎসক রয়েছেন। প্রতি শিফটে এক নারী ও এক পুরুষ চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা দেন।

হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. সাইখুল আরাফাত বলেন, ঘাটাইলে আলোক হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ফাউন্ডেশন হাসপাতাল চালু হয় ২০২১ সালের আগস্টে। শুরুতে রোগী কম থাকলেও এখন গড়ে দিনে ১৫ রোগী স্বল্পমূল্যে সেবা নিতে আসছেন। প্রতিষ্ঠানটি আশপাশের এলাকার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার নির্ভরযোগ্য উৎস হয়ে উঠেছে। এখানে দুস্থ ও অসহায় রোগীদের জন্য দুটি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। তারা বিনামূল্যে সেবা পান।

আলোক হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল মানেই গলাকাটা মূল্যের চিকিৎসা– এ প্রথা আমরা ভেঙে দিয়েছি। আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিশ্বমানের। ঘাটাইলে ৫০টির বেশি হাসপাতাল-ক্লিনিক থাকলেও আলোকের মতো আধুনিক ও উন্নতমানের চিকিৎসা যন্ত্র কারও নেই। এমনকি তাদের বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই। এ কারণে ঘাটাইলের রোগীরা রাজধানীতে না গিয়ে, একই মানের চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। তা ছাড়া আলোক শুধু ঘাটাইলবাসীর জন্য ঢাকার চেয়ে ৪০ শতাংশ কম মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ দিচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুস্থ ও অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে আলোক হেলথ কেয়ার ২৫১টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করেছে, যেখানে ১ লাখের বেশি মানুষ বিনামূল্যে সেবা পেয়েছেন। ১০ হাজার মানুষের কিডনি পরীক্ষা করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ৫০ হাজার মানুষের ডায়াবেটিস ও ১৮ হাজার শিশুর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছে বিনামূল্যে। ক্যাম্পের সময় হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এমনকি অস্ত্রোপচারও করা হয় বিনামূল্যে। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ১২ হাজার কৃষককে জৈব সার ও বীজ দিয়েছে আলোক হেলথ কেয়ার।

এমএম//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি